১৪২৬ সনের শ্রীশ্রীসূর্যপূজা বা শ্রীশ্রীছট পূজার নির্ঘণ্ট ও সময়সূচি

ছট পর্ব সম্পর্কে বহু কাহিনি প্রচলিত আছে। মনে করা হয়, কুন্তির দ্বারা সূর্যের আরাধনা এবং কর্ণের জন্ম থেকেই এই পর্বের সূচনা। আবার ছট পর্ব শুরুর অন্য একটি কাহিনিও প্রচলিত আছে। পুরাণে কথিত আছে, প্রিয়ব্রত নামক রাজার কোনও সন্তান ছিল না। সন্তানপ্রাপ্তির জন্য তাঁকে পুত্রেষ্টি যজ্ঞ করতে বলেন মহর্ষি কাশ্যপ। যজ্ঞের ফলস্বরুপ রানির একটি ছেলে হয়, কিন্তু সে মৃত জন্ম নেয়।

Advertisement

পার্থপ্রতিম আচার্য

শেষ আপডেট: ৩১ অক্টোবর ২০১৯ ০০:০৪
Share:

দীপাবলির ঠিক ছ’দিন পর পালিত ছট উৎসব। কার্তিক মাসের শুক্ল পক্ষের ষষ্ঠীতে ছট ব্রতর বিধান রয়েছে। অথর্ব বেদেও এই পর্বের উল্লেখ রয়েছে।

Advertisement

ছট পর্ব সম্পর্কে বহু কাহিনি প্রচলিত আছে। মনে করা হয়, কুন্তির দ্বারা সূর্যের আরাধনা এবং কর্ণের জন্ম থেকেই এই পর্বের সূচনা। আবার ছট পর্ব শুরুর অন্য একটি কাহিনিও প্রচলিত আছে। পুরাণে কথিত আছে, প্রিয়ব্রত নামক রাজার কোনও সন্তান ছিল না। সন্তানপ্রাপ্তির জন্য তাঁকে পুত্রেষ্টি যজ্ঞ করতে বলেন মহর্ষি কাশ্যপ। যজ্ঞের ফলস্বরুপ রানির একটি ছেলে হয়, কিন্তু সে মৃত জন্ম নেয়। সে সময়ই এক আশ্চর্যজনক ঘটনা ঘটে। আকাশ থেকে এক দেবী নেমে এসে বলেন, “আমি ষষ্ঠী দেবী, আমি বিশ্বের সমস্ত শিশুকে রক্ষা করি।” দেবী মৃত শিশুর শরীর স্পর্শ করেন এবং ওই শিশু বেঁচে ওঠে। এর পরই রাজ্যে এই ব্রত করার নির্দেশ দেন রাজা।

মনে করা হয়, ছট দেবী সূর্যের বোন। তাঁকে সন্তুষ্ট করার জন্য সূর্যের আরাধনা করা হয়। এ ছাড়াও মার্কণ্ডেয় পুরাণ থেকে জানা যায়, সৃষ্টির অধিষ্ঠাত্রী প্রকৃতি দেবী নিজেক ছয় ভাগে ভাগ করেছিলেন। তাঁর ষষ্ঠ অংশ সর্বশ্রেষ্ঠ মাতৃদেবী রূপে পরিচিত। তিনি ব্রহ্মার মানসপুত্রী এবং সন্তানদের রক্ষা করেন। পুরাণে এই দেবীর নামই কাত্যায়নি, যাঁর নবরাত্রের ষষ্ঠী তিথিতে পুজো হয়।

Advertisement

আবার পুরাণে এরও উল্লেখ আছে, কার্তিক শুক্ল পক্ষের ষষ্ঠীতে সূর্যাস্ত এবং সপ্তমীতে সূর্যোদয়ের মধ্যে বেদমাতা গায়েত্রীর জন্ম হয়। প্রকৃতির ষষ্ঠ অংশ থেকে উৎপন্ন হয়ে শিশুদের রক্ষা করে থাকেন তিনি। তিনি বিষ্ণু দ্বারা রচিত মায়া। শিশু জন্মের ষষ্ঠ দিনে ষষ্ঠী দেবীর পুজো করা হয়, যাতে শিশুর কখনও কোনও দুঃখ-কষ্ট না হয়। আবার আরও মনে করা হয়, পাণ্ডব যখন পাশা খেলায় নিজের সমস্ত রাজপাট হারিয়ে ফেলেন, তখন দ্রৌপদী ছট ব্রত করেন। দ্রৌপদীর মনোস্কামনা পুরণ হয় এবং পাণ্ডব তাঁদের রাজপাট ফিরে পান। এ ছাড়া রামায়ণেও ছট পুজোর উল্লেখ পাওয়া যায়।

আরও পড়ুন: এই সব জিনিস কখনও অন্যের কাছ থেকে ধার করে ব্যবহার করতে নেই

এখন জেনে নেওয়া যাক ১৪২৬ সনের ছটপূজার নির্ঘণ্ট ও সময়সূচি (বিশুদ্ধ সিদ্ধান্ত ও গুপ্তপ্রেস পঞ্জিকা মতে):

বিশুদ্ধ সিদ্ধান্ত পঞ্জিকা মতে:

ষষ্ঠী তিথি আরম্ভ:

বাংলা তারিখ: ১৪ কার্ত্তিক ১৪২৬, শুক্রবার।

ইং তারিখ: ০১/১১/২০১৯।

সময়: রাত ১২টা ৫১ মিনিট থেকে (০২/১১/২০১৯)।

ষষ্ঠী তিথি শেষ:

বাংলা তারিখ: ১৫ কার্তিক ১৪২৬, শনিবার।

ইং তারিখ: ০২/১১/২০১৯।

সময়: রাত্রি ০১টা ৩১ মিনিট পর্যন্ত ( ০৩/১১/২০১৯)।

শ্রীশ্রীসূর্য ষষ্ঠী, শ্রীশ্রীছট পূজা:

বাংলা তারিখ: ১৫ কার্তিক ১৪২৬, শনিবার।

ইং তারিখ: ০২/১১/২০১৯।

সূর্য উদয়: সকাল ০৫টা ৪৫ মিনিট ০১ সেকেন্ড পর্যন্ত।

সূর্য: বিকাল ০৪টে ৫৫ মিনিট ৩৩ সেকেন্ড।

গুপ্তপ্রেস পঞ্জিকা মতে:

ষষ্ঠী তিথি আরম্ভঃ:

বাংলা তারিখ: ১৪ কার্তিক ১৪২৬, শুক্রবার।

ইং তারিখ: ০২/১১/২০১৯।

সময়: শেষ রাত ০৪টে ০৩ মিনিট ৩৫ সেকেন্ড থেকে(০২/১১/২০১৯)।

ষষ্ঠী তিথি শেষ:

বাংলা তারিখ: ১৫ কার্তিক ১৪২৬, শনিবার।

ইং তারিখ: ০৩/১১/২০১৯।

সময়: রাত্রি শেষ ০৪টে ২০ মিনিট ০১ সেকেন্ড পর্যন্ত (০৩/১১/২০১৯)।

শ্রীশ্রীসূর্য ষষ্ঠী, শ্রীশ্রীছট পূজা:

বাংলা তারিখ: ১৫ কার্তিক ১৪২৬, শনিবার।

ইং তারিখ: ০২/১১/২০১৯।

সূর্য উদয়: সকাল ০৫টা ৪৪ মিনিট ৪৫ সেকেন্ড।

সূর্য অস্ত: বিকাল ০৪টে ৫৫ মিনিট ২৬ সেকেন্ড।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement