গরমের সময়ে শরীরে তাপমাত্রার হঠাৎ রদবদল সংক্রমণ ডেকে আনে। ছবি: সংগৃহীত
চড়ছে গরমের পারদ। ঘামে ভেজা শরীরটাকে শাওয়ারের তলায় যেন না দাঁড় করালেই নয়। স্কুল থেকে ঘেমেনেয়ে ফেরা খুদেটিও সবার আগে স্নান করতে চায় একটু ঠান্ডা হতে। কিন্তু গরমের দিনে এই অভ্যাসেই শরীরের বারোটা বাজে। ফলস্বরূপ সর্দি-কাশি, জ্বরের জেরে শয্যা নিতেই হবে। রোগ সামান্য হলেও কাহিল করে দেয় এই ‘সামার ফ্লু’।
চিকিৎসকদের মতে, গরমের সময়ে শরীরে তাপমাত্রার হঠাৎ রদবদল সংক্রমণ ডেকে আনে। প্রখর রোদ থেকে ফিরেই এসিতে ঢোকা, অথবা রোদ থেকে বাড়ি এসেই গায়ে জল ঢালা— এই অভ্যাসগুলি কিন্তু মোটেই ভাল নয়। হঠাৎ তাপমাত্রার এই ওঠানামা শরীরের পক্ষে ক্ষতিকর। এর ফলে বুকে কফ জমে যায়। অনেক ক্ষেত্রে এই অভ্যাসের কারণেই শরীরে বাসা বাঁধে বিভিন্ন ভাইরাস। কাজেই তার জেরে টানা তিন-চার দিনে ভাইরাল জ্বর তো রয়েছেই। সঙ্গে সর্দি-কাশিও অবধারিত।
এই জ্বর থেকে উপশম মিলবে কোন উপায়ে?
১) গরমের দিনে জ্বরে ভুগলে অনেক ক্ষেত্রেই নাক শ্লেষ্মা জমে নাক বন্ধ হয়ে যায়। এ ক্ষেত্রে শ্বাস নিতে অসুবিধা হয়। ঘরে তৈরি স্যালাইন জলেই উপশম পেতে পারেন। এক কাপ ঈষদুষ্ণ জলে এক চামচ সামুদ্রিক নুন মিশিয়ে নিন। এ বার একটি ড্রপারের সাহায্যে দিনে তিন বার নাকে এই মিশ্রণ দিতে থাকুন। উপশম পাবেন।
২) হলুদ যে কোনও ধরনের ভাইরাল সংক্রমণ থেকে দ্রুত সুস্থ হতে ভীষণ উপকারী। গরমের দিনে জ্বরে ভুগলে গলা ব্যথা, কাশির মতো উপসর্গ দেখা যায়। এ ক্ষেত্রে দিনে দু’ বার এক কাপ গরম দুধে এক চামচ হলুদ গুঁড়ো এবং এক চামচ মিশিয়ে খান। গলায় ব্যথা কমবে। আর দিনে তিন থেকে চার বার হলুদ-নুন মেশানো জল দিয়ে গার্গল করুন। আরাম পাবেন।
প্রতীকী ছবি
৩) আপেল সিডার ভিনিগারও ভাইরাল সংক্রমণ কমাতে দারুণ কার্যকর। শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতেও সাহায্য করে। গরমের সময় জ্বরে আক্রান্ত হলে ঈষদুষ্ণ গরম জলের সঙ্গে এক চামচ আপেল সিডার ভিনিগার ও মধু মিশিয়ে খান।
৪) গরমের দিনে ভাইরাল সমক্রমণ হলে গরম জলের ভাপ নিলে বেশ উপকার পাওয়া যায়। এ ক্ষেত্রে গরম জলের পাত্রে ইউক্যালিপটাস তেল বা মেন্থল তেল দিয়ে দিনে তিন থেকে চার বার ভাপ নিতে হবে। এতেই সংক্রমণ কমবে।
৫) মধুও ভাইরাল সংক্রমণ কমাতে বেশ উপকারী। গরমের দিনে ভাইরাল সংক্রমণে কাবু হলে প্রতি দিন সকালে এক চামচ মধু এক চামচ আদার রসের সঙ্গে মিশিয়ে খান। সর্দি-কাশি থেকে দ্রুত সেরে উঠবেন।
গরমে ভাইরাল সংক্রমণের ঝুঁকি কমবে কী ভাবে?
জিঙ্ক সমৃদ্ধ খাবার রাখুন পাতে। এতে শরীরে ভাইরাসের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ ক্ষমতা গড়ে ওঠে। প্রোবায়োটিক-যুক্ত খাবার খেলে ফ্লু রুখে দেওয়া সহজ হয়। তাই দৈনন্দিন খাদ্যতালিকায় টক দই রাখুন। জ্বরে আক্রান্ত হলে সারা দিনে অন্তত চার লিটার জল খান। শুধু জলই খেতে হবে এমন কোনও মানে নেই, স্যুপ বা ডাল জাতীয় তরলেও ভাল কাজ দেয়।