বাজারে যে সকল কৃত্রিম চিনি পাওয়া যায়, তাতে অ্যাসপারটেম ও সুক্রালোজ় নামক যৌগ থাকে। ছবি: শাটারস্টক
তবে খাদ্যরসিক বাঙালির চিনি ছাড়া চলে না। কোনও অনুষ্ঠান হলেই বাড়িতে মিষ্টির কোনও পদ না হলে ঠিক জমে না! সকাল-বিকেল চা বা কফি চিনি ছাড়া মুখে রোচে না। বিশেষ বিশেষ তরকারি এবং ডালে খানিক চিনি না পড়লে রান্নার খুঁত ধরেন পরিবারের সকলেই। ফলে চিনির বিকল্প খুঁজে বেড়ান সকলেই। ‘সুগার ফ্রি’ বা ‘স্টিভিয়া’র মতো কিছু কৃত্রিম বিকল্প বাজারে এখন সহজলভ্য। অনেকের হেঁশেলেই ঠাঁই পেয়েছে কৃত্রিম চিনির কৌটো। অনেক ডায়াবেটিক রোগীর রোজের ডায়েটেও স্থান পেয়েছে এই কৃত্রিম চিনির গুঁড়ো কিংবা ট্যাবলেট। তবে রোজের ডায়েটে এই কৃত্রিম চিনি খাওয়া কি আদৌ স্বাস্থ্যকর?
সম্প্রতি বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (হু) জানিয়েছে যে, কৃত্রিম চিনি ব্যবহারের ফলে শরীরের চর্বি মোটেও কমে না, উল্টে এই জাতীয় চিনির ব্যবহার টাইপ-২ ডায়াবিটিস, কার্ডিয়োভাসকুলার রোগ এবং প্রাপ্তবয়স্কদের মধ্যে মৃত্যুহার বাড়িয়ে দিচ্ছে। হু-এর তরফে জানানো হয়েছে কৃত্রিম চিনির কোনও পুষ্টিগুণ নেই। দীর্ঘজীবী হতে চাইলে সাধারণ চিনির মতো এই চিনিগুলির ব্যবহারও বন্ধ করে দিতে হবে।
পুষ্টিবিদদের মতে, বাজারে যে সকল কৃত্রিম চিনি পাওয়া যায়, তাতে অ্যাসপারটেম ও সুক্রালোজ় নামক যৌগ থাকে। এই যৌগগুলির কারণেই কৃত্রিম চিনিতে মিষ্টি ভাব আসে। এগুলি কিন্তু শরীরের পক্ষে মোটেই ভাল নয়। সুক্রালোজ়ের তুলনায় অ্যাসপারটেম আরও বেশি ক্ষতিকর। এই দুই যৌগ শরীরের বিভিন্ন অঙ্গপ্রত্যঙ্গ যেমন হৃদ্যন্ত্র, মস্তিষ্ক ও স্নায়ুর উপর ক্ষতিকর প্রভাব ফেলে। শরীরে নেগেটিভ ইলেকট্রন তৈরি হয়, যা স্বাস্থ্যের জন্য ভাল নয়। যে কোনও কৃত্রিম জিনিসই তো বেশি খাওয়া শরীরের পক্ষে ভাল নয়, কৃত্রিম চিনিও তাই পরিমিত মাত্রায় খাওয়াই শ্রেয়। কৃত্রিম চিনি খেলে রক্তে শর্করার মাত্রা বাড়বে না, ওজন বাড়বে না— এই ভেবে সকালে চা থেকে শুরু করে, সারা দিনের রান্নাবান্না এমনকি, ক্ষীর কিংবা পায়েসও মিষ্টি ভাব আনতে কেউ কেউ এই প্রকার চিনির ব্যবহার করেন। এতে কিন্তু আপনার শরীরের মারাত্মক ক্ষতি হতে পারে। তাই মাত্রাতিরিক্ত কৃত্রিম চিনি খাওয়া উচিত নয়।