নিয়মভঙ্গের অভিযোগে জেট এয়ারওয়েজ-এর ১৪০ জন বিমানচালকের লাইসেন্স সাসপেন্ড করার হুমকি দিল ডিরেক্টোরেট জেনারেল অব সিভিল অ্যাভিয়েশন (ডিজিসিএ)। সংস্থার দাবি, ছ’মাস অন্তর দক্ষতা যাচাইয়ের যে পরীক্ষা হয় তাতে উত্তীর্ণ না হয়েই বিমান চালিয়ে যাচ্ছেন ওই চালকেরা। অভিযুক্তদের মধ্যে ওই বিমান সংস্থার চিফ অপারেটিং অফিসার এবং প্রশিক্ষণ প্রধান-সহ ১৩১ জনকে শো কজ নোটিস পাঠানো হয়েছে। বিমানকর্মীদের উপর নজরদারির ক্ষেত্রে গাফিলতির অভিযোগে প্রশিক্ষণ প্রধানকে সংস্থা থেকে সরানোর আর্জিও জানিয়েছেন কর্তৃপক্ষ। দু’সপ্তাহের মধ্যে নোটিসের জবাব দিতে বলা হয়েছে জেট এয়ারওয়েজ-কে।
ঘটনার সূত্রপাত ৮ অগস্ট। ২৮০ জন যাত্রী নিয়ে মুম্বই থেকে ব্রাসেলসগামী জেট এয়ারওয়েজ-এর বোয়িং ৭৭৭-৩০০ তখন মাঝ আকাশে। তুরস্কের কাছে আচমকাই ৫০০০ ফুটে সটান নেমে আসে সেটি। অল্পের জন্য বড়সড় দুর্ঘটনার হাত থেকে রক্ষা পান যাত্রীরা। তদন্তে ধরা পড়ে, বিমান চালাতে চালাতে ঘুমিয়ে পড়েছিলেন চালক। আর সহ-চালকের চোখ ছিল আই-প্যাডের পর্দায়। যার জেরেই নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে নেমে আসে যাত্রিবাহী বিমানটি। ঘটনার পরেই ডিজিসিএ-র তরফে সাসপেন্ড করা হয় চালক এবং সহ-চালককে। কর্তৃপক্ষের নির্দেশে শুরু হয় তদন্ত। জেট এয়ারওয়েজ-এর উড়ান প্রশিক্ষণ কর্মসূচি এবং কেন্দ্রগুলি ফের খতিয়ে দেখার জন্য গড়ে তোলা হয় তিন সদস্যের এক কমিটি।
কমিটির রিপোর্টেই ধরা পড়ে জেট এয়ারওয়েজ-এ কর্মরত ৬০০ বিমানচালকের মধ্যে ১৪০ জনই দক্ষতা যাচাইয়ের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ নন। ছ’মাস অন্তর ওই পরীক্ষায় বসা প্রত্যেক বিমানচালকের জন্য বাধ্যতামূলক। আর সে কারণেই ওই ১৪০ জনের বিরুদ্ধে নিয়মভঙ্গের অভিযোগ এনেছে ডিজিসিএ। জেট এয়ারওয়েজ-এর মুখপাত্র অবশ্য জানিয়েছেন, ডিজিসিএ-র তরফে এ ধরনের কোনও নোটিসই পাননি তাঁরা। সাংবাদিকদের তিনি বলেছেন, “আমাদের প্রশিক্ষণ কর্মসূচির প্রত্যেকটি আন্তর্জাতিক মানের। আমরা আত্মবিশ্বাসী এ বিষয়ে অনিয়মের অভিযোগ উঠলে তা মিটিয়ে নিতে পারব।” সংস্থার মুখপাত্র এ-ও জানিয়েছেন, যাত্রী এবং বিমানকর্মীদের সুরক্ষাকেই অগ্রাধিকার দেন তাঁরা। গাফিলতির অভিযোগ যদি উঠে থাকে তাহলে সে বিষয়ে ডিজিসিএ-র সঙ্গে খুব শিগগিরই বৈঠকে বসবে জেট এয়ারওয়েজ।