operation

Gallbladder operation diet: সদ্য গলব্লাডারে অস্ত্রোপচার হয়েছে? খাওয়াদাওয়া কেমন করবেন, জানালেন পুষ্টিবিদ

গলব্লাডার বাদ গেলেই জীবন শেষ নয়। কিছু নিয়ম মেনে চললে অনায়াসে কাটাতে পারেন স্বাভাবিক জীবন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৪ মে ২০২২ ১৩:২৭
Share:

গলব্লাডার বাদ যাওয়ার পর কেমন খাবার খাওয়া নিরাপদ? ছবি: সংগৃহীত

লিভারের নীচে এক ছোট্ট অঙ্গ গলব্লাডার। ফ্যাট হজম করার জন্য লিভারে বাইল তৈরি হয়, যা জমা থাকে গলব্লাডারে। কিন্তু কোনও কারণে যদি গলব্লাডারে অস্ত্রোপচার হয় বা গল ব্লাডার কেটে বাদ দিতে হয়, তা হলে খাদ্যাভ্যাসে কিছু বদল আনতেই হবে। সব রকম খাবার খাওয়া গেলেও কিছু নিয়ম মেনে চলতে হবে। গ্যাস, পেট ফোলা বা ডায়রিয়ার মতো সমস্যা বেড়ে যায় এই ধরনের অস্ত্রোপচারের পর।

Advertisement

গলব্লাডার কেটে বাদ যাওয়ায় তাই অনেকেই ভেঙে পড়েন। তবে গলব্লাডার ছাড়াও কিন্তু লক্ষ লক্ষ মানুষ দিব্যি দিন কাটাচ্ছেন। কারণ এই ধরনের অস্ত্রোপচার অনেক বেড়ে গিয়েছে। তবে কিছু নিয়ম মেনে চললে, স্বাভাবিক জীবনযাপন করা এমন কিছু কঠিন কাজ নয় বলে জানাচ্ছেন পুষ্টিবিদ রিঙ্কি বিশ্বাস। অস্ত্রোপচারের পর দু’-তিন দিন রোগীকে সেমি-সলিড খাবারই দিতে হবে বলে জানালেন তিনি।

Advertisement

রিঙ্কির কথায়, ‘‘একদম প্রথম দিকে স্যুপ-জাতীয় খাবারই বেশি দিতে হবে। তার পর ওট্‌সের খিচুড়ি বা গলা ভাত দিতে হবে। অস্ত্রোপচারের পর হজম ক্ষমতা কমে যায়। গ্যাস-অ্যাসিডিটির সমস্যা অনেকটাই বেড়ে যায়। তাই সলিড ফুড খাওয়া শুরু করতে হবে ধীরে ধীরে। প্রথম থেকেই সলিড দিলে শরীর হজম করতে পারবে না। পাতলা আদা-জিরে বাটা দিয়ে মাছের ঝোল, চিকেন সেদ্ধ করা স্যুপ, সামান্য ফ্যাট ফ্রি কাস্টার্ডের মতো কিছু খাবার খেতে পারেন শরীর বুঝে।’’

গলব্লাডার কেটে বাদ যাওয়ায় তাই অনেকেই ভেঙে পড়েন। তবে গল ব্লাডার ছাড়াও কিন্তু লক্ষ লক্ষ মানুষ দিব্যি দিন কাটাচ্ছেন।

গলব্লাডার কেটে বাদ যাওয়ার পর দুগ্ধজাত খাবার যদি ফুল ফ্যাট হয়, তা হলে হজম করতে সমস্য হবে। গ্যাসের প্রবণতা বেড়ে যায়। তাই মাখন তোলা দুধ দিয়ে দই বা ছানা খাওয়াই ভাল বলে জানালেন রিঙ্কি। বারবার দুধ দিয়ে চা বা কফি খাওয়ার অভ্যাসও তাই ছাড়তে হবে। লিকার চা খাওয়া যেতে পারে।

এই ধরনের অস্ত্রোপচারের পর কিছু জিনিস মাথায় রাখতে হবে রোজের খাওয়াদাওয়ায়ও। জেনে নিন সেগুলি কী—

১। ভাত-রুটি ধীরে ধীরে খাওয়া শুরু করতে হবে। মাঝেমাঝে বিকল্প হিসাবে ওট্‌স বা ডালিয়ার খিচুড়ি খেতে পারেন সব্জি দিয়ে।

২। প্রথম দিকে শাক-সব্জি না খাওয়াই ভাল। ফুলকপি, বাঁধাকপির মতো সব্জি যাতে গ্যাস হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে, সেগুলি প্রথম দিকে এড়িয়ে যাওয়াই ভাল। শাক খেলেও পেট ফোলার সমস্যা হয় অনেকের। তাই নিজের হজম ক্ষমতা কতটা, তা বুঝে ধীরে ধীরে পরিমাণ বাড়াতে হবে এই ধরনের খাবারের।

৩। কেক, কুকিজ, মেয়োনিজ বা অনেকটা চিজ দেওয়া খাবার যাতে স্যাচুরেটেড ফ্যাটের পরিমাণ বেশি, তা খাওয়া চলবে না। গল ব্লাডার না থাকলে ফ্যাট হজম করতে অসুবিধা হয়। তাই এই খাবারগুলি থেকে দূরে থাকাই ভাল।

৪। তবে মনে রাখতে হবে, শরীরে গুড ফ্যাট যাওয়া অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। যাবতীয় হরমোন ক্ষরণের প্রক্রিয়ায় গুড ফ্যাট অত্যাবশ্যক। তাই কিছু বাদাম বা অ্যাভোক্যাডো খাওয়া যেতে পারে।

কেক, কুকিজ, মেয়োনিজ বা অনেকটা চিজ দেওয়া খাবার যাতে স্যাচুরেটেড ফ্যাটের পরিমাণ বেশি, তা খাওয়া চলবে না।

৫। খুব বেশি টক খাবার খাওয়া যাবে না। আবার অতিরিক্ত মিষ্টিও খাওয়া ঠিক নয়।

৬। খুব বেশি তেল মশলা দেওয়া খাবার বা বাইরের ফাস্ট ফু়ড একদমই খাওয়া ছাড়তে হবে।

৭। গলব্লাডার বাদ যাওয়ার পর ডায়রিয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায়। তাই কাঁচকলার মতো কিছু খাবার রাখতে হবে।

৮। খুব বেশি খাবার একসঙ্গে খাবেন না। যতটা প্রয়োজন ততটাই খান। আবার কোনও প্রচলিত ডায়েট মানতে গিয়ে যদি মনে করেন প্রত্যেক দু’ঘণ্টা অন্তর খাবেন, তাতেও ভুল করবেন। তার চেয়ে আপনি যে ধরনের খাদ্যাভ্যাসে অভ্যস্ত, সে ভাবেই তিনবেলা অল্প অল্প করে খাওয়া সবচেয়ে উপকারী।

৯। অনেকটা জল নিয়মিত খেতে হবে। গলব্লাডার না থাকায় শরীরের হজম ক্ষমতায় যাতে কোনও রকম সমস্যা না হয়, তার জন্য প্রত্যেক দিন ৩ থেকে ৩.৫ লিটার জল খেতেই হবে।

১০। যতই মিষ্টি দেখলে মন কেঁদে উঠুক, যে কোনও ধরনের মিষ্টি খাবার, আইসক্রিম, কেক, প্যাস্ট্রি একটু এড়িয়ে চলাই ভাল।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement