মানসিক চাপ আর দৈনন্দিন যাপনের কিছু অভ্যাসের মধ্যে অনেক সময়েই নিহিত থাকে হৃদ্রোগের কারণ। ছবি: সংগৃহীত।
কিছু দিন আগেই সুস্মিতা সেনের অ্যাঞ্জিয়োপ্লাস্টির খবর পেয়ে আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন অনেকে। সু্স্মিতার ফিটনেস নিয়ে কোনও সন্দেহ নেই অধিকাংশের। তা সত্ত্বেও কী ভাবে তিনি হার্ট অ্যাটাকের শিকার হলেন, তা নিয়ে চর্চা চলছে সর্বত্র। অনেক গবেষণায় অবশ্য দাবি করা হয়েছে, পুরুষদের তুলনায় মহিলাদের হৃদ্রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি সবচেয়ে বেশি।
মানসিক চাপ আর দৈনন্দিন যাপনের কিছু অভ্যাসের মধ্যে অনেক সময়েই নিহিত থাকে হৃদ্রোগের কারণ। ‘সেন্টার অফ ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন’ অনুসারে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে প্রতি পাঁচ জন মহিলার মধ্যে এক জন হার্ট অ্যাটাকের কারণে মারা যান। গত বছর ‘দ্য ল্যানসেট’-এ প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনেও তুলে ধরা হয়েছে যে, ভারত-সহ আরও বেশ কয়েকটি দেশে মহিলাদের মধ্যে কার্ডিয়োভাসকুলার রোগ বাড়ছে।
পুরুষ আর মহিলাদের মধ্যে হৃদ্রোগের উপসর্গগুলি অধিকাংশ ক্ষেত্রেই আলাদা হয়। বিভিন্ন সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে, নারীর ক্ষেত্রে হৃদ্রোগে আক্রান্ত হওয়ার আগে বুকে ব্যথার মতো উপসর্গ দেখা যায় না। এ ক্ষেত্রে মূলত ক্লান্তি, শ্বাসকষ্ট, কাঁধ ও ঘাড়ে ব্যথার মতো উপসর্গগুলিই প্রকট হয়।
১) ৪৫ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে মহিলাদের ঋতুবন্ধ হয়। ঋতুবন্ধের পর শরীরে ইস্ট্রোজেন হরমোনের ক্ষরণ কমে যায়। এ কারণে তাঁদের হৃদ্রোগের ঝুঁকি বাড়ে।
২) অন্তঃসত্ত্বা অবস্থায় অনেক মহিলাই উচ্চ রক্তচাপের সমস্যায় ভোগেন। এ সময়ে রক্তচাপ বেড়ে গেলে রক্তনালিকাগুলি দিয়ে রক্ত ও অক্সিজেন পর্যাপ্ত মাত্রায় মস্তিষ্কে পৌঁছাতে পারে না। এ ক্ষেত্রে হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি অনেকখানি বেড়ে যায়।
৩) ধূমপানের অভ্যাস বাড়িয়ে দেয় হৃদ্রোগের আশঙ্কা। ধূমপান বন্ধ করে দিলে হৃদ্রোগের আশঙ্কা কমে শতকরা আশি ভাগ। অতিরিক্ত মদ্যপান থেকেও নিজেকে দূরে সরিয়ে রাখুন। এতেও হৃদ্রোগের আশঙ্কা বাড়ে।
৪) ডায়াবিটিস, উচ্চ রক্তচাপ, ও উচ্চ কোলেস্টেরলের সমস্যা থাকলে হৃদ্রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা অনেক বেড়ে যায়। এই সব রোগের কারণে রক্তনালিকাগুলি সঙ্কীর্ণ হয়ে পড়ে। রক্ত প্রবাহে বাধা তৈরি হয়। ফলস্বরূপ হৃদ্যন্ত্রের উপর চাপ পড়ে। কার্ডিয়োভাসকুলার রোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভবনাও বেড়ে যায়।
৫) মানসিক চাপের কারণেও মহিলাদের মধ্যে এই রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বাড়ে। পর্যাপ্ত ঘুমের অভাব হৃদ্রোগের অন্যতম বড় অনুঘটক। শরীরকে সুস্থ রাখতে দৈনিক ছয় থেকে আট ঘণ্টা ঘুম অবশ্যই প্রয়োজন। কর্মব্যস্ততা এবং অবসাদের কারণে অনেক মহিলাই অনিদ্রার সমস্যায় ভোগেন। এতেও কিন্তু ঝুঁকি বাড়ে।