চিত্রাঙ্কন: শৌভিক দেবনাথ।
রান্নার সময়ে একটানা অনেক ক্ষণ খুন্তি নাড়লেই কি হাতে ব্যথা করে আপনার? জামাকাপড় কাচা, ঘর পরিষ্কারের সময় হয়তো দেখলেন, হাত কাঁপছে, অল্পেই ব্যথা হয়ে যাচ্ছে। লেখার সময় টান ধরছে আঙুলে। মোবাইল নিলেই হাত টনটনিয়ে উঠছে। কিছু ক্ষণ মাউস চালনা করলে কব্জিতে ভয়ানক ব্যথা হচ্ছে। কখনও কখনও আঙুল এতটাই অবশ হয়ে যায় যে, মুঠো করে কিছু ধরার শক্তিটুকুও থাকে না। ব্যথা-বেদনা ঠেকিয়ে রাখতে নিয়ম করে যোগাসন করা একান্ত প্রয়োজন। অবশ্য সঠিক নিয়ম মেনে যোগাসন করলে তবেই মিলবে ফল। শরীর ও মন চাঙ্গা রাখতে কোন কোন আসন অভ্যাস করতে পারেন, খোঁজ নিল আনন্দবাজার অনলাইন। রইল আসন আসান করার পদ্ধতির হদিস। আজকের ব্যায়াম রিস্ট রোটেশন বা কব্জি ঘূর্ণন।
অস্থিসন্ধি ভাল রাখতে রিস্ট রোটেশন ব্যায়ামটি উল্লেখযোগ্য ভূমিকা নেয়। দাঁড়িয়ে বা মাটিতে বসেও এই যোগাসনটি করা যায়। কিন্তু, অনেক সময় কাজের মধ্যে থাকলে উঠে দাঁড়িয়ে আসন করা হয়ে ওঠে না। বিকল্প হিসেবে চেয়ারে বসে আসনটি অভ্যাস করা যায়।
কী ভাবে করবেন?
• চেয়ারের উপর মেরুদণ্ড সোজা করে পা ঝুলিয়ে বসুন। মাথা ও ঘাড় সোজা রাখুন। দুই পা মাটিতে রাখতে হবে। এ বার দুই হাত কোলের উপর রেখে টানটান হয়ে বসুন। এটি আসন শুরুর প্রাথমিক অবস্থান।
• দুই হাত কাঁধের উচ্চতায় সামনের দিকে বাড়িয়ে দিন। লক্ষ্য রাখবেন, কনুই যেন সোজা থাকে।
• এ বার দুই হাত একসঙ্গে মুঠো করুন। বৃদ্ধাঙ্গুষ্ঠ যেন ভিতরের দিকে থাকে।
• এ বার মুষ্ঠিবদ্ধ দুই হাত একসঙ্গে কব্জি থেকে ঘড়ির কাঁটার দিকে অর্থাৎ ক্লকওয়াইজ় ঘোরান।
• খেয়াল রাখবেন, কনুই ও হাত যেন কাঁধ বরাবর উচ্চতায় টানটান থাকে।
• খুব ধীরে কব্জি থেকে হাত ঘোরানো শুরু করতে হবে। শুরুতে অসুবিধে হতে পারে। অভ্যাস করলে রপ্ত হয়ে যাবে।
• ক্লকওয়াইজ় ৭ বার ও অ্যান্টি ক্লকওয়াইজ় ৭ বার করে ঘোরাতে হবে।
কেন করবেন?
হাতের কব্জিতে ছোট ছোট অজস্র হাড় থাকে। নিয়মিত হাতের ব্যায়াম করলে অস্থিসন্ধি সুস্থ থাকে। বিশেষ করে, যাঁরা একনাগাড়ে ডেস্কে কাজ করেন, কম্পিউটারে টাইপ করেন, তাঁদের কব্জির অস্থিসন্ধির হাড় ও কার্টিলেজ ক্ষয়ে যাওয়ার ঝুঁকি থাকে। এ ছাড়া হাতের অতিরিক্ত ব্যবহারে কব্জিতে ডিক্যু নামে এক সমস্যা হয়। এতে অত্যন্ত ব্যথা হয়। হাত নাড়াচড়া করতেও কষ্ট হয়। রিস্ট রোটেশন অভ্যাস করলে অস্থিসন্ধিতে রক্তচলাচলের মাত্রা বাড়ে, একই সঙ্গে অস্থিসন্ধির সায়নোভিয়াল ফ্লুইড নিঃসরণ বেড়ে যায়। ফলে আর্থ্রাইটিস-সহ নানা ব্যথা-বেদনার হাত থেকে রেহাই পাওয়া যায়।