মাঙ্কিপক্সে আক্রান্ত ব্যক্তির খোঁজ মিলল পড়শি দেশে। ছবি: শাটারস্টক।
আফ্রিকায় ক্রমশ বাড়ছে মাঙ্কিপক্সে আক্রান্তের সংখ্যা। রিপাবলিক অফ কঙ্গোয় ইতিমধ্যেই মাঙ্কি ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে প্রাণ হারিয়েছেন ৪৫০ জন। ইতিমধ্যেই ‘বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা’ বা ‘হু’-এর তরফে মাঙ্কিপক্স সংক্রমণ নিয়ে গোটা বিশ্বে জরুরি সতর্কতা ঘোষণা করা হয়েছে।
মধ্য ও পূর্ব আফ্রিকায় এই ভাইরাসের প্রকোপ মারাত্মক আকারে বেড়েছে। মাঙ্কি ভাইরাসের বেশ কিছু উপরূপ দ্রুত হারে মানুষের শরীরে সংক্রমিত হচ্ছে, আর সেই কারণেই চিন্তা বাড়ছে চিকিৎসক ও বিজ্ঞানী মহলে। ‘হু’-এর প্রধান টেড্রোস আধানম ঘেব্রেইসাস বলেন, ‘‘শুধু আফ্রিকাই নয়, তার বাইরেও এই ভাইরাসের ছড়িয়ে পড়ার সম্ভাবনা রয়েছে, আর এই বিষয়টি ভীষণই উদ্বেগজনক। এই মহামারি ছড়িয়ে পড়া রুখতে এবং লক্ষ লক্ষ জীবন বাঁচাতে বিশ্ববাসীকে একত্রিত হয়ে উদ্যোগ নিতে হবে।”
কেবল যৌন সংক্রমণেই এই রোগ ছড়ায়, এই ধারণাও ভুল। যদিও বেশির ভাগ সমকামী ও উভকামী পুরুষের মধ্যেই এই রোগে আক্রান্ত হওয়ার খবর মিলেছে। চিকিৎসকের মতে, আক্রান্ত ব্যক্তির কাছাকাছি থাকলে সংক্রমণের আশঙ্কা বেড়ে যেতে পারে। শ্বাসনালি, ক্ষতস্থান, নাক, মুখ কিংবা চোখের মাধ্যমে এই ভাইরাস প্রবেশ করতে পারে সুস্থ ব্যক্তির দেহে। আক্রান্তের ব্যবহার করা পোশাক-পরিচ্ছদ থেকেও সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়তে পারে বলে মত বিশেষজ্ঞদের।
মাঙ্কিপক্সের উপসর্গ
১। প্রথম ধাপ: প্রবল জ্বর, ক্লান্তি, শরীরে ব্যথা হবে
২। দ্বিতীয় ধাপ: ত্বকে র্যাশ দেখা যাবে।
৩। তৃতীয় ধাপ: ত্বকের র্যাশ ধীরে ধীরে লাল হয়ে ফোঁড়ার মতো আকার ধারণ করতে থাকে। হাত, পা, মুখ, পায়ের পাতা এবং শরীরের অন্যান্য অংশেও ছড়িয়ে যেতে শুরু করবে।
মাঙ্কি ভাইরাসের মূলত দু’ধরনের রূপ চিহ্নিত হয়েছে, যথা ক্লেড ১ ও ক্লেড ২। ২০২২ সালে যখন মাঙ্কি ভাইরাসের কারণে বিশ্ব জুড়ে জরুরি সতর্কতা জারি করা হয়েছিল তা মূলত এই ভাইরাসের ক্লেড ২ উপরূপের কারণে হয়। এই উপরূপটি তুলনামূলক ভাবে কম সংক্রমক। তবে এখন ক্লেড ১ উপরূপ চিন্তায় ফেলেছে চিকিৎসকদের। এই উপরূপটি অনেক বেশি দ্রুত হাতে ছড়িয়ে পড়ে মানুষের শরীরে, এটি শরীরে প্রবেশ করলে মৃত্যুর ঝুঁকিও বাড়ে। এই বছরের শুরু থেকে রিপাবলিক অফ কঙ্গোতে প্রায় ১৩৭০০ জন এই উপরূপে আক্রান্ত হয়েছেন, যার মধ্যে ৪৫০ জনের মৃত্যু হয়েছে ইতিমধ্যেই।
২০২৪ এর প্রথম মাঙ্কিপক্সে আক্রান্ত রোগীর হদিস পাওয়া গিয়েছে পাকিস্তানে। ৩৪ বছর বয়সি সেই পাকিস্তানি যুবক সৌদি আরব থেকে দেশে ফিরছিলেন। পাকিস্তানে বিমানবন্দরে স্ক্রিনিং টেস্টের মাধ্যমে ব্যক্তির শরীরে মাঙ্কি ভাইরাসের খোঁজ মিলেছে।