তুলা লগ্ন বা তুলা রাশি: গোচরে তুলার নবমে মিথুনে রাহু ৭ মার্চ প্রবেশ করেছে। তুলার ভাগ্যাকাশে আগামী দেড় বছর এই রাহু মিশ্র ফল দেবে। পরিবারের মধ্যে পিতা বা পিতৃস্থানীর ব্যাক্তিদের পক্ষে বেশ খারাপ সময়। এই জাতক/জাতিকার যদি রাহু/কেতুর দশা অন্তর্দশা চলে, তা হলে রাহুর কুপ্রভাব আরও বহুগুণে বেড়ে যাবে। তাদের স্বাস্থ্য ও শরীর নিয়ে চিন্তিত হওয়ার কারণ রয়েছে। এই সময়ে জাতক/জাতিকার স্নায়ু খুব উত্তেজিত অবস্থায় থাকে। ভিতরে ভীষণ অস্থিরতা বিরাজ করে। এই সময়ে উগ্রতান্ত্রিক গুরুরকাছে দীক্ষা লাভের যোগ সৃষ্টি হয় আবার এই জাতীয় গুরুর থেকে প্রতারিত হওয়ারও যোগ সৃষ্টি হয়। ধর্মের ব্যাপারে এটা সেই অর্থে অস্থির অবস্থা। দীর্ঘ তীর্থ ভ্রমণের সুযোগ এসে উপস্থিত হবে। কোনও প্রতিবেশীর সঙ্গে অশান্তি পুলিশ পর্যন্ত যেতে পারে। অনেক ছাত্রছাত্রীদের উচ্চ শিক্ষায় ও পরীক্ষায় নানা ভাবে বাধা আসবে। কেউ আবার কর্ম ও ভ্রমণ উপলক্ষ্যে দূরে যাওয়ার সুযোগ পাবেন।
বৃশ্চিক লগ্ন বা বৃশ্চিক রাশি: বৃশ্চিকের পক্ষে রাহুর এই অবস্থান ভীষণ খারাপ। এটা মূলত যাঁরা নানা অপরাধের সঙ্গে জড়িত, তাঁদের ক্ষেত্রে বেশি খারাপ। স্বাভাবিক জীবনেযাঁদের চন্দ্র নীচস্থ বা নানা ভাবে কুপিত, তাঁরা নানা রকম অশান্তি ও নেগেটিভ ব্যাপারে জড়িয়ে পড়ে কষ্ট ভোগ করে থাকেন। কর্মক্ষেত্রে ও পারিবারিক জীবনে নানা রকম অশান্তির সৃষ্টি হয়, যদি সংযত হয়ে না চলা যায়। বৈবাহিক জীবনে নানা সমস্যা দেখা দেবে। বহু প্রেম এই সময়ে ভুল বোঝাবুঝির কারণে ভেঙে যাবে। পেশাগত জীবনে ভাবা যায়নি এমন সব সমস্যা নানাদিক থেকে উঠে এসে সমস্যা সৃষ্টি করে থাকে। যৌন সমস্যার কারণে দাম্পত্য জীবনে নানা সমস্যা সৃষ্টি হয়। নিম্নাঙ্গের কিছু রোগ এই সময়ে মাথাচাড়া দিয়ে ওঠে। অনৈতিক কোনও কাজ অতীতে করা থাকলে সেটা এই সময়ে সামনে এসে সমস্যার সৃষ্টি করে।
ধনু লগ্ন বা ধনু রাশি: ধনুর সপ্তমে গোচর রাহু। এই দেড় বছর আপনি অসুখী, অতৃপ্ত ও অস্থির ভাবে জীবন যাপনে করতে বাধ্য হবেন। তার প্রধান কারণ আপনার বিপরীতেযিনি থাকবেন, তিনি আপনাকে নানা সমস্যায় জেরবার করে তুলবেন যদি আপনি বিবাহিত হন। বিবাহিত না হলে মাঝে মধ্যে চর্মরোগ বা এলার্জি হতে পারে। এই সময়েপ্রেমের নামে অসৎ চরিত্রের কোনও মহিলা/পুরুষের পাল্লায় পড়ে কিছুটা দুর্নাম হতে পারে। আপনার যদি পার্টনারশিপে কোনও ব্যবসা থাকে, তবে সেই পার্টনার আপনার সঙ্গে বেইমানি করবে। আর্থিক ক্ষেত্রে নতুন কোনও বিনিয়োগ না করাই ভাল। এই সময় আপনার প্রেমিকা/প্রেমিক আপনাক ছেড়ে চলে যেতে পারে। এই সময়ে কর্মের কারণে দূরদেশে যেতে হতে পারে। যাঁদের জন্মকালীন রাহু এই ঘরে অবস্থান করছে, অনেক সময় তাঁদের ভিতর আত্মহত্যার প্রবণতা কাজ করবে। তাই আগে থেকে নৈতিক জীবনযাপন এবং পজিটিভ চিন্তা ধারার মধ্যে থাকলে শরীর ও মন ভাল থাকে। এই সময়ে কর্মক্ষেত্রে সহকর্মীদের আচরণ আপনাকে কষ্ট দেবে। আপনার বসের আচরণ আপনাকে ভাবাবে। ক্ষেত্রবিশেষে কেউ অবৈধ সম্পর্কে জড়িয়ে পড়তে বাধ্য হবেন।
আরও পড়ুন: এই মাসে ঘর পাল্টালো রাহু, কোন রাশিতে কী প্রভাব জেনে নিন (প্রথম অংশ)
মকর লগ্ন বা মকর রাশি: গোচরে ষষ্ঠে রাহু থাকাতে মকরের জাতক/জাতিকা এখন নানা দিক থেকে শুভ ফল পাবেন। পুরনো কোনও রোগে যাঁরা ভুগছেন তার থেকে মুক্তি পাবেন। যাঁরা চাকরি খুঁজছেন, তাঁরা ভাল চাকরি পেতে পারেন। ব্যবসায়ীদের ব্যবসা বাড়তে পারে। যাঁরা ধার নিয়ে ধার শোধ করতে পারছিলেন না, তাঁরা এই সময়ে অনেক ধার শোধ করে ফেলবেন। ছাত্ররা পরীক্ষায় ভাল ফল করবে। যাঁরা চাকরি করেছেন ষষ্ঠে রাহু তাঁদের প্রমোশনের সুযোগ করে দেবে। একই সঙ্গে আর্থিক দিক লাভবান করেতুলবে।
কুম্ভ লগ্ন বা কুম্ভ রাশি: কুম্ভের জাতক/জাতিকাদের গোচরে পঞ্চমে রাহু মিথুনে থাকার জন্য নানা দিক থেকে মিশ্র ফল পাবেন। রাহু পঞ্চমে থাকার কারণে পিতার আর্থিক ক্ষতি বা চাকরি জীবনের হটাৎ করে ছেদের কারণে পরিবারে দুশ্চিন্তার সৃষ্টি হবে। সন্তানের লেখাপড়া অনেক ক্ষেত্রে ভাল ফল দেবে। যাঁরা খেলাধূলার সঙ্গে জড়িত, তাঁরা আগামী দেড় বছরের মধ্যে নানা সুযোগ ও পুরস্কার পাবেন। যাঁরা শেয়ার বাজার, ফাটকায় টাকা খাটান, তাঁরা সেখান থেকে অনেক উপার্জন করবেন। গুরু সান্নিধ্যে দীক্ষার যোগ রয়েছে। এই সময়ে অনেকে নেশাগ্রস্ত হয়ে যেতে পারেন। এই সময়ে দাম্পত্য জীবনে অসুস্থ ও বিকৃত যৌন সুখের কারণে বিকলাঙ্গ সন্তানের জন্ম হতে পারে। তাই সুস্থ ও পবিত্র দাম্পত্যজীবনই কাম্য। অনেকের ক্ষেত্রে, এই সময়ে বিবাহ বহির্ভূত যৌনজীবন বিপদ ডেকে আনতে পারে।
মীন লগ্ন বা মীন রাশি: গোচরে মীনের জাতক/জাতিকারা রাহুকে চতুর্থে পাচ্ছে। যার ফলে এই সময়ে রুগ্ন মাকে অনেক সমস্যা ভোগ করতে হবে। শুধু মা নয়, বাড়িতে বাবা যদি বৃদ্ধ হয়ে থাকেন, তাঁকে নিয়ে সমস্যা হতে পারে। যাঁরা ভাড়াবাড়িতে থাকেন, এই সময়ে তাঁদের অন্যত্র উঠে যাওয়ার জন্য তাড়া আসতে পারে। জায়গা ও জমি নিয়ে নানা পুরানো ঝামেলা বড় হয়ে উঠতে পারে। যাঁরা কোনও কারণে এই সময়ে বাড়ি বা জমি বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছেন, তাঁরা এই সময়ে সেই জমি বা বাড়ির জন্য উপযুক্ত মূল্য পাবেন না। অনেকের চাকরি বা ব্যবসার কারণে স্থানান্তরে চলে যেতে হতে পারে।