ছবি: শাটারস্টক।
উফ, কী শীত!
ঠা-ঠা রোদে দাঁড়িয়েও হাড়ে হাড়ে ঠোকাঠুকি লেগে যাওয়ার উপক্রম! শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত ঘরে থাকলে তো কথাই নেই। স্বেচ্ছায় থাকেন না, কিন্তু কাজেকর্মে সারা ক্ষণ তো এসি ঘরেই থাকতে হয়। সুযোগ পেলেই এ দিক-ও দিক তাকিয়ে এসি বন্ধ করে দেন। তবে শুধু শীতকাল বলে নয়, অল্পেই শীতকাতর হয়ে পড়েন, এমন মানুষের সংখ্যা কম নয়।
চিকিৎসকেরা বলছেন, মানবদেহের স্বাভাবিক তাপমাত্রা হল ৯৮.৬ ডিগ্রি ফারেনহাইট। শরীর যে স্বয়ংক্রিয় পদ্ধতিতে তা নিয়ন্ত্রণ করে, চিকিৎসা বিজ্ঞানের পরিভাষায় তাকে ‘থার্মোরেগুলেশন’ বলা হয়। দেহের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণে মস্তিষ্ক, ধমনী এবং স্বেদগ্রন্থিগুলি বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। আর এই বিরাট কর্মযজ্ঞের একটি চাবিকাঠি থাকে শরীরে উপস্থিত বেশ কিছু ভিটামিন এবং খনিজের কাছে। সেই সব খনিজের মাত্রায় হেরফের হলেও কিন্তু তাপমাত্রার বিষয়ে স্পর্শকাতরতা বৃদ্ধি পায়।
কোন কোন খনিজের অভাবে এমনটা হয়ে থাকে?
১) আয়রন:
শরীরে স্বাভাবিক ভাবে হিমোগ্লোবিন তৈরি করতে সাহায্য করে আয়রন। রক্তের মাধ্যমেই সারা দেহে অক্সিজেন পৌঁছয়। ‘ল্যানসেট হেমাটোলজির’ একটি গবেষণা বলছে, শরীরে স্বাভাবিক মাত্রায় আয়রন না থাকলে, অক্সিজেনের অভাব হলে শৈত্যবোধ বৃদ্ধি পায়।
২) ভিটামিন বি১২:
মস্তিষ্কের কাজকর্ম স্বাভাবিক রাখতে এবং লোহিত রক্তকণিকার জোগান স্বাভাবিক রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে ভিটামিন বি১২। শরীরে এই ভিটামিনের অভাব হলে লোহিত রক্তকণিকা সহজে তৈরি হয় না। অক্সিজেন সরবরাহ বিঘ্নিত হলে শীত-শীত ভাব বেড়ে যেতে পারে। ভিটামিন বি১২-এর সঙ্গে দেহের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণের যে যোগ রয়েছে, সে বিষয়ে আলোকপাত করেছে ‘আমেরিকান জার্নাল অফ ক্লিনিক্যাল নিউট্রিশন’-এ প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন।
৩) ফোলেট:
লোহিত রক্তকণিকা উৎপাদনে সাহায্য করে ভিটামিন বি ১২। তবে এই ভিটামিনটি একক ভাবে কোনও কাজ করতে পারে না। তার জন্য একে নির্ভর করতে হয় ফোলেট নামক একটি উপাদানের উপর। ‘দ্য ব্রিটিশ মেডিক্যাল জার্নাল’-এ প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ফোলেটের অভাবে অ্যানিমিয়ার সমস্যা দেখা দেয়। সেই কারণেও অনেক সময়ে ঠান্ডার অনুভূতি হতে পারে।