প্রতীকী ছবি।
গত বছর সিদ্ধার্থ শুক্লর হঠাৎ মৃত্যুর পর হতবাক হয়ে যান অনেকে। মাত্র ৪০। তাঁর আবার হৃদ্রোগ!
কিন্তু পরিসংখ্যান বলছে, শুধু সিদ্ধার্থ নন, এমন ঘটনা অনেক রয়েছে। সাম্প্রতিক এক গবেষণায় দেখা গিয়েছে, যাপনভঙ্গি না বদলানো গেলে ২০৩০ সালের মধ্যে তুঙ্গে উঠবে কমবয়সিদের মধ্যে হৃদ্রোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর সংখ্যা। বিশ্ব জুড়েই দেখা যাবে এই সমস্যা। তবে বিশ্বের প্রতি চারটি মৃত্যুর মধ্যে অন্তত একটি হবে ভারতে। ফলে দেশের পরিস্থিতি নিয়ে আশঙ্কা দেখা গিয়েছে অনেকের মধ্যেই। এই বিষয়টি নিয়েই গবেষণা চালাচ্ছে বেঙ্গালুরুর ‘জয়দেব ইনস্টিটিউট অব কার্ডিয়োভাস্কুলার সায়েন্সেস অ্যান্ড রিসার্চ’। গবেষণা চলছে দেশের আরও কিছু হাসপাতালে।
প্রতীকী ছবি।
কিন্তু কমবয়সিদের মধ্যে হঠাৎ এত বাড়ছে কেন হৃদ্রোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু?
করোনার পর থেকে হৃদ্রোগে আক্রান্ত হওয়ার সমস্যা অনেকটা বেড়ে গিয়েছে বলেই দেখা যাচ্ছে। আগে হার্ট অ্যাটাকের সমস্যা অনেক বেশি দেখা যেত ৫০-এর পর। কিন্তু অতিমারির প্রকোপ এই সমস্যা অনেকটা বাড়িয়ে দিয়েছে। শহরের এক হৃদ্রোগ বিশেষজ্ঞ শুভানন রায় জানাচ্ছেন, করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ের পর তাঁর কাছে হৃদ্ন্ত্রের সমস্যা নিয়ে আসা ৫০ শতাংশ রোগীর বয়স ছিল ৪০-এর নীচে। অধিকাংশেই ৩০ থেকে ৩৪-এর মধ্যে। তাঁর বক্তব্য, ‘‘হার্টের সমস্যা যে একটি বয়সের পরই আসে, সেই ধারণা একেবারেই বদলে ফেলতে হবে। অতিমারির পর পরিস্থিতি বদলে গিয়েছে।’’
চিকিৎসক খেয়াল করেছেন, কমবয়সি যাঁরা হৃদ্রোগে বেশি আক্রান্ত হচ্ছেন, তাঁদের অধিকাংশের ৩ থেকে ৬ মাস আগে করোনা হয়েছিল। ৫০ পার করার পর অনেকেই সাধারণত হার্টের বিষয়ে কিছুটা সচেতন থাকেন। নানা ধরনের ওষুধও চলে অনেকের। কিন্তু ৩০-এ বিশেষ কেউ এ নিয়ে সতর্ক হন না। হার্ট অ্যাটাক সামাল দেওয়ার মতো বিশেষ কোনও ওষুধ চলে না তাঁদের। হঠাৎ বুকে ব্যথা হলেও প্রথমেই মনে করেন না যে হৃদ্রোগে আক্রান্ত হতে পারেন তিনি। চিকিৎসক বলেন, ‘‘এ বার থেকে অনেক বেশি সচেতন থাকতে হবে ৩০-এর গোষ্ঠীকেও।’’ কারণ, অতিমারির পর থেকে কাজের ধরন, জীবনধারা, সবই অনেক বদলে গিয়েছে। তাতেই বাড়ছে সমস্যা।
কারও কারও ক্ষেত্রে খাওয়াদাওয়ার ধরনের পরিবর্তনও বাড়িয়ে দিচ্ছে হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি। সাম্প্রতিক এক গবেষণায় দেখা গিয়েছে, কমবয়সিরা মূলত ফাস্টফুড-নির্ভর জীবন কাটাচ্ছেন। তা থেকে বাড়ছে সমস্যা।