চুলের পড়ে যাওয়া থেকে মুক্তি পেতে নিয়মিত যোগাসন করুন। ছবি: সংগৃহীত।
কম-বেশি অনেকেই চুল পড়ার সমস্যায় নাজেহাল। মাথায় টাক পড়তে শুরু করলে অনেকেই মানসিক ভাবে ভেঙে পড়েন। তবে লম্বা কিংবা ছোট, চুলের দৈর্ঘ্য যা-ই হোক না কেন, চুল পড়া খুব স্বাভাবিক সমস্যা। বিশেষ করে যাঁরা বড় চুল রাখতে পছন্দ করেন, তাঁরা সবচেয়ে বেশি এই সমস্যার সম্মুখীন হন। চুল পড়া বন্ধ করতে বার বারই ছুটে যেতে হয় চিকিৎসকের কাছে। নামী-দামি প্রসাধনী ব্যবহার করেও মেলে না সমস্যার সমাধান।
চুলে পুষ্টির ঘাটতি হলে চুলের গোড়া আলগা হয়ে যায়। ফলে চুল ঝরে যায়। অনেকেই আবার বংশগত কারণেও চুল পড়ার সমস্যায় ভোগেন। শরীরে রক্ত সঞ্চালনের অভাবেও চুল পড়ে যায়। জানেন কি, নিয়মিত কয়েকটি যোগাসন করলেই চুল পড়ার সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব?
চুল পড়া বন্ধ করতে কপালভাতি করুন। ছবি: সংগৃহীত।
সর্বাঙ্গাসন:
চিত হয়ে শুয়ে পড়ুন। পা দু’টি জোড়া করে উপরে তুলুন। এ বার দু’হাতের তালু দিয়ে পিঠ এমন ভাবে ঠেলে ধরুন, যেন ঘাড় থেকে পা পর্যন্ত এক সরলরেখায় থাকে। থুতনিটি বুকের সঙ্গে লেগে থাকবে। দৃষ্টি থাকবে পায়ের আঙুলের দিকে। স্বাভাবিক ভাবে শ্বাসপ্রশ্বাস নিয়ে মনে মনে ৩০ গুনুন। শবাসনে বিশ্রাম নিন। এ ভাবে তিন বার অভ্যাস করুন। আসনটি প্রথম প্রথম দুই থেকে তিন বার করুন। তবে ভাল ভাবে অভ্যস্ত হয়ে গেলে একেবারে মিনিট খানেক সময় নিয়ে আসনটি অভ্যাস করলে আর একাধিক বার করার দরকার হয় না। এই আসন শরীরে রক্ত সঞ্চালন বাড়াতে সাহায্য করে। নিয়মিত এই আসনটি করলে চুল পড়ার সমস্যা দূর হবে।
কপালভাতি:
প্রথম একটি ফাঁকা জায়গায় শান্ত হয়ে বসুন। বসার ভঙ্গি হোক পদ্মাসনে। কিছু ক্ষণ স্বাভাবিক ভাবে শ্বাস নিন। শ্বাসপ্রশ্বাসের প্রক্রিয়া স্বাভাবিক হলে মুখ দিয়ে শ্বাস নিয়ে কিছু ক্ষণ ধরে রাখুন। এ বার ধীরে ধীরে নাক দিয়ে শ্বাস ছাড়ুন। খেয়াল রাখবেন শ্বাস ছাড়ার সময়ে পেট যেন একটু করে ভিতরের দিকে ঢুকে আসে। এই পদ্ধতিতে ২০ বার শ্বাস নিন ও ছাড়ুন। মিনিট খানেকের বিরতি নিন। আবার ২০ বার এই ভাবে শ্বাস ছাড়া-নেওয়া করে যায়। মোট একশো বার করার চেষ্টা করুন।
বজ্রাসন
এই আসনটি করতে প্রথমে কোনও সমতল জায়গায় পিছন দিকে হাঁটু মুড়ে বসুন। এ বার হাঁটু দু’টি একে অপরের সঙ্গে জুড়ে পায়ের গোড়ালির উপর বসুন। দু’হাতের তালু হাঁটুর উপরে সোজা করে রাখুন। পুরো শরীর টান টান রেখে ৩-৪ মিনিট এই অবস্থায় বসুন। শ্বাস-প্রশ্বাস স্বাভাবিক রাখুন। কিছু ক্ষণ পর স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসুন। প্রতি দিন সকাল অথবা রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে এই আসনটি করতে পারেন। এতে হজমশক্তি ভাল হয়। পেটের যে কোনও রকম সমস্যা সমাধানের অব্যর্থ দাওয়াই এই আসন। পেট পরিষ্কার থাকলে চুল পড়াও বন্ধ হবে।
বালাসন
হাঁটু মুড়ে গোড়ালির উপর বসুন। এ বার শরীরটা বেঁকান। শরীরটা এমন ভাবে বেঁকান যাতে বুক যেন গিয়ে উরুতে ঠেকে। মাথা মেঝেতে রাখুন। আর হাত দু’টি সামনের দিকে প্রসারিত করে রাখুন। মানসিক অবসাদ ও হজমের গোলমাল হলেও চুল পড়ে যায়। বালাসন করলে এই দুই সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে পারেন। এই আসন স্নায়ুতন্ত্রের জন্যেও খুব উপকারী।