ফ্যাটি লিভারের লক্ষণ ধরা পড়ে পায়েও। ছবি: শাটারস্টক।
স্থূলতার হাত ধরে যে সব রোগ ঘাড়ে শ্বাস ফেলে, তার মধ্যে অন্যতম হল ফ্যাটি লিভার। খাওয়াদাওয়ায় ব্যাপক অনিয়মের ফলে ফ্যাট জমতে শুরু করে লিভারে। তার উপর মদ্যপানের অভ্যাস থাকলে ঝুঁকি বেড়ে যায় আরও। সময় মতো চিকিৎসা না করালে এই অসুখের হাত ধরে ‘সিরোসিস অব লিভার’-ও হতে পারে। ডায়াবিটিস, থাইরয়েডের মতো হরমোনজনিত নানা অসুখেও ফ্যাটি লিভারের প্রবণতা বাড়ে। তাই আগাম সতর্ক হওয়া প্রয়োজন। তার আগে জেনে নেওয়া প্রয়োজন কী কী উপসর্গ দেখা দিলে ফ্যাটি লিভার নিয়ে সচেতন হবেন।
এই রোগের উপসর্গ ধরা পড়ে পায়েও। যদিও ফ্যাটি লিভারের রোগ সরাসরি পায়ে প্রভাব ফেলে না। নন-অ্যালকোহলিক স্টেটোহেপাটাইটিস বা সিরোসিসের পর্যায় পৌঁছে গেলে, তা রক্তসংবহনতন্ত্রকে প্রভাবিত করে। ফলে সারা শরীরেই রক্ত সংবহন ব্যহত হয়, বাদ পড়ে না পা-ও। লিভার সিরোসিসে আক্রান্ত রোগীদের অনেক সময়ে পায়ে ফোলা ভাব দেখা যায়, চিকিৎসকেরা একে বলেন অয়ডিমা। এ ছাড়া, লিভার সিরোসিসের রোগীর পেটে তরল জমতে শুরু করে, যাকে অ্যাসাইটস বলা হয়।
ফ্যাটি লিভার রোগ কার্ডিয়োভাসকুলার ডিজিজ় (সিভিডি)-র ঝুঁকিও বাড়িয়ে দেয়। হৃদ্যন্ত্রের সমস্যা শুরু হলে রক্ত সঞ্চালন ব্যাহত হয়ে পেরিফেরাল আর্টারি ডিজিজ় হতে পারে। এই রোগে আক্রান্ত হলে অন্যান্য অঙ্গ-সহ পায়েও রক্ত সঞ্চালন ঠিক মতো হয় না। এর ফলে পায়ে তীব্র যন্ত্রণা, পেশিতে টান, হাঁটতে গিয়ে পায়ে জোর না পাওয়ার মতো সমস্যা শুরু হতে পারে।
ফ্যাটি লিভার রোগ কার্ডিয়োভাসকুলার ডিজিজ় (সিভিডি)-র ঝুঁকিও বাড়িয়ে দেয়। ছবি: শাটারস্টক।
কোন কোন উপসর্গ দেখে সতর্ক হবেন?
১) অল্প পরিশ্রমেই ক্লান্ত হয়ে পড়ছেন? শারীরিক দুর্বলতা বলে এড়িয়ে গেলে কিন্তু সমস্যা ধীরে ধীরে মারাত্মক আকার নিতে পারে।
২) শরীরে খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্রা বেড়ে গেলে অনেক সময়ে তার হাত ধরে ফ্যাটি লিভার হানা দেয় শরীরে। যদি খারাপ কোলেস্টেরল বা এলডিএল-এর মাত্রা আরও বাড়তে থাকে, তা হলে অবশ্যই পরীক্ষা করিয়ে নেওয়া জরুরি ফ্যাটি লিভার হয়েছে কি না।
৩) কোনও কারণ ছাড়া ভুঁড়ি বেড়ে যাওয়া ফ্যাটি লিভারের উপসর্গ হতে পারে।
৪) ফ্যাটি লিভারের কারণে লিভারের কাজ ব্যাহত হয়, শরীর থেকে বর্জ্যপদার্থ ভাল করে বেরোতে পারে না। তাই নজর রাখুন প্রস্রাবের রং ও গন্ধের দিকে। পর্যাপ্ত পরিমাণে জল খাওয়ার পরেও একটানা প্রস্রাবের রং হলুদ হতে থাকলে ও দুর্গন্ধ থাকলে ফ্যাটি লিভার সম্পর্কে সচেতন হন।
৫) ওজন বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে অনেকের খিদেও বেড়ে যায়। এমন সময়ে মিষ্টি জাতীয় খাবারের প্রতি আসক্তি বাড়লে ফ্যাটি লিভারের সমস্যা হতে পারে।