রথ বলতে আমরা বুঝি এক প্রকার বাহন বিশেষ। পৌরাণিক কাহিনিতে সমস্ত দেবদেবীদেরই প্রধান বাহন হিসেবে রথের উল্লেখ আছে এবং বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন দেবদেবীর রথযাত্রার ও উল্লেখ পাওয়া যায়। কিন্তু আষাঢ় মাসের কথা বললেই শ্রীজগন্নাথদেবের রথযাত্রার কথা ছাড়া অন্য কিছু মনে আসে না। এই দিন উড়িষ্যার জগন্নাথধাম পূরীতে বিশেষ আড়ম্বরের সহিত শ্রীজগন্নাথ দেবের রথযাত্রা পালিত হয়।
আষাঢ় মাসের শুক্লপক্ষের দ্বিতীয়া তিথিতে অনুষ্ঠিত হয় রথযাত্রা উৎসব। জ্যৈষ্ঠ মাসের দেবস্নানা পূর্ণিমাতে স্নানের পরে অসুস্থ হয়ে পড়েন জগন্নাথদেব। ১৫ দিন যাবৎ (অনাসর কাল) রাজ বৈদ্যের চিকিৎসা এবং সেবায় সুস্থ হয়ে, জগন্নাথ, বলভদ্র এবং সুভদ্রার মাসির বাড়ি যাত্রার উৎসবই রথযাত্রা। বিষ্ণুদেবের পরম ভক্ত রাজা ইন্দ্রদুম্ন রথযাত্রার প্রবর্তক বলে মনে করা হয়। রাজা স্বপ্নাদেশে প্রভু জগন্নাথ, বলভদ্র এবং সুভদ্রার মূর্তি নির্মাণ করেন এবং পরবর্তী কালে রথযাত্রার প্রবর্তন করেন। কথিত আছে, জগন্নাথদেবের রথযাত্রা দেখলে এবং রথের দড়ি ধরলে (রথ টানলে) পাপ খণ্ডন হয়।
আরও পড়ুন: কেন বার অনুযায়ী বিভিন্ন রঙের পোশাক ব্যবহার করব
পুরী ছাড়াও সমগ্র ভারতবর্ষে এবং পৃথিবীর অন্যান্য জগন্নাথদেবের মন্দিরেও রথযাত্রা উৎসব পালন করা হয়। এ রাজ্যে হুগলির মাহেশে (শ্রীরামপুরে) পালিত হয় রথযাত্রা। এ ছাড়াও পূর্ব মেদিনীপুরের মহিষাদলের রথযাত্রা, হুগলির গুপ্তিপাড়ার রথযাত্রা, ইস্কনের রথযাত্রা, বিশেষ ভাবে উল্লেখযোগ্য।
যাত্রা শুরুর উৎসব রথযাত্রা। হিন্দু ধর্মের একটি পূর্ণ উৎসব। এই দিনটি যে কোনও শুভ কাজ শুরু করার পক্ষে আদর্শ দিন। বিশেষত গৃহপ্রবেশ, নির্মাণ কার্য শুরু করার শুভ দিন। এ বারের রথযাত্রা আগামী ২৩ জুন, (৮ আষাঢ়) মঙ্গলবার।