প্রথমত জেনে নেওয়া যাক ষট পঞ্চমী ব্রত কী এবং কারা এটা পালন করেন?
‘ষট পঞ্চমী’ ব্রত বিবাহিতা মহিলারা পালন করে থাকেন। ব্রত পালনকারীরা বিশ্বাস করেন, এই ব্রত পালন করলে তাঁর ঘরে সুখের অভাব থাকে না।
নারদমুনি এক দিন স্বর্গে ভ্রমণ করতে করতে ভাবলেন, অনেক দিন মর্তে যাইনি। এক দিন তবে মর্তে ভ্রমণ করে আসি। আনন্দ সহকারে তিনি মর্তে এলেন। কিন্তু ঘুরতে এসে দেখেন, সেখানকার লোকজন খুব কষ্টে দিন কাটাচ্ছেন। কারও ঘরে চাল নেই তো কারও ঘরে আনন্দ নেই। এই সব নানা দৃশ্য দেখে নারদমুনির মন খারাপ হয়ে যায়। আবার তিনি স্বর্গে ফিরে আসেন। স্বর্গে ফিরে তিনি লক্ষ্মী-নারায়ণের কাছে জিজ্ঞাসা করেন, কী এমন ব্রত আছে যা পালন করলে সংসারের সব দুঃখ-দারিদ্র চলে যাবে, সবাই সুখে, শান্তিতে থাকবে। নারায়ণ তখন লক্ষ্মীর দিকে চেয়ে বলেন, কী ব্রত পালন করলে তুমি মানবগৃহে অচলা থাকবে তা আমায় বল। লক্ষ্মী তখন বলেন, ষট পঞ্চমী নামে এক ব্রত আছে যা অতি দুর্লভ ব্রত। যিনি এই ব্রত নিষ্ঠা সহকারে পালন করেন আমি তাঁর ঘরে অচলা থাকি। তাঁর কোনও দিন অন্নের অভাব হয় না। স্বামী, সন্তান, আত্মীয়, সবাইকে নিয়ে তাঁরা সুখে-শান্তিতে দিন যাপন করতে পারেন। আপনি এই ব্রতের বিষয়ে বিস্তারিত শুনুন:
আষাঢ় মাসের শুক্ল পঞ্চমী তিথিতে এই পুজো আরম্ভ করে ছয় বছর পালন করতে হয়। শুক্লপক্ষে পঞ্চমী তিথিতে গন্ধ, পুষ্প, ধূপ, দীপ, নানা রকম ফল, মিষ্টি, আতপ চালের নৈবেদ্য দিয়ে লক্ষ্মীনারায়ণের পুজো করে ব্রাহ্মণকে ভোজ্য দান করতে হয়। প্রথম দুই বছর ব্রতীকে লবণ ছাড়া আহার করতে হয়। তার দুই বছর পর হবিষ আহার করতে হয়। পঞ্চম বছরে ফল আর শেষ বছরে উপবাস থেকে ব্রত পালন করে তার পর ব্রাহ্মণকে ভোজন করাতে হবে। আমি যেমন আপনার কাছে সর্বদাই থাকি, ঠিক তেমনই যিনি ভক্তি ভরে ব্রত পালন করেন, আমি তাঁর ঘরে সর্বদা অচলা থাকি। তাঁর সব মনোকামনা পূর্ণ করি।
নারদমুনি সব শুনে এই ব্রত মর্তে প্রচার করলেন আর কালক্রমে এই ব্রত পৃথিবীতে ছড়িয়ে পড়ল।
এখন দেখে নেওয়া যাক, ১৪২৬ সনের ষট পঞ্চমী ব্রতের নির্ঘণ্ট:
বিশুদ্ধ সিদ্ধান্ত পঞ্জিকা মতে:
বাংলা তারিখ: ২২ আষাঢ় ১৪২৬, রবিবার।
ইং তারিখ: ০৭/০৭/২০১৯।
তিথি: পঞ্চমী
(০৬/০৭/২০১৯) দিবা ঘ ১/১০ মিনিট থেকে (০৭/০৭/২০১৯) সকাল ঘ ১০/১৯ মিনিট পর্যন্ত।
গুপ্তপ্রেস পঞ্জিকা মতে:
বাংলা তারিখ: ২১ আষাঢ় ১৪২৬, রবিবার।
ইং তারিখ: ০৭/০৭/২০১৯।
আরও পড়ুন: যে কোনও সময়ে দান করবেন না, মানুন এই নিয়মগুলি
তিথি: পঞ্চমী
(০৬/০৭/২০১৯) বিকাল ঘ ৪/৩১ মিনিট থেকে (০৭/০৭/২০১৯) দিবা ঘ ০২/০২ মিনিট পর্যন্ত।