সৌরজগতের দ্বিতীয় অভ্যন্তরীণ গ্রহ শুক্র। সূর্যের ৪৮ ডিগ্রির মধ্যেই সারা বছর অবস্থান করে সে। ভোরে সূর্য ওঠার আগে পূর্ব আকাশে এবং সূর্য অস্তের পর পশ্চিম আকাশে উজ্জ্বলতার সঙ্গে অবস্থান করে।
পৌরাণিক কাহিনি অনুসারে অসুর গুরু শুক্রাচার্যের নাম ঊষাণা। ঋষি ঊষাণা স্তোত্র দ্বারা ভগবান শিবকে তুষ্ট করে ‘মৃতসঞ্জীবনী বিদ্যা’ বর পান (মৃতকে জীবিত করার বিদ্যা) এবং শুক্র গ্রহ হিসাবে শুভ গ্রহের স্থান পান।
জ্যোতিষ শাস্ত্রমতে শুক্র শুভ গ্রহ। রাশি চক্রের বৃষ এবং তুলা শুক্রের নিজক্ষেত্র। শুক্র সংস্কৃতিসম্পন্ন, সম্ভ্রান্ত, মহৎ, বিলাসবাহুলতা, প্রেম, শিল্পীসত্ত্বা, বুদ্ধিমান, জ্ঞানী, সাহিত্য রসিক, সঙ্গীতবোদ্ধা ইত্যাদি নির্দেশ করে।
জন্মছকে শুক্রের শুভ প্রভাবে পোশাক, প্রসাধন সামগ্রী, ইলেক্ট্রনিক্স, অভিনয়, চিত্র, ভাস্কর্য, সাহিত্যিক কবি, গানবাজনা, যন্ত্র সঙ্গীত শিল্পী, অধ্যাপনা, সূক্ষ্ম কারিগরি ইত্যাদি সংক্রান্ত কর্মের সঙ্গে যুক্ত থাকেন।
মানব শরীরে বায়ু এবং কফ প্রকৃতির উপর প্রভাব শুক্রের। সাধারণত যৌন বিষয়ের উপর এর প্রধান প্রভাব। অশুভ শুক্র যৌন বিকৃতি এবং ধ্বজভঙ্গ রোগের কারণ। এ ছাড়াও শুক্র মুখমণ্ডল, দৃষ্টি শক্তি, প্রজনন ক্ষমতা, মূত্রতন্ত্র, অশ্রু সংক্রান্ত গ্রন্থি ইত্যাদির উপর শুভ বা অশুভ প্রভাব ফেলে।
অন্ত্র, অগ্ন্যাশয়, এন্ডোক্রিন গ্রন্থি, জরায়ু, ইত্যাদির উপর শুভ বা অশুভ প্রভাব দান করে শুক্র। এ ছাড়াও গলা, কিডনি, থাইমাস গ্রন্থি, ডিম্বাশয়ের উপর রয়েছে শুক্রের প্রভাব।
শুক্রের অশুভ প্রভাবে মুখমণ্ডল, চোখ (সাধারণত রেটিনা), অজীর্ণ রোগ, ডায়াবেটিস, যৌন রোগ, বিভিন্ন গ্রন্থির রোগ, হার্নিয়া, কিডনি এবং মূত্রথলিতে পাথর, হিস্টিরিয়া, ইত্যাদি রোগ হয়।