কাদের ভিটামিন ডি-এর সাপ্লিমেন্ট খাওয়া উচিত? ছবি: শাটারস্টক
এ দেশ গ্রীষ্মপ্রধান, সূর্যের আলোর কোনও অভাব নেই। যা কিনা ভিটামিন ডি-র অন্যতম উৎস। তবু এই ভিটামিন ডি-র অভাবে ভোগেন প্রায় সত্তর শতাংশ ভারতীয়। সকালে উঠেই গা ম্যাজম্যাজ, ক্লান্তি থেকে শুরু করে হাতে পায়ের পেশিতে ব্যথা, গাঁটে গাঁটে যন্ত্রণা, হঠাৎ হঠাৎ মেজাজ বিগড়ে যাওয়া। কৈশোরের কোঠা পেরোতে না পেরোতেই ভিড় করে আসছে এমন রকমারি সমস্যা। এই সব সমস্যার কারণ কিন্তু একটাই ভিটামিন ডি-এর ঘাটতি। এই ভিটামিন শরীরে নানা কাজে লাগে। ফলে এটির অভাব হলে কেবল মাত্র হাড় ক্ষয়ে যাওয়া বা ব্যথা-বেদনা নয়, তৈরি হতে পারে আরও বড় সমস্যা। পেশি নাড়াচাড়া করতেও প্রয়োজন হয় এই ভিটামিনের। এমনকি, এর সাহায্য ছাড়া মস্তিষ্ক থেকে সারা শরীরে বার্তা পর্যন্ত পাঠাতে পারে না স্নায়ু। রোগ প্রতিরোধের ক্ষেত্রেও এই ভিটামিনটি ছাড়া ব্যাক্টেরিয়া-ভাইরাসদের প্রতিহত করা দুঃসাধ্য।
জানেন কি, একমাত্র এই ভিটামিনটিই মানুষের শরীরে নিজে নিজে তৈরি হতে সক্ষম! ছোট থেকে জেনেছি, ক্যালশিয়ামের গুণেই মজবুত হয় দাঁত ও হাড়। কিন্তু বিশেষজ্ঞরা বলছেন ভিটামিন ‘ডি’ ঠিক মতো তৈরি না হলে ক্যালশিয়াম কাজ করতে পারে না। ফলে থাবা বসায় ছোটদের রিকেট থেকে শুরু করে বড়দের অস্টিয়োম্যালশিয়া, অস্টিয়োপোরেসিস প্রভৃতি নানাবিধ রোগ। অনেক সময় কোলন ক্যানসার, স্তন বা প্রস্টেট ক্যানসারের মতো মারণ রোগ প্রতিরোধেও কাজ করে এই প্রয়োজনীয় ভিটামিনটি।
একমাত্র ভিটামিনটি ডি মানুষের শরীরে নিজে নিজে তৈরি হতে সক্ষম! ছবি: সংগৃহীত।
ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ হেলথ অনুসারে, প্রাপ্তবয়স্কদের শরীরে ২০ মাইক্রোগ্রাম ভিটামিন ডি-এর প্রয়োজন। তবে ব্যক্তিভেদে এই চাহিদা কমবেশি হতে পারে, পুরোটাই নির্ভর করে মানুষের জীবনধারা ও খাদ্যাভ্যাসের উপর। দুধ, পনির, মাশরুম, মাখন, তৈলাক্ত মাছ, চিজ়, ডিমে ভাল মাত্রায় ভিটামিন ডি থাকে। তা ছাড়া বাজারে কিছু ভিটামিন ‘ডি’ সাপ্লিমেন্টও পাওয়া যায়। তবে চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ না করে সেগুলি নৈব নৈব চ। মূলত খুব ঠান্ডার জায়গায় যাঁরা থাকেন, যাঁরা নিরামিষাশী কিংবা যাঁরা বয়স্ক, তাঁদেরই চিকিৎসকরা মূলত ভিটামিন ডি সাপ্লিমেন্ট দেন। এ ছাড়া শরীরে ভিটামিন ডি-এর ঘাটতির উপসর্গগুলি প্রকট হয়ে উঠলেও চিকিৎসকরা ভিটামিন ডি সাপ্লিমেন্ট খেতে বলেন। এই সাপ্লিমেন্ট খাওয়ার নির্দিষ্ট কোনও সময় নেই, দিনের যে কোনও সময় এই ওষুধ খাওয়া যায়।