জ্যোতিষ মতে প্রেম বিবাহের ক্ষেত্রে জাতক জাতিকার জন্ম ছকে পঞ্চম ভাব ও পঞ্চমপতি উপর সবার আগে গুরুত্ব দেওয়া হয়। ছকে পঞ্চমভাবে কোন কোন ভাবের গ্রহ অবস্থান করছে। একই সঙ্গে পঞ্চমপতি কোথায় অবস্থান করছে। সাধারণত লগ্নের পঞ্চমপতি সপ্তমে অবস্থান করলে প্রেম থেকে বিবাহ হয়। এই প্রসঙ্গে বলে রাখা ভাল, সপ্তম স্থানে শুক্র, রাহু, বা শনি কতৃকযুক্ত বা দৃষ্ট হলে এবং শুভ দৃষ্টি বহির্ভুত হলে জাতক জাতিকারা প্রেমঘটিত বিবাহের দিকে যায়। প্রেম বিবাহের সাফল্য নির্ভর একাদশপতির সংযোগের উপর।
প্রেম বিবাহের ক্ষেত্রে, জ্যোতিষ মতে কয়েকটি জিনিস আমাদের জানতে হবে। গ্রহ হিসেবে রাহু ভোগের কারক। চন্দ্র মনের কারক। শুক্র হচ্ছে প্রেমপ্রীতি ও ভালবাসার কারক গ্রহ। আর সাহসের কারক গ্রহ মঙ্গল। মনে করুন একজন যুবতী একজন যুবককে ভালবাসছে এবং তারা পরস্পরকে বিয়েও করতে চায়। কিন্তু যুবতীর বাড়ীতে প্রচন্ড বাধা। তাহলে, এক্ষেত্রে কি করে বিয়ে হবে? এবার দেখতে যুবতীর কোষ্ঠিতে মঙ্গল কি পজিশনে আছে। মঙ্গল যদি শুভ ভাবে অর্থাৎ বলবান থাকে, তখন যুবতীকে ঘর ত্যাগে উদ্বুদ্ধ করবে প্রেমাস্পদের সঙ্গে মিলিত হওয়ার জন্যে, আর রাহু হচ্ছে উগ্র কামনা-বাসনার, ভোগ-লালসার কারক গ্রহ, অশুভ রাহুর প্রভাবে জাতিকা লাজ, লজ্জ্বা, ঘৃণা, ভয় সঙ্কোচ কাটিয়ে প্রেমজ সম্পদকে ভোগ করার দিকে ছুটবে।
পঞ্চম পতি ও সপ্তম পতি শুক্র, চন্দ্র, মঙ্গল, কতৃক যুক্ত বা দৃষ্ট হলে জাতক জাতিকা জীবনে নতুনত্বের সন্ধান পেতে চায়। ফলে তারা প্রেমজ বিবাহের দিকে ঝুকবে। স্ত্রী কোষ্ঠিতে অশুভ, দুর্বল, নিম্নস্থ শুক্র, রবির দীপ্তাংশের মধ্যে অবস্থান করলে প্রেম ঘটিত বিবাহ হয়। পঞ্চম পতি ও সপ্তম পতি একই গৃহে সহবস্থান করলে, পঞ্চম ও সপ্তম পতি দৃষ্টি বিনিময় করলে বা পঞ্চম পতি সপ্তমের ঘরে আর সপ্তম পতি পঞ্চমের ঘরে, তখন প্রেমজ বিবাহ হয়।
লগ্নের পঞ্চমে শুক্র ও চন্দ্রের সহবস্থান অথবা পঞ্চম পতি শুক্র ও চন্দ্র সহ পঞ্চম ভাবে অবস্থান করলে প্রণয় ঘটিত বিয়ের সম্ভাবনা থেকেই যায়। লগ্নের দ্বাদশে মঙ্গল দৃষ্ট অথবা নিম্নস্থ দুর্বল শুক্র দ্বাদশস্থ শুক্রের সহিত মঙ্গলের অশুভ সম্পর্ক স্থাপন হলে জাতক জাতিকা একরোখা জেদী হয়। কোনও প্রকার বাধা না মেনে গুপ্ত প্রণয়ের দিকে ঝোকে এবং বিয়ে করে।
চন্দ্র দ্বাদশে অশুভ গ্রহ দ্বারা যুক্ত বা দৃষ্ট হলে এবং শুভগ্রহের দৃষ্টি না পেলে জাতক জাতিকা অসামাজিক প্রণয়ে লিপ্ত হয়ে বিবাহের দিকে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। রাশিচক্রে কোনও জাতিকার লগ্নের দ্বাদশে শুক্র রাহু যুক্ত হয়ে অন্য কোনও শুভ গ্রহের দৃষ্টি না পেলে নিজ স্বামী ছাড়া অপর পুরুষের সঙ্গে অবৈধ প্রণয়ে লিপ্ত হয়।
যদি শুক্র কেতু যুক্ত হয়ে দ্বাদশে বা সপ্তম ভাবে থাকে বা সপ্তম পতির সঙ্গে সম্বন্ধ করে তবে জাতক জাতিকা পালিয়ে গিয়ে গুপ্ত বিবাহ করে বা স্ত্রী স্বামীকে না জানিয়ে সমান্তরাল প্রেমে লিপ্ত হয়ে থাকে। শুক্র শনি ও কেতু যুক্ত হয়ে সপ্তম পতির সঙ্গে কোনও রূপ সম্বন্ধ করলে জাতক জাতিকা গুপ্ত প্রেম করবেই।
শুক্র মঙ্গল যুক্ত হয়ে রাহু দ্বারা দৃষ্ঠলে বা যুক্ত হলে জাতক জাতিকা ব্যাভিচারে লিপ্ত হয়। তার ভিতরে অদম্য বাসনা তাকে বিপথে নিয়ে যায়। শুক্র ও রাহু যুক্ত হয়ে মঙ্গল দ্বারা দৃষ্ট হলে এবং লগ্নপতি দুর্বল হলে জাতিকা গৃহ ত্যাগ করে তার প্রেমিককে বিয়ে করতে চায়। একজন জাতক তখনই নীচ জাতীর কোনও মহিলাকে বিয়ে করতে চাইবে যখন জাতকের ছকে নবমে শনি অথবা রাহু অথবা মঙ্গল অবস্থান করবে। এই সঙ্গে নবম ভাবের কারক গ্রহ বৃহস্পতি বিশেষভাবে অশুভ বা পীড়িত হয়।