(বাঁ দিকে) সন্দীপ ভোলা। পহেলগাঁওয়ের বৈসরনে নিরাপত্তাবাহিনী (ডান দিকে)। ছবি: সংগৃহীত।
ছবি তুলতে ব্যস্ত ছিলেন। হঠাৎই গুলি চলার আওয়াজ শুনতে পান। কিছু বুঝে ওঠার আগেই পর পর কয়েক জন পর্যটককে মাটিতে পড়ে যেতে দেখলেন। তখনই বুঝেছিলেন বড় কিছু একটা হয়েছে। তাই আর দেরি না করে ছুটতে শুরু করেন তাঁরা। পহেলগাঁওয়ে হামলার সেই অভিজ্ঞতার বর্ণনা দিল ওড়িশার এক পরিবার। কী ভাবে সেই হামলা থেকে বেঁচে ফিরেছেন, সেই কাহিনিও শুনিয়েছেন তাঁরা।
সন্দীপ ভোলা। কটকের বাসিন্দা। বিবাহবার্ষিকী উদ্যাপনের জন্য কাশ্মীরকে বেছে নিয়েছিলেন তিনি। ব্যাগপত্তর গুছিয়ে স্ত্রী লেলিনা, মা শশী কুমারী এবং বাবা রঞ্জিতকে নিয়ে পাড়ি দেন কাশ্মীরে। সেখানে পৌঁছেই পহেলগাঁওয়ের বৈসরনে গিয়েছিলেন। সন্দীপ বলেন, ‘‘আমরা ছবি তোলায় ব্যস্ত ছিলাম। তখনই প্রথম গুলি চলার আওয়াজ শুনি। প্রথমে আমরা কিছু বুঝতে পারিনি। তার পরই চিৎকার আর লোকজনের ছোটাছুটি দেখে বুঝতে পারলাম কিছু ঘটেছে।’’
সন্দীপ আরও বলেন, ‘‘তার পর বেশ কয়েক বার গুলির আওয়াজ পেলাম। তার ঠিক পরমুহূর্তেই দেখলাম এক এক করে পর্যটক মাটিতে লুটিয়ে পড়ছেন। এই দৃশ্য দেখে পালানোর চেষ্টা করি। কিন্তু আশপাশে পুরোটাই খোলা মাঠ। লুকোনোর জায়গা ছিল না। তখন দেখতে পাই কয়েক হাত দূরে একটি ছেঁড়া ত্রিপল পড়ে রয়েছে। সেই ত্রিপলের নীচে আমি আর বাবা আশ্রয় নিলাম।’’
জঙ্গিরা চলে যেতেই দেখলেন, তাঁদের আশপাশে ১৪টি লাশ পড়ে রয়েছে। সন্দীপ জানিয়েছেন, স্ত্রী, পুত্র এবং তাঁর মা পালাতে গিয়ে পড়ে যান। স্ত্রীর কব্জি ভেঙে গিয়েছে। গত ২২ এপ্রিল পহেলগাঁওয়ের বৈসরনে হামলা চালায় জঙ্গিরা। সেই হামলায় ২৫ ভারতীয় এবং নেপালের এক নাগরিকের মৃত্যু হয়েছে। কী ভাবে সেই জঙ্গি হামলায় তাঁদের গোটা পরিবার বেঁচে ফিরেছে, সেই বর্ণনা দিতে গিয়ে শিউরে উঠেছিলেন ওড়িশার যুবক সন্দীপ।