বাড়ি বসেই জিমে যাওয়ার অভাব পূরণ করতে পারেন। ছবি: সংগৃহীত।
খাওয়াদাওয়ায় নিয়ম মেনে চললেও সুস্থ থাকতে শরীরচর্চার কোনও বিকল্প হতে পারে না। নিয়ম করে তাই অনেকেই জিমে যান। লোহালক্কড় টেনে ঘাম ঝরান। আবার ইচ্ছে থাকলেও সময়ের অভাবে জিমে যাওয়ার সুযোগ হয় না অনেকের। শরীরচর্চায় তাড়াহুড়ো করলে চলে না। বরং ফিটনেস রুটিন হতে হবে অনেক গোছানো। তবেই পাবেন সুফল। নয়তো দীর্ঘ দিন ধরে শরীরচর্চা করলেও আদতে কোনও উপকার মেলে না। জিমে যাওয়ার অভ্যাস ভাল। পেশাদার প্রশিক্ষকের পরামর্শ পাওয়া যায়। কিন্তু জিমে যাওয়া শুধু যে সময়সাপেক্ষ, তা নয়। ব্যয়সাপেক্ষেও বটে। প্রতি মাসে বেশ অনেকটা পরিমাণ টাকা বিনিয়োগ করতে হয়। ফলে সাশ্রয় করতে জিমে যাওয়ার পরিকল্পনা থেকে সরে আসেন অনেকেই। জিমে না হয় না-ই গেলেন, তাই বলে শরীরচর্চা করবেন না, তা তো হতে পারে না। জিমে না গিয়েও ফিট থাকা সম্ভব, ধাপে ধাপে কিছু নিয়ম মেনে চলেন। সারা সপ্তাহ তিনটি শরীরচর্চা যদি ঘুরিয়ে-ফিরিয়ে করতে পারেন, তা হলে জিমে যাওয়ার খরচ বেঁচে যাবে।
কার্ডিয়ো
‘কার্ডিয়োভাস্কুলার অ্যাক্টিভিটি’-কে সংক্ষেপে বলা হয় কার্ডিয়ো। এ ধরনের ব্যায়ামে শরীরে রক্তচলাচল বৃদ্ধি পায়। বিপাক হার বৃদ্ধি করতেও কার্ডিয়োর কোনও জুড়ি নেই। মেদ ঝরাতেও তাই দারুণ উপকারী এই প্রকার ব্যায়াম। শরীরের নমনীয়তা ও পেশির জোর বাড়াতেও কার্ডিয়ো করতে পারেন। কার্ডিয়ো করতে কোনও রকম অত্যাধুনিক যন্ত্রের প্রয়োজন হয় না। সূর্য নমস্কার, সাঁতার কাটা, সাইকেল চালানো, হাঁটাহাঁটি, দৌড়ের মতো কার্ডিয়ো আর কিছু নেই। তবে রোজ কার্ডিয়ো করতে হবে তার কোনও মানে নেই। সপ্তাহে দু’দিন কার্ডিয়ো করতে পারেন। পর পর দু’দিন নয়। এক দিন অন্তর এক দিন। তা হলে ভারসাম্য বজায় থাকবে।
এইচআইআইটি
‘হাই ইনটেনসিটি ইন্টারভাল ট্রেনি’ বা এইচআইআইটি শুধু মেদ ঝরায় না, সঙ্গে হৃদ্যন্ত্রও ভাল রাখে। এ ছাড়াও পেশি শক্তিশালী হয়, উচ্চ রক্তচাপও নিয়ন্ত্রণে থাকে। সপ্তাহে দু’দিন বা তিন দিন কার্ডিয়ো করলে অন্য দু’দিন এইচআইআইটি করতে পারেন। বেশ কয়েকটি প্রচলিত শরীরচর্চাই যে আসলে এইচআইআইটি, তা অনেকেই জানেন না। জাম্পিং জ্যাকস, জাম্প স্কোয়াট, মাউন্টেন ক্লাইম্বিং, বারপি— এগুলি হল এইচআইআইটি। এ ছাড়াও, আরও অনেক ফ্লোর-কার্ডিয়ো রযেছে, যেগুলি করতে পারেন। ধরা যাক, আপনি ১৫ মিনিট শরীরচর্চা করবেন। তার মধ্যে ৫ মিনিট করে তিনটে এইচআইআইটি করবেন। পাঁচ মিনিটে একটি ব্যায়ামের সেটের মধ্যে যদি দু’টো করে করা হয়, তা হলে সেই ২টো এক্সারসাইজের মধ্যে ধরা যাক ১০ বা ১৫ সেকেন্ডের বিরতি নিলেন। বিরতি নিয়েই পরেরটি শুরু করে দিলেন। তার পরের এইচআইআইটি ব্যায়ামটি শুরু করার আগে আবার ১০ সেকেন্ডের বিরতি নিন। এ ভাবেই কম সময়ে আপনি বেশ কয়েকটি কার্ডিয়ো করে ফেলতে পারেন।
এলআইএসএস
জিমে না গিয়েও ফিট থাকা সম্ভব, ধাপে ধাপে কিছু নিয়ম মেনে চলেন। ছবি: সংগৃহীত।
‘লো ইনটেনসিটি স্টেডি স্টেট’ বা এলআইএসএস হল এক ধরনের কার্ডিয়ো ব্যায়াম। সব বয়সেই এই ধরনের শরীরচর্চা করা যেতে পারে। হাঁটা, জগিং, সাইকেল চালানো এ প্রকার শরীরচর্চার মধ্যে পড়ে। নিয়ম করে এগুলি করলে জিমে যাওয়ার দরকার হবে না। এই ধরনের শরীরচর্চায় হৃদ্স্পন্দনের হার বাড়ে। শরীরও ভিতর থেকে অতি সক্রিয় হয়। অনেক সময়ে শরীরচর্চা করেও কোনও সুফল পাওয়া যায় না। এলআইআইএস করলে সেই ঝুঁকি থাকে না।