ছবি: আইস্টক
পুজোর সকালে বেরিয়ে ধোঁয়া ওঠা কচুরি-সিঙাড়া-জিলিপি। বিকেলে বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডায় ফিশফ্রাই। রাতে কোনও ডিনারের নিমন্ত্রণে কব্জি ডুবিয়ে পোলাও-মাটন। বাঙালির উৎসব শুরু হওয়া মানেই সমানুপাতে খাওয়া-দাওয়া শুরু হওয়া। আর বাঙালির শারদীয়া শুধু চার দিনের উৎসব নয়। দুর্গাপুজো গিয়ে বিজয়ার মিষ্টিমুখ, লক্ষ্মীপুজোর খিচুরি, তার পরে দীপাবলী, কালীপুজো, ভাইফোঁটা, জগদ্ধাত্রী পুজো মিলিয়ে এক মাসের উৎসব। এবং এক মাসের অনিয়ম। এর মধ্যেই ধীরে ধীরে বদলাতে শুরু করেছে মরসুম। কখনও ঝাঁ-ঝাঁ রোজে হাঁসফাঁস গরম। কখনও বৃষ্টি হলে শীত ভাব। আগামী এক মাস বাঙালি জীবনযাত্রার ওই ওঠাপড়ার জন্য আপনি প্রস্তুত তো? বা বলা ভাল আপনার পেট অর্থাৎ হজমশক্তির ওই জোড়া অত্যাচার সহ্য করার ক্ষমতা আছে তো! যদি না থেকে থাকে তবে অবিলম্বে পেটের যত্ন নিন। ৭টি অভ্যাস নিয়মিত বজায় রাখার চেষ্টা করুন।
ভোগের খিচুড়ির স্বাদ ছাড়া পুজো বলে মনেই হয় না। হজমশক্তি ভাল রেখে বিনা দ্বিধায় খান। ছবি: সংগৃহীত
১। প্রচুর জল খান
জল হজম প্রক্রিয়ায় সাহায্য করে। পাশাপাশি ঋতু পরিবর্তনের সময় আমাদের শরীরে আর্দ্রতার মাত্রাও বাড়ে-কমে। সেই ওঠাপড়ার ভারসাম্য রাখতেই প্রতি দিন অন্তত ৮ গ্লাস জল খান। আয়ুর্বেদিক গুণসম্পন্ন চা, স্যুপ, নারকেল বা ডাবের জলও আমাদের হজম ক্ষমতায় সাহায্য করে।
২। প্রোবায়োটিক্স জাতীয় খাবার খান
দই, পনিরের মতো প্রোবায়োটিক্স খাবারে থাকে হজমে উপকারী ব্যাক্টেরিয়া। উৎসবের অনিয়ম বা ঋতু পরিবর্তনের সমস্যা সামলাতে গিয়ে হজমশক্তি যাতে খারাপ না হয়, তার জন্য প্রোবায়োটিক্স জাতীয় খাবার থাকুক খাদ্যতালিকায়। এতে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাও বাড়ে।
৩। ফাইবার যুক্ত খাবার খান
যে সমস্ত খাবারে ফাইবার বেশি, সেগুলি হজমশক্তি ভাল রাখতে সাহায্য করে। হজমে সাহায্যকারী উপকারী ব্যাক্টেরিয়াকে খাবারের জোগান দেয় ফাইবার। নিয়মিত পেট পরিষ্কার রাখতেও সাহায্য করে ফাইবার। ফল, সব্জি, দানাশস্য, ডাল খেতে পারেন।
বাঙালির উৎসব শুরু হওয়া মানেই সমানুপাতে খাওয়া-দাওয়া শুরু হওয়া। ছবি: সংগৃহীত
৪। প্রিবায়োটিক্স রাখুন খাবারে
প্রিবায়োটিক্স হল এমন ধরনের ফাইবার, যা হজমে উপকারী ব্যাক্টেরিয়াকে পুষ্টি দেয়। পেঁয়াজ, রসুন, কলায় রয়েছে প্রচুর প্রিবায়োটিক্স যা হজমে সহায়ক স্বাস্থ্যকর ব্যাক্টেরিয়া, ছত্রাক তৈরি করতে সাহায্য করে।
৫। প্রক্রিয়াজাত খাবারে রাশ টানুন
যে কোনও প্রক্রিয়াজাত খাবার হজমে সহায়ক ব্যাক্টেরিয়ার ভারসাম্য নষ্ট করে। যার ফলে সহজেই প্রভাব পড়ে হজমশক্তিতে। বিশেষ করে ঋতু পরিবর্তনের সময় শরীরের বিভিন্ন অঙ্গপ্রত্যঙ্গ সহজেই আক্রান্ত হওয়ার ভয় থাকে। তাই আরও সতর্ক হওয়া জরুরি। যে সমস্ত খাবারে চিনির পরিমাণ বেশি, অস্বাস্থ্যকর তেল বা স্নেহ পদার্থ বা সংরক্ষণকারী যৌগ (প্রিজ়ারভেটিভ) রয়েছে বলে জানেন, সেই সব খাবার এড়িয়ে চলুন।
৬। ভাল ঘুম প্রয়োজন
আবহাওয়ার পরিবর্তন ঘুমের উপরেও প্রভাব ফেলতে পারে। ভাল ঘুম না হলে তার প্রভাব পড়ে হজমশক্তিতেও। রোজ অন্তত ৭ ঘণ্টা ঘুমোনোর চেষ্টা করুন।
৭। মানসিক চাপ কমানোর চেষ্টা করুন
মানসিক চাপ হজমশক্তিকে প্রভাবিত করে। তাই মানসিক চাপ কমাতে পারে এমন অভ্যাস, যেমন যোগাসন, ধ্যান, শ্বাসের ব্যায়াম করে দেখতে পারেন। তাতেও হজমশক্তি ভাল থাকে।