রাহুর কোনও শারীরিক অস্তিত্ব নেই। রাহু সূক্ষ্ম গাণিতিক সন্ধিবিন্দু। উত্তর বিন্দু রাহু, দক্ষিণ বিন্দু কেতু। রাহু এবং কেতু সর্বদা একসঙ্গে চলে।
সিংহীকা এবং বিপ্রসিদ্ধির পুত্র স্বরভানু। দেবতাদের অমৃত বিতরণের সময় স্বরভানু ছলনার আশ্রয় নিয়ে সূর্য এবং চন্দ্রের মাঝে অমৃত গ্রহণ করেন। সূর্য এবং চন্দ্র স্বরভানুকে চিনতে পেরে বিষ্ণুদেবকে জানান। বিষ্ণু তখনই তাঁর সুদর্শনচক্র দিয়ে স্বরভানুর মাথা কেটে দেন। কিন্তু কয়েক ফোঁটা অমৃত স্বরভানুর মুখে থাকার ফলে মাথা অমরত্ব পায়। ছিন্ন মস্তক রাহু এবং দেহ কেতু। ফলস্বরূপ সূর্য এবং চন্দ্রের সঙ্গে চির শত্রুতা। সূর্য এবং চন্দ্র গ্রহণ রাহুরই কারণে হয়।
জ্যোতিষশাস্ত্রে রাহুকে একটি গুরুত্বপূর্ণ অশুভ গ্রহের স্থান দেওয়া হয়। রাহু বক্রী গ্রহ। শারীরিক অস্তিত্ব না থাকার কারণে রাহুকে ছায়াগ্রহ বলা হয়।
আরও পড়ুন: শনি শুধু কুফল দাতা নয়, ন্যায়বিচারকও
তবে রাহু যে শুধু অশুভ গ্রহ তা কিন্তূ বলা ঠিক নয়। রাহু শুভ ভাবে থাকলে জীবনে প্রবল উচ্চাশার সঞ্চার করে এবং কিছু ক্ষেত্রে সাফল্যও দান করে। শুভ রাহু তেজময় এবং বিখ্যাত করে তোলে। শুভ রাহু গবেষণায় সাফল্য দান করে। যে কোনও বিষয়ে রহস্য উন্মোচন, বা আবিষ্কার সংক্রান্ত কাজে রাহুর প্রভাব থাকে। বর্তমান যুগে দূর সংযোগকারী বৈদ্যুতিন যন্ত্রকে রাহু কেতুর কারক মানা হয়।
রাহুর অশুভ অবস্থানের ফল বা অশুভ রাহু ভয়াবহ হতে পারে। অশুভ রাহু বুদ্ধিভ্রম এবং মতিভ্রম ঘটায়। ভয়, আতঙ্ক, অশুভ রাহুর প্রভাবে হয়। অপরাধমূলক যে কোনও কাজ, সংগঠন করার প্রবণতা, বেআইনি কাজ, বা বলা ভাল আইন ভাঙার প্রবণতা। খুন বা ধর্ষণের মতো নৃশংস কাজের কারণ হতে পারে অশুভ রাহু।
চন্দ্রের গোচর কালে আর্দ্রা, স্বাতি, শতভিশা (রাহুর নক্ষত্রে) নক্ষত্রে অবস্থান কালে রাহু শক্তিশালী ফল দেয়। দেবী ছিন্নমস্তা এবং দেবী দুর্গার পুজোয় রাহুর শুভ ফল মেলে।