কী কী কারণে ‘স্পটিং’ হয়? ছবি: সংগৃহীত।
ঋতুস্রাবের সময় এখনও আসেনি, অথচ শৌচাগারে গিয়ে দেখলেন অন্তর্বাসে খানিকটা রক্ত লেগে রয়েছে। তার পর সারা দিন আর রক্তপাত হল না। তবে দিন কয়েক পরে আবার একই কাণ্ড। দিনে খুব অল্প সময়ের জন্য সামান্য রক্তপাত। বাকি সময়টা আবার স্বাভাবিক। তবে এই সমস্যা আপনার একার নয়, অনেক মহিলাই এমন সমস্যায় ভোগেন। সমস্যার নাম ‘স্পটিং’। আদৌ কি ‘স্পটিং’ কোনও জটিল রোগের লক্ষণ? কী কী কারণে ‘স্পটিং’ হয়?
গর্ভনিরোধক ওষুধ: নিয়মিত গর্ভনিরোধক ওষুধ খাওয়ার অন্যতম পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হতে পারে ‘স্পটিং’। সে সব মহিলা হরমোনের ওষুধ খাওয়া শুরু করলে এই সমস্যা দেখা দিতে পারে। কিংবা হঠাৎ ওষুধ পাল্টালে বা ঠিক মতো রোজ ওষুধ না খেলেও ‘স্পটিং’ হতে পারে।
ওভিউলেশন: অনেকে মেয়েরই ডিম্বস্ফোটন সময়ে অল্প ‘স্পটিং’ হতে পারে। রক্তের রঙের চেয়ে একটু ফিকে হয় এর রং। ঋতুস্রাব শুরু হওয়ার ১১ দিন থেকে ২১ দিনের মধ্যে যে কোনও সময়ে এমন হতে পারে।
জরায়ুতে জটিলতা: ফাইব্রয়েড, পলিপ বা ক্যানসারের মতো রোগের ক্ষেত্রেও প্রথম উপসর্গ ‘স্পটিং’। পলিসিস্টিক ওভারি, এনড্রোমেট্রিয়োসিস বা অন্য কোনও টিউমার হলেও এই সমস্যা হঠাৎ দেখা দিতে পারে।
অন্তঃসত্ত্বা হলে: গর্ভধারণের প্রাথমিক পর্যায় ‘স্পটিং’ হতে পারে। ভ্রূণ যখন প্রথম জরায়ুতে প্রবেশ করে, অনেকের সেই সময়ে সামান্য ‘স্পটিং’ হয়। তবে এমনটা যে হবেই, তার কোনও মানে নেই। ‘স্পটিং’ হওয়া মানেই ধরে নেবেন না আপনি অন্তঃসত্ত্বা। অন্তঃসত্ত্বা অবস্থায় প্রথম তিন মাসে ‘স্পটিং’ হতে পারে। এমনিতে খুব বেশি চিন্তার কারণ নেই। কিন্তু ‘স্পটিং’ বেড়ে যদি অনেক রক্তপাত হয়, তা হলে অবিলম্বে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।
মানসিক চাপ: অনেক সময়ে মানসিক চাপ বাড়লে বা শরীরে হরমোনের ভারসাম্য বিঘ্নিত হলেও ‘স্পটিং’ হতে পারে।
গর্ভধারণের প্রাথমিক পর্যায় ‘স্পটিং’ হতে পারে। ছবি: সংগৃহীত।
যৌনরোগ: গনোরিয়ার মতো যৌনরোগের ক্ষেত্রেও প্রথম উপসর্গ ‘স্পটিং’। পাশাপাশি, অন্য কোনও উপসর্গ রয়েছে কি না খেয়াল করুন।
ঋতুবন্ধের সময়: ৪০ থেকে ৪৫ বছরের মহিলাদের ক্ষেত্রে ঋতুস্রাবের শেষের দিকে প্রতি মাসে ‘স্পটিং’-এর সমস্যা হতে পারে।
কখন চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া প্রয়োজন?
এমনিতে ‘স্পটিং’ নিয়ে খুব বেশি চিন্তা করার প্রয়োজন নেই। স্বাভাবিক নিয়মেই বন্ধ হয়ে যায় এই সমস্যা। কিন্তু ‘স্পটিং’ হওয়ার সময়ে অন্য কোনও উপসর্গ দেখা যাচ্ছে কি না, তা অবশ্যই খেয়াল করতে হবে। যেমন জ্বর, পেটে অস্বাভাবিক ব্যথা, জরায়ুতে তীব্র যন্ত্রণা, মাথা ঘোরা, রক্তে দুর্গন্ধ, সঙ্গমের সময়ে ব্যথার মতো উপসর্গ দেখা দিলে সঙ্গে সঙ্গে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।