Vitamin D Deficiency

ভারতে রোদের অভাব নেই, তবু ভিটামিন ডি-র ঘাটতি! ভুল কোথায় হচ্ছে?

ভিটামিন ডি কমে গেলে মানসিক থেকে শারীরিক নানা ধরনের সমস্যা দেখা দিতে পারে। দুর্বল হয়ে যেতে পারে হাড়ও। রোদ থেকে শরীর ভিটামিনটি সংগ্রহ করতে পারে। তা হলে কেন ঘাটতি হয়?

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক

শেষ আপডেট: ২৭ জানুয়ারি ২০২৫ ১৮:৩৩
Share:

ভিটামিন ডি-এর ঘাটতি? ঘাটতি পূরণ হবে কী ভাবে?

কম বয়সেই হাঁটুতে ব্যথা। পঞ্চাশ পেরোলেই কোমরে যন্ত্রণা। চিকিৎসকের কাছে গিয়ে জানলেন, শরীরে ভিটামিন ডি-এর ঘাটতি।

Advertisement

ভিটামিন ডি হাড় মজবুত রাখতে সহায়ক। এ ছাড়াও মানসিক স্বাস্থ্য ভাল রাখতে ও সার্বিক ভাবে সুস্থ থাকতে এর ভূমিকা রয়েছে। হাড় শক্তপোক্ত রাখতে অন্যতম জরুরি উপাদান হল ক্যালসিয়াম। ভিটামিন ডি শরীরকে ক্যালসিয়াম শোষণেও সাহায্য করে। কিন্তু প্রায়শই অনেককে শুনতে হয় ভিটামিন ডি-এর ঘাটতির কথা। বিষয়টি কী?

এক জন প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের শরীরে প্রতি মিলিলিটারে ২০ ন্যানোগ্রাম ভিটামিন ডি থাকা দরকার। ভিটামিনের মাত্রা তার চেয়ে কমে গেলেই শরীরে ঘাটতি তৈরি হয়। তার প্রভাব পড়ে হাড় এবং সামগ্রিক স্বাস্থ্যে।

Advertisement

রোদেই মেলে ভিটামিন ডি?

ভিটামিন ডি-এর উৎস যেমন খাবার, তেমনই এই ভিটামিন মেলে সূর্যালোক থেকেও ভিটামিন ডি-এর ৮০ শতাংশ আসে সূর্যের আলো থেকে। ভিটামিন ডি-এর আবার প্রকারভেদ রয়েছে। সূর্যালোকের সাহায্যে ভিটামিন ডি৩ মানুষের ত্বকেই তৈরি হয়। ভারতে সূর্যালোকের অভাব নেই। বিভিন্ন জায়গায় চড়া রোদও মেলে দিনভর। তা সত্ত্বেও কিন্তু ভিটামিন ডি-এর অভাব হচ্ছে, এমনই তথ্য উঠে এসেছে সাম্প্রতিক সমীক্ষায়।

অভাব কাদের হচ্ছে?

ইংল্যান্ডের ‘সায়েন্টিফিক রিপোর্ট’ নামে একটি জার্নালে প্রকাশিত ২০২৪ সালের একটি সমীক্ষা রিপোর্ট বলছে, দক্ষিণ ভারতের শহরতলি এবং গ্রামীণ এলাকায় অনেকের মধ্যেই ভিটামিন ডি-এর ঘাটতি লক্ষ্য করা গিয়েছে। তার আগে উত্তর ভারতেও সমীক্ষা চলেছে। যেখানে দেখা গিয়েছে প্রাপ্তবয়স্কদের একটি অংশে ভিটামিন ডি-এর ঘাটতির মাত্রা ৯১.২ শতাংশ। দেখা গিয়েছে, ভারতে পঞ্চাশোর্ধ্বদের ক্ষেত্রে সেই মাত্রা আরও বেশি ৯৪ শতাংশ।

কেরলের পিকে দাস ইনস্টিটিউট অফ মেডিক্যাল সায়েন্স ভিটামিন ডি নিয়ে আর একটি সমীক্ষা করে। ৩০-৩৪ বছরের জনা পঞ্চাশেক মহিলাকে এর জন্য বেছে নেওয়া হয়। তাঁদের প্রত্যেকেরই কোমর-পিঠে ব্যথার সমস্যা ছিল। পরীক্ষা করে দেখা যায়, তাঁদের ৭৪ শতাংশের শরীরে ভিটামিন ডি-এর ঘাটতি রয়েছে।

রোদের অভাব নেই, তবু ঘাটতি কেন?

ত্বক রোদ থেকে ভিটামিন ডি সংগ্রহ করে। কিন্তু অনেকেরই কাজের চাপে রোদে বেরোনোর সময় হয় না। ঘণ্টার পর ঘণ্টা বাতানুকূল যন্ত্র বসানো অফিসে কাজ করার ফলেও অনেকে রোদ লাগানোর সুযোগ পান না। বলা হয়, সকাল ৯টা থেকে দুপুর ২টো বা ৩টে পর্যন্ত ১০-৩০ মিনিট রোদ লাগানো জরুরি। তবে রোদের তাপের পাশাপাশি ভিটামিন ডি সংশ্লেষের ক্ষেত্রে ত্বকের বর্ণ, মেলানিনেরও ভূমিকা থাকে। মেলানিন সূর্যের ক্ষতিকর অতিবেগনি রশ্মি থেকে ত্বককে বাঁচাতে সাহায্য করে। ফলে ত্বকে মেলানিন বেশি থাকলে ভিটামিন ডি সংশ্লেষের সময়ও বেড়ে যায়।

শীতে অসুবিধা কোথায়?

শীতের দিনে রোদের দেখা পাওয়া যায় না অনেক জায়গায়। কোথাও সূর্যের তাপ কম থাকে। অনেক সময় ধোঁয়াশা, দূষণের কারণেও সূর্যরশ্মি ত্বকে ঠিক ভাবে পড়ে না।

আর কী ভাবে ভিটামিন ডি-এর ঘাটতি পূরণ সম্ভব?

১. খাবারের তালিকায় রাখতে হবে ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিডযুক্ত মাছ। স্যামন, পমফ্রেট বা সামুদ্রিক মাছে এই উপাদান মেলে। এ ছাড়া কাতলা, ইলিশ জাতীয় মাছও রাখতে পারেন।

২. প্রাণিজ দুধ, উদ্ভিজ দ্রব্য থেকে মেলা দুধ রাখা যাবে তালিকায়।

৩. সি-টেক, মেইটেক ইত্যাদি মাশরুমেও ভিটামিন ডি পাওয়া যায়।

৪. সাপ্লিমেন্ট হিসাবে ভিটামিন ডি খাওয়া যায়। ক্যাপসুল, ট্যাবলেটের মাধ্যমেও তা খাওয়া যায়।

পাশাপাশি, সকালের দিকে বেশ কিছু ক্ষণ রোদে হাঁটার অভ্যাসও ভিটামিন ডি-এর ঘাটতি পূরণে সাহায্য করতে পারে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement