ইয়ার বাডসের তুলো কানে ঢুকে বিপত্তি হয় প্রায়ই। প্রতীকী ছবি।
কখনও কানের ময়লা পরিষ্কার করতে কখনও আবার কানে কোনও অস্বস্তি না হলেও শুধু স্বভাবের দোষে প্রায়ই কটন বাড ব্যবহার করে কানে সুড়সুড়ি দেওয়ার অভ্যাস অনেকেরই আছে। মানুষের চাহিদার কথা মাথায় রেখে বিভিন্ন সংস্থা এমন বাডস তৈরিও করে। কিন্তু এই আরামের লোভই বিপদ ডেকে আনে শরীরে।
চিকিৎসকদের মতে, পয়সা খরচ করে ক্ষণিকের আরামের জন্য যে বাডস কিনে আনছেন, তা আসলে কানের পর্দার ক্ষতির অন্যতম কারণ। চিকিৎসকরাও বারে বারে এই অভ্যাস ছাড়ার উপর জোর দিতে বলেন। তবুও সচেতন নন সাধারণ মানুষ। ইয়ার বা়ডসের তুলো কানে ঢুকে বিপত্তি হয় প্রায়ই। তা ছাড়া এই খোঁচাখুঁচিতে অজান্তে কানের ভিতরের যে ক্ষতি হয়, তার মূল্যও কম নয়।
বাডের তুলো অসাবধানতায় কানে ঢুকে গিয়ে বড় বিপত্তিও ডেকে আনতে পারে। প্রতীকী ছবি।
কটন বাড ব্যবহার নিয়ে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সমীক্ষা অনুযায়ী, প্রতি বছর বিশ্বে এতে মারা যান প্রায় ৭ হাজার মানুষ। বিপুল জনসংখ্যার তুলনায় এ অঙ্ক নগণ্য হলেও, চিকিৎসকরা ভয় পাচ্ছেন অন্য আর এক হিসেবে। সমীক্ষায় বলা হচ্ছে, ভারতের প্রায় ৩৬ শতাংশ মানুষ এই ক্ষতির বিষয়ে জানেন। তার মধ্যে প্রায় ৩০ শতাংশ জেনেশুনেই ব্যবহার করছেন কান খোচানোর বাড। বাডের তুলো অসাবধানতায় কানে ঢুকে গিয়ে বড় বিপত্তিও ডেকে আনতে পারে। অনেক সময়ই অস্ত্রোপচারের সাহায্য নিতে হয় এমন বিপদে। শুধু তা-ই নয়, কটন বাডসের খোঁচানোয় প্রতি দিনই কানের অডিটরি লোবকে উত্তেজিত করে তার অভ্যন্তরীণ ক্ষতি করছি আমরা। কানের তরুণাস্থিও পড়ছে বিপদে। এরা নষ্ট হয়ে গিয়ে দুর্বল করে দিচ্ছে শ্রবণশক্তি।
কানের ভিতর যেটুকু ময়লা থাকে, তা আদতে কানের পর্দাকে সুরক্ষিত রাখতে সাহায্য করে। বিকট আওয়াজ, কানে বায়ু ঢোকা— এ সব থেকে কানের পর্দাকে রক্ষা করে এই ময়লাগুলো। কানের ভিতরের আঠালো পদার্থ আমাদের কানের জন্য ভাল। তা কানের পর্দাতে বাইরের সংক্রমণ ও ধুলোবালি থেকেও রক্ষা করে। ময়লা বেশি জমে যাওয়ার ধারণা ভুল। যেটুকু ময়লা অতিরিক্ত, কান তা হাঁচি-কাশি-স্নান-ঘুম ইত্যাদি নানা জৈবিক কাজের হাত ধরেই বেরিয়ে যায়। আলাদা করে খুঁচিয়ে বের না করলেও চলে।