রজোনিবৃত্তির সঙ্গে অবসাদের যোগ রয়েছে। ছবি: সংগৃহীত।
নির্দিষ্ট একটা বয়সে যেমন ঋতুচক্র শুরু হয়, তেমনই নির্দিষ্ট সময়ে রজোনিবৃত্তিও আসে। এই রজোনিবৃত্তি বা ‘মেনোপজ়’-এরও কিন্তু তিনটি পর্যায় রয়েছে। ‘পেরিমেনোপজ়’, ‘মেনোপজ়’ এবং ‘পোস্টমেনোপজ়’। পেরিমেনোপোজ় বা ঋতুচক্রের এই শেষ পর্বে মহিলাদের নানা রকম শারীরিক এবং মানসিক পরিবর্তনের মধ্যে দিয়ে যেতে হয়। মন-মেজাজ বিগড়ে থাকে। অল্পতে রেগে যাওয়া কিংবা অবসাদেও ভুগতেও দেখা যায়। তবে সকলের উপরেই যে একই রকম প্রভাব পড়ে, তা নয়। সম্প্রতি একটি গবেষণায় দেখা গিয়েছে, যে সব মহিলার শরীরে রজোনিবৃত্তির লক্ষণগুলি প্রকট, তাঁদের অবসাদে ভোগার সম্ভাবনা অন্যদের তুলনায় ৪০ শতাংশ বেশি। ‘দ্য জার্নাল অফ অ্যাফেক্টিভ ডিজ়অর্ডার’-এ এই তথ্য প্রকাশিত হয়েছে। বিশ্ব জুড়ে ৯,১৪১ জন মহিলা এই সমীক্ষায় অংশ নিয়েছিলেন। তাঁদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতেই গবেষকেরা এই সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছেন।
রজোনিবৃত্তি হওয়ার তিন থেকে পাঁচ বছর আগেই শরীরে নানা রকম সমস্যা দেখা দিতে শুরু করে। হরমোন ক্ষরণেও হেরফের দেখা দেয়। দীর্ঘ দিন ধরে চলা ঋতুচক্র হুট করে একদিনে বন্ধ হয়ে যায় না। বরং তা অনিয়মিত হয়ে পড়ে। এই সময়কালে অনিয়মিত ঋতুস্রাব হয়, মন-মেজাজ বিগড়ে থাকে। এ ছাড়া মানসিক নানা রকম সমস্যা দেখা যায়। অনেক মহিলার ক্ষেত্রে এই ধরনের উপসর্গগুলি একটানা আট বছর পর্যন্ত চলতে পারে। ঋতুচক্র পাকাপাকি ভাবে বন্ধ হওয়ার আগে এই ধরনের নানা রকম সমস্যা দেখা দেয়। পাশাপাশি বাড়তে থাকে অবসাদ।
চিকিৎসকেরা বলছেন, রজোনিবৃত্তির প্রথম পর্যায়ে অবসাদ গ্রাস না করলেও পেরিমেনোপজ়াল পর্যায় থেকে এই ধরনের সমস্যা বাড়তে থাকে। ‘ইউনিভার্সিটি কলেজ লন্ডন’-এর মনোরোগ বিশেষজ্ঞ রুপল দেশাইয়ের মতে, এই সমস্যা নিয়ন্ত্রণ করতে গেলে মহিলাদের আগে রজোনিবৃত্তির লক্ষণ সম্পর্কে সচেতন হতে হবে। সেই সঙ্গে মানসিক স্বাস্থ্যেরও খেয়াল রাখতে হবে।