দিনে কমপক্ষে ৭৫টি ‘টয়লেট পেপার’ খান তিনি। ছবি: সংগৃহীত।
অদ্ভুত নানা খাবার খাওয়া নিয়ে এর আগে কম শোরগোল হয়নি। তেলে চুপচুপে আলুভাজার সঙ্গে চকোলেট আইসক্রিম মেখে খাওয়া থেকে শুরু করে ম্যাগির সঙ্গে নরম পানীয়— এমন বিদঘুটে খাবার খেয়ে শিরোনামে এসেছেন অনেকেই। তাই বলে টয়লেট পেপার! সম্প্রতি আমেরিকার বাসিন্দা ৩৫ বছর বয়সি কেশা নামের এক মহিলার টয়লেট পেপার খাওয়ার প্রতি আসক্তির কথা প্রকাশ্যে এসেছে। একটি অনুষ্ঠানে এসে নিজের এমন অদ্ভুত অভ্যাসের কথা জানিয়েছেন তিনি। দিনে কমপক্ষে ৭৫টি ‘টয়লেট পেপার’ খান তিনি, সে কথাও বলেছেন।
খাওয়াদাওয়ার এমন অদ্ভুত অভ্যাসের নেপথ্যে অবশ্য রয়েছে এক ধরনের শারীরিক সমস্যা। কেশা ২৩ বছর ধরে ‘জাইলোফ্যাজিয়া’ নামক এক ‘ইটিং ডিজ়অর্ডার’-এর সমস্যায় ভুগছেন। এই রোগে মূলত বিভিন্ন ধরনের কাগজ খাওয়ার প্রতি একটা আসক্তি জন্মায়। খাতা, বইয়ের পাতাও ছিঁড়ে খেয়ে ফেলেন অনেকে। তবে কেশার ক্ষেত্রে টয়লেট পেপারের প্রতি ভালবাসা জন্মায়। ছোট থেকেই কেশা এই কাগজ খেয়ে আসছেন। তিনি শৌচালয় থেকে বেরোলেই কাগজ হয়ে শেষ হয়ে যেত। বাড়ির অন্যরা বুঝতেই পারতেন না, একটা গোটা কাগজের বান্ডিল এক জনের পক্ষে কী ভাবে ব্যবহার করা সম্ভব। কিছু দিন নজরে রাখার পর সত্যিটা জানতে পারেন সকলে। শৌচালয়ে বসে কাগজগুলি খেয়ে ফেলতেন কেশা।
শৌচালয়ের কাজে ব্যবহৃত এই কাগজ খাওয়ার বিরুপ প্রভাব পড়ে শরীরেও। পেটে অসম্ভব ব্যথা হয়। কখনও অতিরিক্ত কাগজ খেয়ে ফেললে মলত্যাগ করতেও সমস্যা হয়। তা সত্ত্বেও এক দিন এই কাগজ না খেয়ে থাকতে পারেন না তিনি। কেউ কাগজ কেড়ে নিলে কেশা অত্যন্ত বিরক্ত হতেন। কয়েক বছর পরে এই সমস্যাটি নিয়ে এক জন মনোরোগ চিকিৎসকের কাছে যান কেশা। তার পরেই জানতে পারেন, তিনি বিপদসীমার কাছাকাছি দাঁড়িয়ে আছেন।
রাসায়নিক নানা উপাদান দিয়ে তৈরি এই কাগজ শরীরের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর। অন্ত্রে সংক্রমণ হতে পারে। সেখান থেকে প্রাণসংশয়েরও ঝুঁকি রয়েছে। কিন্তু এত দিনের অভ্যাস বন্ধ করা সম্ভব নয়। তাই চিকিৎসকরা কেশাকে শুকনো কাগজ খাওয়ার পরিবর্তে ভেজা টিস্যু খাওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন। কারণ ভেজা যে কোনও কিছু সহজপাচ্য এবং শরীর আর্দ্র রাখতে সাহায্য করে। তাতে বিপদের ঝুঁকি কিছুটা হলেও কম।