—প্রতীকী ছবি।
বিষ্ণুপুরাণ অনুসারে দেব এবং অসুরের ক্ষীরসাগর মন্থন কালে দেবী লক্ষ্মীর আবির্ভাব হয়। শাস্ত্রমতে দেবী লক্ষ্মীর আট রূপ। দেবী লক্ষ্মী আট রূপে পার্থিব এবং অপার্থিব আট প্রকার সম্পদের সঙ্গে সম্পর্কিত।
আদিলক্ষ্মী বা মহালক্ষ্মী:
দেবী আদিলক্ষ্মী বা মহালক্ষ্মীর চারটি হাত। দেবীর এক হাতে থাকে পদ্ম, এক হাতে থাকে সাদা পতাকা, অন্য দুই হাতে থাকে অভয় মুদ্রা এবং বরদা মুদ্রা। জ্যোতিষশাস্ত্র মতে আদিলক্ষ্মী বা মহালক্ষ্মীর সঙ্গে বৃহস্পতি গ্রহের সম্পর্ক রয়েছে।
ধনলক্ষ্মী:
দেবী ধনলক্ষ্মী লালবসনা। দেবীর ছয় হাতে ছয়টি জিনিস থাকে। সেগুলি হল— চক্র, আম্রপল্লব ও নারকেল বসানো কলসি, তির-ধনুক, পদ্ম, সোনার মুদ্রা এবং অভয় মুদ্রা। জ্যোতিষশাস্ত্র মতে দেবী ধনলক্ষ্মীর শুক্র গ্রহের সঙ্গে সম্পর্ক রয়েছে।
ধান্যলক্ষ্মী:
ধান্যলক্ষ্মী দেবী সবুজ বসনা। মা লক্ষ্মীর এই রূপের আটটি হাত। আট হাতের দু’টি হাতে থাকে পদ্ম। অন্যান্য হাতগুলিতে থাকে গদা, ধান, আখগাছ, কলা, অভয় মুদ্রা এবং বরদা মুদ্রা। জ্যোতিষশাস্ত্র মতে দেবী ধান্যলক্ষ্মীর সূর্য এবং চন্দ্রের সঙ্গে সম্পর্ক রয়েছে।
গজলক্ষ্মী বা ভাগ্যলক্ষ্মী:
গজলক্ষ্মী বা ভাগ্যলক্ষ্মী পদ্মের উপর উপবেশিত এবং লাল বসনা। দেবীর চারটি হাতের দুই হাতে থাকে পদ্ম, অন্য দুই হাতে থাকে অভয় এবং বরদা মুদ্রা। দেবীর দুই পাশে থাকে দুই হাতি, যাঁরা কলসি দিয়ে দেবীকে জল অর্পণ করেন। জ্যোতিষশাস্ত্র মতে গজলক্ষ্মী বা ভাগ্যলক্ষ্মীর সূর্যের সঙ্গে সম্পর্ক রয়েছে।
সন্তানলক্ষ্মী:
সন্তানলক্ষ্মীর ছয়টি হাত। দেবীর ছয় হাতের উপরের দু’টি হাতে থাকে আম্রপল্লব ও নারকেল বসানো কলসি, নীচের হাতগুলিতে থাকে ঢাল ও তরোয়াল। মাঝের হাত দু’টির একটি হাত কোলে বসানো শিশুকে ধরে রাখে, শিশুর হাতে থাকে একটি পদ্ম। দেবীর অপর হাতে থাকে অভয় মুদ্রা। জ্যোতিষশাস্ত্র মতে দেবী সন্তানলক্ষ্মীর বৃহস্পতি এবং শুক্র গ্রহের সঙ্গে সম্পর্ক রয়েছে।
বীরলক্ষ্মী বা ধৈর্যলক্ষ্মী:
বীরলক্ষ্মী বা ধৈর্যলক্ষ্মী পদ্মে উপবেশন করে লাল বস্ত্র পরে থাকেন। দেবীর আটটি হাত। এই আট হাতে যথাক্রমে চক্র, শঙ্খ, তির, ধনুক, ত্রিশূল, তালপাতার ধর্মগ্রন্থ, অভয় মুদ্রা এবং বরদা মুদ্রা থাকে। জ্যোতিষশাস্ত্র মতে বীরলক্ষ্মী বা ধৈর্যলক্ষ্মীর মঙ্গল গ্রহের সঙ্গে সম্পর্ক রয়েছে।
বিজয়লক্ষ্মী বা জায়ালক্ষ্মী:
বিজয়লক্ষ্মী বা জায়ালক্ষ্মী হলেন লালবসনা। দেবীর আটটি হাতে আট রকমের জিনিস থাকে। সেগুলি হল— চক্র, শঙ্খ, তরোয়াল, ঢাল, পদ্ম, পাশ, অভয় মুদ্রা এবং বরদা মুদ্রা। জ্যোতিষশাস্ত্র মতে বিজয়লক্ষ্মী বা জায়ালক্ষ্মীর সূর্য এবং মঙ্গল গ্রহের সঙ্গে সম্পর্ক রয়েছে।
বিদ্যালক্ষ্মী:
দেবী বিদ্যালক্ষ্মী শুভ্রবসনা, স্বর্ণালঙ্কারে ভূষিতা এবং রাজহাঁসে উপবেশিতা। দেবীর চার হাতের দু’টিতে থাকে পদ্ম, অন্য দুই হাতে থাকে বরদা মুদ্রা এবং আভাস মুদ্রা। দেবী বিদ্যালক্ষ্মীর সঙ্গে দেবী সরস্বতীর মিল থাকলেও, অমিলও আছে। জীবনযাত্রায় সম্পদ গুরুত্বপূর্ণ, বিদ্যা এবং জ্ঞানের সঠিক ব্যবহারের মাধ্যমে আমরা আমাদের প্রয়োজনীয় সম্পদ লাভ করতে পারি।