লুচি ভাজার তেলেই লুকিয়ে আছে বিপদ। ছবি: সংগৃহীত।
রবিবার সকালে লুচি খাওয়ার অলিখিত একটা নিয়ম আছে বহু বাড়িতে। এ দিকে, স্বাস্থ্যের চিন্তা করে ঘি ছেড়ে সাদা তেল ব্যবহার করা হয়। তাই অনেক বাড়িতেই এখন ছুটির দিনের লুচি ভাজা হয় সয়াবিন তেলে। অথচ সাম্প্রতিক গবেষণা বলছে, রান্নায় অতিরিক্ত সয়াবিন তেল ব্যবহার করলে তা রক্তে শর্করার মাত্রা এবং শরীরে মেদের পরিমাণ বাড়িয়ে তোলে। শুধু তা-ই নয়, এই ধরনের উদ্ভিজ্জ তেল অ্যালঝাইমার্স, উদ্বেগ এবং অবসাদেরও কারণ হয়ে উঠতে পারে। গবেষকরা বলছেন, অন্ত্রের স্বাস্থ্য খারাপ হওয়ার নেপথ্যেও এ ধরনের ‘রিফাইন্ড অয়েল’-এর প্রভাব রয়েছে।
গবেষণার জন্য ২৪ সপ্তাহ ধরে বেশ কয়েকটি ইঁদুরকে সয়াবিন তেল দেওয়া খাবার খেতে দিয়েছিলেন ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল গবেষক। সমীক্ষা শেষে দেখা গিয়েছে, সেই ইঁদুরগুলির অন্ত্রে থাকা ভাল ব্যাক্টেরিয়াগুলি অস্বাভাবিক হারে কমতে শুরু করেছে। পাশাপাশি, বাড়তে শুরু করেছে খারাপ ব্যাক্টেরিয়ার পরিমাণ। যা থেকে পরবর্তী কালে কোলাইটিসে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা বেড়ে যেতে পারে। এই সমীক্ষার সঙ্গে যুক্ত ‘মাইক্রোবায়োলজি এবং প্লান্ট প্যাথোলজি’ বিভাগের সহকারী গবেষক পুনমজোত দেওল বলেন, “অতিরিক্ত প্রাণিজ ফ্যাট খেলেই যে স্বাস্থ্যের অবনতি হবে, এমন প্রাচীন ধ্যানধারণা ভেঙে দেওয়াই আমাদের গবেষণার মূল উদ্দেশ্য।”
সয়াবিন তেলে থাকা ‘লিনোলিক অ্যাসিড’-ই যত রোগের মূলে। পুনমজোত বলেন, “শারীরবৃত্তীয় সব কাজকর্ম পরিচালনা করার জন্য প্রতি দিন মানবদেহের মাত্র ১ থেকে ২ শতাংশ লিনোলেইক অ্যাসিড প্রয়োজন হয়। কিন্তু আমেরিকায় এই তেলের ব্যবহার এতই বেশি যে, বিভিন্ন খাবারের মাধ্যমে ৮ থেকে ১০ শতাংশ অ্যাসিড প্রতি দিন শরীরে প্রবেশ করে। যা থেকে পরবর্তী কালে অন্ত্রের নানা রকম সমস্যা দেখা দেয়।”
পুনমজোত এবং তার সহকর্মীরা বিভিন্ন সমীক্ষা থেকে দেখেছেন, অতিরিক্ত সয়াবিন তেলের ব্যবহার অন্ত্রে ‘ইকোলাই’ ব্যাক্টেরিয়াটির পরিমাণও বাড়িয়ে তোলে। যা থেকে অন্ত্রে ‘ইনফ্ল্যামেটরি বাওয়েল ডিজ়িজ়’ হওয়াও অস্বাভাবিক নয়।