আমরা জানি, প্রতিটি গ্রহের ডিগ্রিগত দিক থেকে মোট চারটি করে চরণ বা পদ হয়ে থাকে। কিন্তু অনেকেই কোষ্ঠীবিচারের ক্ষেত্রে এই চরণের ব্যাপারটা কোনও রকম ভাবে কোনও গুরুত্বই দেন না। কিন্তু গ্রহদের এই চরণ/পদের মধ্যেই মানুষের অনেক আচরণগত তথ্য লুকিয়ে আছে।
তথ্যগুলি জেনে নেওয়া যাক:
গ্রহদের চরণ/পদ বিচার করার সূত্র:
হিন্দু সনাতন ধর্ম অনুযায়ী মানুষের জীবনে পুরুষার্থ চার রকম হয়, যথা: ১। ধর্ম, ২। অর্থ, ৩। কাম/ যে কোনও রকম মানসিক চাহিদা/যৌন সংক্রান্ত চিন্তা/আবেগ প্রবণতা, ৪। মোক্ষ।
এ বার জ্যোতিষ মতেও প্রত্যেক গ্রহের মোট চারটি চরণ কিংবা পদ হয়।
এ বার ধর্মমতে চারটি পুরুষার্থের সঙ্গে ক্রমানুসারে জ্যোতিষ মতে চারটি চরণ/পদের ব্যাপারটা সংযুক্ত করে কোষ্ঠীবিচার করলেই মানুষের স্বাভাবিক আচরণগত স্বভাব কেমন হতে পারে সেটা হুবহু বোঝা যায়:
১। যদি কারও চন্দ্রের চরণ/পদ সংখ্যা ১ হয় তা হলে এটা ‘ধর্ম’ বোঝায়। অর্থাৎ সেই ব্যক্তি সাধারণত ব্যবহার বা আচরণগত দিক থেকে সভ্য, ভদ্র, নম্র, ধার্মিক স্বভাবের হয়ে থাকে। তারা অন্যের কাছে বিশ্বাসী হয়ে থাকে এবং তারা যতটা মানুষকে নিঃস্বার্থ ভাবে সাহায্য করে ততটা তারা নিজেরা অন্যদের থেকে না-ও পেতে পারে।
আরও পড়ুন: জ্যোতিষশাস্ত্র মতে শরীরে এই ৪টি চিহ্ন থাকলে আপনি প্রচুর টাকার মালিক হবেন
২। যদি কারও চন্দ্রের চরণ/পদ সংখ্যা ২ হয়, তা হলে এটা ‘অর্থ’ বোঝায়। অর্থাৎ সেই ব্যক্তি সাধারণত তার ব্যবহার বা আচরণগত দিক থেকে ভাল হলেও তারা নিজের স্বার্থ বুঝে জীবনের পথ চলতে ভালবাসে। তারা একটু বুঝেশুনেই অন্যের সাহায্য করে থাকে। তবে এরা খুব বাস্তববাদী হয়।
৩। যদি কারও চন্দ্রের চরণ/পদ সংখ্যা ৩ হয় তা হলে এটা ‘কাম/মানসিক চাহিদা/যৌন সংক্রান্ত চিন্তা’ বোঝায়। অর্থাৎ সেই ব্যক্তি সাধারণত খুব একটা বাস্তববাদী হয় না। তারা খুব সংবেদনশীল ও আবেগপ্রবণ স্বভাবের হয় এবং অন্যের চতুরতার জন্য তারা অনেকের কাছেই বার বার ঠকে যেতে পারে। তবে তাদের মানসিকতার মধ্যে বিপরীত লিঙ্গের প্রতি অতিরিক্ত আকর্ষণের প্রভাবটা একটু বেশি মাত্রায় থাকে, যার দ্বারা এরা বিপরীত লিঙ্গের থেকে দুঃখ পেলে মাঝেমধ্যেই নিঃসঙ্গ হয়ে পড়ে।
৪। যদি কারও চন্দ্রের চরণ/পদসংখ্যা ৪ (চার) হয়, তা হলে এটা ‘মোক্ষ’ বোঝায়। অর্থাৎ সেই ব্যক্তি জীবনে খুব একটা আভিজাত্য পছন্দ করবে না, তাদের জীবনের প্রধান উদ্দেশ্য হল, তারা যাতে সকলের সঙ্গে মিলেমিশে সুখেশান্তিতে থাকতে পারে সেই চেষ্টা করা। সকলের সঙ্গে মিলেমিশে থেকে এই সুখ-শান্তি-আনন্দ পেয়ে গেলে তারা আর বেশি কিছুই চায় না। তাদের মধ্যে অতিরিক্ত লোভ, হিংসা থাকে না।
এই ভাবে জ্যোতিষীরা একটা কোষ্ঠীতে সেই মানুষের মা, বাবা, ভাই, বোন, স্বামী-স্ত্রী, সন্তান— যে কোনও ব্যক্তির আচরণগত স্বভাব বিচারের ক্ষেত্রে কোষ্ঠীতে সেই ব্যক্তির বিচার্য ভাবের ভাবপতি গ্রহের চরণ/পদ দেখে তাদের আচরণগত স্বভাব সম্পর্কে ঠিক এই ভাবেই বোঝা সম্ভব।