জেপি নড্ডা। —ফাইল ছবি।
বিশ্ব জুড়ে ফের আতঙ্ক ছড়াচ্ছে মাঙ্কিপক্স। আফ্রিকায় ইতিমধ্যেই মৃত্যু হয়েছে ৪৫০ জনের। পড়শি দেশ পাকিস্তানেও এই রোগের আঁচ পড়তে শুরু করেছে। এই পরিস্থিতিতে শনিবার উচ্চপদস্থ স্বাস্থ্যকর্মীদের সঙ্গে আলোচনায় বসলেন কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী জেপি নড্ডা। মাঙ্কিপক্স পরিস্থিতি এবং এই মাঙ্কি ভাইরাসের সংক্রমণ রুখতে ভারত কতটা তৈরি সেই নিয়েই বৈঠকে আলোচনা হয়েছে শনিবার।
মিটিং শেষে জেপি নড্ডা জানিয়েছেন মাঙ্কিপক্স মোকাবিলা করার জন্য প্রস্তুতি শুরু করছে ভারত। স্বাস্থ্য দফতরের পক্ষ থেকে লিখিত বিবৃতি দিয়ে জানানো হয়েছে, ‘‘পরিস্থিতির গুরুত্ব বুঝে সমস্ত বন্দর, বিমানবন্দর ও গ্রাউন্ড ক্রসিংগুলিতে জীবাণুমুক্তকরণ প্রক্রিয়া পুনরায় চালু করা হয়েছে। এর পাশাপাশি বিভিন্ন পরীক্ষাকেন্দ্রগুলিতে মাঙ্কি ভাইরাসের নমুনা যাচাইয়ের প্রক্রিয়া চালু করতে হবে, রোগ নির্ধারণের জন্য সমস্ত ব্যবস্থা ঠিকঠাক পরিচালনা করা হচ্ছে কি না, সে দিকেও নজর রাখতে হবে। কোনও রোগী মাঙ্কিপক্সে আক্রান্ত হলে তাঁর নিভৃতবাস ও চিকিৎসার ব্যবস্থাও সুনিশ্চিত করতে হবে।’’
ইতিমধ্যেই ‘বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা’ বা ‘হু’-এর তরফে মাঙ্কিপক্স সংক্রমণ নিয়ে গোটা বিশ্বে জরুরি সতর্কতা ঘোষণা করা হয়েছে।
কেবল যৌন সংক্রমণেই এই রোগ ছড়ায়, এই ধারণাও ভুল। যদিও বেশির ভাগ সমকামী ও উভকামী পুরুষের মধ্যেই এই রোগে আক্রান্ত হওয়ার খবর মিলেছে। চিকিৎসকের মতে, আক্রান্ত ব্যক্তির কাছাকাছি থাকলে সংক্রমণের আশঙ্কা বেড়ে যেতে পারে। শ্বাসনালি, ক্ষতস্থান, নাক, মুখ কিংবা চোখের মাধ্যমে এই ভাইরাস প্রবেশ করতে পারে সুস্থ ব্যক্তির দেহে। আক্রান্তের ব্যবহার করা পোশাক-পরিচ্ছদ থেকেও সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়তে পারে বলে মত বিশেষজ্ঞদের।
মাঙ্কিপক্সের উপসর্গ
১। প্রথম ধাপ: প্রবল জ্বর, ক্লান্তি, শরীরে ব্যথা হবে
২। দ্বিতীয় ধাপ: ত্বকে র্যাশ দেখা যাবে।
৩। তৃতীয় ধাপ: ত্বকের র্যাশ ধীরে ধীরে লাল হয়ে ফোঁড়ার মতো আকার ধারণ করতে থাকে। হাত, পা, মুখ, পায়ের পাতা এবং শরীরের অন্যান্য অংশেও ছড়িয়ে যেতে শুরু করবে।
মাঙ্কি ভাইরাসের মূলত দু’ধরনের রূপ চিহ্নিত হয়েছে, যথা ক্লেড ১ ও ক্লেড ২। ২০২২ সালে যখন মাঙ্কি ভাইরাসের কারণে বিশ্ব জুড়ে জরুরি সতর্কতা জারি করা হয়েছিল তা মূলত এই ভাইরাসের ক্লেড ২ উপরূপের কারণে হয়। এই উপরূপটি তুলনামূলক ভাবে কম সংক্রামক। তবে এখন ক্লেড ১ উপরূপ চিন্তায় ফেলেছে চিকিৎসকদের। এই উপরূপটি অনেক বেশি দ্রুত হাতে ছড়িয়ে পড়ে মানুষের শরীরে, এটি শরীরে প্রবেশ করলে মৃত্যুর ঝুঁকিও বাড়ে। এই বছরের শুরু থেকে রিপাবলিক অফ কঙ্গোতে প্রায় ১৩৭০০ জন এই উপরূপে আক্রান্ত হয়েছেন, যার মধ্যে ৪৫০ জনের মৃত্যু হয়েছে ইতিমধ্যেই।