নাক ডাকার সমস্যাকে গুরুত্ব না দিয়ে মৃত্যু ঝুঁকি বাড়ছে না তো? ছবি: শাটারস্টক।
ঘুমের ঘোরে অনেকেই সশব্দে নাক ডাকেন। সঙ্গীর নাক ডাকার গর্জনে অনেকরই ঘুমের বারোটা বাজে। কেউ ব্যাপারটা স্বীকার করে নেন, কেউ আবার বেমালুম অস্বীকার করে যান গোটা বিষয়টি! চিকিৎসকদের মতে, শরীরচর্চার প্রতি অনীহা, জীবনযাপনে অনিয়ম ও অস্বাস্থ্যকর খাওয়াদাওয়ার প্রবণতা ঘুমের ঘোরে মৃত্যুর ঝুঁকি বাড়ছে। শ্বাস-প্রশ্বাসের অসুবিধা ছাড়াও নাক ডাকার অন্য একটি কারণ চিহ্নিত করা হয়েছে। তা হল ‘স্লিপ অ্যাপনিয়া’। ৫০ বছর বয়সের আগে কারও সমস্যা নাক ডাকার সমস্যা শুরু হলে বিষয়টিকে হালকা ভাবে নিতে বারণ করছেন চিকিৎসকেরা। অনেকেই মনে করেন, নাক ডাকা খুবই স্বাভাবিক একটা বিষয়, তবে এই উপসর্গকে দিনের পর দিন অবহেলা করলে কিন্তু মৃত্যুর ঝুঁকি বাড়ছে অজান্তেই।
স্টানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের সাম্প্রতিক এক সমীক্ষ অনুসারে, ৫০ বছরের কম বয়সিদের মধ্যে রাতে নাক ডাকার অভ্যাস তাঁদের স্বাস্থ্যের জন্য ঝুঁকি তৈরি করে। সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে ৫০ বছরের নীচে যাঁরা রাতে নাক ডাকেন তাঁদের স্ট্রোক হওয়ার এবং ভবিষ্যতে হৃদ্রোগ হওয়ার সম্ভাবনা অনেক বেশি থাকে।
আপনিও কি নাক ডাকেন? কী ভাবে বুঝবেন, আপনি স্লিপ অ্যাপনিয়ায় আক্রান্ত?
১) তীব্র স্বরে নাক ডাকা এই সমস্যার প্রধান উপসর্গ। হালকা নয়, এই রোগে আক্রান্ত হলে নাক ডাকার আওয়াজ অনেকটাই প্রবল হয়।
২) স্লিপ অ্যাপনিয়ায় আক্রান্ত হলে ঘুম থেকে ওঠার পর গলা খুব বেশি শুকিয়ে আসে। এই রোগে আক্রান্ত হলে শ্বাস নিতে অসুবিধা হয়। তাই ঘুমের ঘোরে মুখ দিয়ে শ্বাস নিতে হয়। ফলে গলা শুকিয়ে আসে। নিশ্বাসে দুর্গন্ধও হয়।
৩) সারা ক্ষণ ক্লান্তি ভাব, ঝিমুনি, খিটখিটে মেজাজও স্লিপ অ্যাপনিয়ার লক্ষণ। রাতে ঘন ঘন দুঃস্বপ্ন দেখাও কিন্তু স্লিপ অ্যাপনিয়ার উপসর্গ হতে পারে।
সঙ্গীর নাক ডাকার গর্জনে অনেকরই ঘুমের বারোটা বাজে। ছবি: শাটারস্টক।
৪) ঘুম থেকে উঠেই তীব্র মাথা যন্ত্রণা, মাথা ঘোরানোও স্লিপ অ্যাপনিয়ার উপসর্গ হতে পারে। এই রোগে আক্রান্ত হলে ঘুমোনোর সময়ে শরীরে অক্সিজেনের প্রবাহ ঠিক মতো হয় না। তাই মাথা যন্ত্রণা হওয়া স্বাভাবিক।
৫) স্লিপ অ্যাপনিয়ায় ভুগলে ঘুম একেবারেই ঠিকঠাক হয় না। ঘুমের ঘাটতির কারণে মেজাজ বিগড়ে যাওয়া, সঙ্গমে অনীহার মতো সমস্যাও দেখা যায়।
সাধারণ মানুষের ক্ষেত্রে ঘুমিয়ে পড়লে ঘাড় ও গলার পেশি শিথিল থাকে। কিন্তু যাঁরা স্লিপিং ডিজ়অর্ডারে ভোগেন, তাঁদের ক্ষেত্রে ঘুমিয়ে পড়লে শ্বাসক্রিয়া বাধা পায়। এর ফলে শরীরের কোষগুলিতে অক্সিজেন সরবরাহ কমে যায়। স্লিপ অ্যাপনিয়ার কারণে শ্বাস-প্রশ্বাস প্রক্রিয়ার ব্যাঘাত ঘটে ঘুমের মাঝে মৃত্যুর আশঙ্কাও বেড়ে যায়।