প্রোটিন পাউডার কিনুন সতর্ক হয়ে। ছবি: শাটারস্টক।
যাঁরা ওজন বৃদ্ধি করতে চান কিংবা যাঁরা নিয়মিত জিমে গিয়ে শরীরচর্চা করেন, তাঁদের অনেকের মনেই প্রোটিন পাউডার নিয়ে নানা প্রশ্ন রয়েছে। পেশিবহুল সুঠাম চেহারা পেতে এই ধরনের পাউডার খাওয়া স্বাস্থ্যকর কি না, সেই প্রশ্ন জাগে অনেকেরই মনে। অনেকেই বিজ্ঞাপনের ফাঁদে পড়ে চড়া দামের এই বাক্সবন্দি প্রোটিন পাউডারগুলি পুষ্টিবিদ কিংবা ফিটনেসবিদের পরামর্শ ছাড়াই দিনের পর দিন খেয়ে চলেছেন। এই অভ্যাস কিন্তু নানা শারীরিক সমস্যার কারণ হতে পারে।
একজন পূর্ণবয়স্ক মানুষের দৈনিক প্রোটিনের চাহিদা দেহের ওজনের সমানুপাতিক। প্রতি কিলো ওজনপিছু দৈনিক ০.৮ থেকে ১ গ্রাম প্রোটিন প্রয়োজন হয়। অর্থাৎ, কারও ওজন যদি ৫০ কেজি হয় তবে তাঁর প্রতি দিন ৪৫ থেকে ৫০ গ্রাম প্রোটিন প্রয়োজন। তবে যাঁরা খেলোয়াড় এবং নিয়মিত শরীরচর্চা করেন, তাঁদের ক্ষেত্রে এই চাহিদা কিছুটা বেশি। তাঁদের দেহের প্রতি কিলো ওজনের জন্য, দৈনিক দেড় থেকে দুই গ্রাম প্রোটিন প্রয়োজন। প্রোটিন বেশি হয়ে গেলেও কিন্তু শরীরে নানা রকম সমস্যা তৈরি হতে পারে।
১) এই ধরনের পাউডার দীর্ঘ দিন ধরে খেলে তা কিডনি ও লিভারের ক্ষতি করতে পারে।
২) এই অভ্যাস মাথা ঘোরা, ক্ষুধামান্দ্য, ডায়েরিয়া কিংবা মানসিক চাপের মতো সমস্যাও ডেকে আনে।
৩) অনেক ক্ষেত্রেই দেখা যায়, দ্রুত পেশি গঠন করার জন্য যে ধরনের প্রোটিন পাউডার ব্যবহার করা হয়, তাতে স্টেরয়েড জাতীয় উপাদান মিশ্রিত থাকে। এই স্টেরয়েড দীর্ঘ দিন শরীরে প্রবেশ করলে স্থূলতার সমস্যা শুরু হয়।
৪) অতিরিক্ত প্রোটিন পাউডার শরীরে ক্যালশিয়ামের ভারসাম্য বিগড়ে দেয়। এই কারণে বাতের ঝুঁকি বাড়ে।
৫) প্রোটিন হজম করতে শরীরের চাই অতিরিক্ত জল। প্রোটিনের মাত্রা বেড়ে গেলে শরীরে জলের ঘাটতি দেখা দিতে পারে।
বাজার থেকে প্রোটিন পাউডার কিনতে হলে কী কী মাথায় রাখবেন?
১) সকলের শরীরের জন্য প্রোটিন পাউডার খাওয়া ভাল নয়, তাই আপনার শরীরে এর প্রয়োজন আছে কি না, তা পুষ্টিবিদের থেকে যাচাই করে তবেই প্রোটিন পাউডার কিনুন। যে কোনও ধরনের প্রক্রিয়াজাত প্রোটিনের তুলনায় প্রাকৃতিক খাবার থেকে প্রোটিন শোষণ করা দেহের পক্ষে অনেক বেশি সহজ।
২) যে কোনও সংস্থার প্রোটিন পাউডার কিনে নিলেই হল না। এ ক্ষেত্রে নামীদামি সংস্থার প্রোটিন পাউডার কিনুন। প্যাকেটের গায়ে উপকরণগুলিও পড়ে নিতে ভুলবেন না যেন। এ ক্ষেত্রে কোনটি আপনার স্বাস্থ্যের পক্ষে ভাল, সেই পরামর্শটি পুষ্টিবিদের কাছ থেকেই নেওয়া ভাল।