আয়ুর্বেদ শাস্ত্র বলছে, নাভি ও তার আশপাশে নিয়মিত তেল মালিশ করলে, তার মাধ্যমে বিভিন্ন ধরনের পুষ্টিগুণ পৌঁছে যেতে পারে শরীরের ভিতর। ফাইল চিত্র
মাতৃগর্ভে থাকা অবস্থায় শিশুদের শরীরে পুষ্টি যায় নাভির মাধ্যমে। তবে শুধু গর্ভস্থ শিশুই নয়, প্রাপ্তবয়স্কদের ক্ষেত্রেও এটি অতি গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ। তাই অনেক সময়েই বাড়ির বড়রা নাভিতে তেল মালিশ করার পরামর্শ দেন। আয়ুর্বেদ শাস্ত্র বলছে, নাভি ও তার আশপাশে নিয়মিত তেল মালিশ করলে, তার মাধ্যমে বিভিন্ন ধরনের পুষ্টিগুণ পৌঁছে যেতে পারে শরীরের ভিতর।
নাভিতে তেল মালিশ করা শরীরের যত্ন নেওয়ার একটি অতি প্রাচীন পন্থা। পেটের এই অংশটি আসলে শরীরের নানা রক্তবাহের সঙ্গে যুক্ত। সাধারণত সর্ষের তেল কিংবা গরুর দুধের তৈরি ঘি ব্যবহার করে নাভি ও তৎসংলগ্ন স্থান মালিশ করতে বলা হয়। অনেকে নারকেল তেল, নিম তেল, টি ট্রি অয়েল ও কাঠ বাদামের তেলও ব্যবহার করেন। বিভিন্ন ধরনের এসেনশিয়াল অয়েলও বেশ জনপ্রিয় হয়েছে।
যাঁরা এই তেল মালিশ করার পরামর্শ দেন, তাঁদের মতে নাভি মালিশ করার গুণ বহুবিধ। কী লাভ হয়?
১। সর্ষের তেল দিয়ে মালিশ করলে পেটের গোলযোগ কমতে পারে। কমে পেট ফাঁপা ও কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যাও।
২। নিয়ম করে তেল মালিশ করলে কমতে পারে মানসিক চাপ। রাতের দিকে এই কাজ করতে পারলে মন ও শরীর শান্ত হয়। অ্যারোমাথেরাপিতে ল্যাভেন্ডার তেল দিয়ে নাভি মালিশের চল রয়েছে।
৩। ঋতুস্রাব চলার সময়ে এই অংশে মালিশ করলে নারীদের পেটব্যথায় আরাম মিলতে পারে।
৪। নাভিতে জমে থাকা ময়লা এই পদ্ধতিতে অনেকটাই বেরিয়ে যায়। ত্বকের ঔজ্জ্বল্য তো ফেরেই, তা ছাড়াও, ঠোঁট ও চোখের ভাল যত্ন নিতে পারে পেটের তলায় এই তেল মালিশের অভ্যাস।
সর্ষের তেল দিয়ে মালিশ করলে পেটের গোলযোগ কমতে পারে। —ফাইল চিত্র
কী ভাবে করতে হবে তেল মালিশ?
মিনিট খানেকের কাজ। হাতে কিছুটা তেল নিয়ে নাভির উপরে দিন। তার পরে বেশ কিছু ক্ষণ ধরে ধীরে ধীরে হাত বোলান নাভির চারধারে। কখনও ঘড়ির কাঁটার দিকে, কখনও বিপরীতে। যত ক্ষণ তেল মিশে না যাচ্ছে ত্বকের সঙ্গে, তত ক্ষণ মালিশ করুন। সম্ভব হলে নিজে চিত হয়ে শুয়ে অন্য কাউকে মালিশ করতে বলুন।
তবে মনে রাখতে হবে, বিষয়টি নিয়ে আধুনিক বিজ্ঞানে তেমন কোনও গবেষণা নেই। বিষয়টিকে মূল ধারার চিকিৎসা পদ্ধতি না ভেবে ভাল থাকার জন্য ঘরোয়া একটি উপায় ভাবাই ভাল।