—প্রতীকী ছবি।
দাতা কর্ণের আত্মা স্বর্গে অবস্থান করলে তাকে খাবার হিসেবে সোনা এবং রত্ন দেওয়া হয়। কর্ণ এই কাজের কারণ জানতে চাইলে তাঁকে জানানো হয়, দাতা কর্ণ সারা জীবন সোনা এবং রত্ন দান করে গেছেন, পিতৃপুরুষের উদ্দেশে তিনি কখনও খাবার বা জল দান করেননি। সেই কারণেই তাঁকে স্বর্গে সোনা এবং রত্ন খাবার হিসাবে দেওয়া হয়েছে। কর্ণ তখন স্বীকার করেন যে, পিতা এবং পিতৃপুরুষদের যে খাবার এবং জল দান করতে হয়, সেই বিষয়টি তিনি জানতেন না। এ বিষয়ে তাঁর মা যুদ্ধের আগের রাতে তাঁকে জানান। পিতৃপুরুষদের উদ্দেশে খাবার এবং জল প্রদান না করা তাঁর অনিচ্ছাকৃত ভুল ছিল এবং তিনি সেই ভুল সংশোধনের ইচ্ছা প্রকাশ করেন। তখন দেবরাজ ইন্দ্র (মতান্তরে যম) কর্ণকে ১৬ দিনের জন্য মর্ত্যে গিয়ে পিতৃপুরুষদের উদ্দেশে অন্ন এবং জল দানের অনুমতি দেন। এই ১৬ দিনই পিতৃপক্ষ হিসাবে পালন করা হয়। ভাদ্র পূর্ণিমার পরবর্তী প্রতিপদ থেকে অমাবস্যা তিথি পর্যন্ত পিতৃপক্ষ পালন করা হয়।
তর্পণ কী? পূর্বপুরুষ, ঋষি, স্বর্গীয় পিতামাতা এবং গুরুর উদ্দেশে খাবার ও জল নিবেদন করে, তাঁদের শ্রদ্ধা জানিয়ে তুষ্ট করাই হল তর্পণ। তর্পণ বিভিন্ন প্রকারের হয়, বিভিন্ন তর্পণের বিভিন্ন প্রক্রিয়া বা রীতি প্রচলিত রয়েছে।
পুরাণে বলা হয়েছে, পিতৃপুরুষ (পূর্বপুরুষ) তুষ্ট হলে, তাঁদের আশীর্বাদে জীবদ্দশায় দীর্ঘায়ু, ধনসম্পত্তি, জ্ঞান, শান্তি এবং মৃত্যুর পর স্বর্গ ও মোক্ষ লাভ হয়।
পূর্বপুরুষের মৃত্যুর তিথিতেই তর্পণ করা হয়। মৃত্যু তিথিতে সম্ভব না হলে, পিতৃপক্ষের শেষ দিন অর্থাৎ অমাবস্যা তিথিতে বা মহালয়ার দিন ভোরবেলা (অমাবস্যা তিথি যে কোনও প্রেত কাজ করার জন্য শুভ বলে মনে করা হয়) তর্পণ করা হয়।