জন্মদিনে কেক কাটছেন সেই দিদিমা। সোমবার। ফাইল চিত্র।
জনমত বলছে, এই মুহূর্তে দেশের সবচেয়ে বিবাহযোগ্য পাত্র তিনি। তাঁর সম্ভাব্য বান্ধবী নিয়ে জল্পনার অন্ত নেই। সদ্য যখন রাজনীতিতে এসেছেন, সেই ১৩ বছর আগে রায়বরেলীতে সাংবাদিকদের কৌতূহলের উত্তরে মা সনিয়া গাঁধী বলেছিলেন, ‘‘ওকেই জিজ্ঞাসা করুন না, কোনও বান্ধবী রয়েছে কি না। আমায় তো কিছু জানায়নি!’’ জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল। স্বভাবসিদ্ধ হাসিতে বারবার প্রসঙ্গ এড়িয়ে গিয়েছেন তিনি।
সেই তাঁর— রাহুল গাঁধীর ক্যারিশমায় মুগ্ধ প্রমীলাবাহিনীতে নাম লিখিয়েছেন ১০৭ বছরের বৃদ্ধাও! গত কাল টুইটারে যাঁকে জড়িয়ে ধরার কথা বলার পরে ফোনও করেছেন কংগ্রেস সভাপতি।
বড়দিনেই খবরটা ফাঁস করেছিলেন শতাব্দীপ্রাচীনার নাতনি— বেঙ্গালুরুর দীপালি শিখণ্ড। গত কাল ছিল তাঁর দিদিমার জন্মদিনও। দীপালি টুইটারে লেখেন, দিদিমা তাঁকে জানিয়েছেন রাহুলের সঙ্গে দেখা করার ইচ্ছের কথা। তিনি তখন জানতে চান, কেন। ফিসফিস জবাব বৃদ্ধার— ‘‘রাহুল খুব হ্যান্ডসাম!’’ টুইটার পোস্টে দিদিমার কেক কাটার একটি ছবিও দিয়েছিলেন দীপালি।
প্রশংসায় আপ্লুত রাহুল এই টুইটের জবাবে দীপালিকে লেখেন তাঁর হয়ে ‘সুন্দরী’ দিদিমাকে জড়িয়ে ধরে আদর করতে। জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানাতেও ভোলেননি। পরে নিজে ফোন করে কথাও বলেছেন প্রবীণার সঙ্গে।
রাজনৈতিক শিবির রসিকতা করে বলছে, দিদিমা তো বটেই। কিন্তু নাতনি দীপালির টুইট-ইতিহাসেও স্পষ্ট যে, ‘হ্যান্ডসাম’ রাহুলের প্রেমে তিনি নিজেও যথেষ্টই মজে। বিপজ্জনক ভাবে বাঁচতে ভালবাসেন, টুইটারে স্বঘোষণা নথ পরা এই যুবতীর। বড়দিনের ঠিক আগে, অর্থাৎ গত রবিবার দীপালি নিজের পোষা লোমশ সারমেয়টির ছবি দিয়েছিলেন টুইটারে। কুকুরের নাম ‘মিস্টিক’, মাথায় সান্তার টুপি। সেই ছবির ক্যাপশন ছিল— ‘মিস্টিক লাভস পিডি’! ঘটনা এটাই যে, রাহুলের কুকুরের নাম পিডি! সেই টুইটের অবশ্য কোনও জবাব দেননি রাহুল।
সরাসরি কিছু না বললেও বিজেপি-শিবির এই প্রেম-ভক্তির তত্ত্বকে কিছুটা বাঁকা চোখেই দেখছে। বলা হচ্ছে, কর্নাটক ভোটের আগে এটা নিছকই রাহুলের জনসংযোগের কৌশল। দীপালিকেও টুইটে আক্রমণ করেছেন অনেকে। জানতে চান— গত কালের পোস্টটা করার জন্য কত টাকা পেয়েছেন তিনি? সেই প্রশ্নের কড়া জবাব নিজের মতো করে দিয়েছেন দীপালি। তবে এটাও ঘটনা যে, টুইটারে কখনও সামগ্রিক ভাবে বিজেপিকে, কখনও বিজেপির কোনও নেতাকে ধারাবাহিক ভাবে আক্রমণ করেছেন দীপালি।
কংগ্রেস পাল্টা বলছে, গোটা দেশে রাহুলের ক্রমবর্ধমান জনপ্রিয়তারই এটি একটি খণ্ডচিত্র মাত্র। বিজেপি এক সাধারণ ভক্তের বন্দনার মধ্যেও যে ভূত দেখছে তার কারণ, তারা নিজেরা সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহার করে নরেন্দ্র মোদীকে ফুলিয়ে-ফাঁপিয়ে তুলেছে। আজ কংগ্রেস মুখপাত্র খুশবু বলেছেন, ‘‘দীপালি একজন সাধারণ নাগরিক। টুইটারে ওঁকে খুব কম লোকই ফলো করে। উনি যদি কংগ্রেসি নেতা বা কর্মী হতেন তা হলে টুইটারে ওঁকে ঘিরে অনেক বেশি ভিড় থাকত।’’