গরমে শরীরচর্চা করার আগে কী ভাবে সতর্ক হবেন ছবি: সংগৃহীত
স্বাস্থ্যরক্ষায় এখন নিয়মিত শরীরচর্চা করেন অনেকেই। শুধু স্থূলতা কমানোই নয়, হৃদ্যন্ত্রের স্বাস্থ্য ভাল রাখতে কিংবা ডায়াবিটিস নিয়ন্ত্রণেও নিয়মিত শরীরচর্চা অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। কিন্তু এ কথাও সত্যি যে তীব্র গরমে শরীরচর্চা করলে অতিরিক্ত ধকল পড়ে শরীরের উপর। গরমে এমনিতেই অতিরিক্ত ঘাম হয়, ফলে শরীরে দেখা দিতে পারে জলশূন্যতার সমস্যাও। তাই এই সময় শরীরচর্চা করার আগে কিছু অতিরিক্ত সতর্কতা অবলম্বন করা জরুরি।
প্রতীকী ছবি। ছবি: সংগৃহীত
কী কী বদল আনতে হবে?
আনন্দবাজার অনলাইনের সঙ্গে আলাপচারিতায় শরীরচর্চার প্রশিক্ষক সুমনা দত্ত বর্মণ জানান, যাঁরা নিয়মিত শরীরচর্চা করেন, তাঁদের সকলের নিজস্ব লক্ষ্য থাকে। কেউ স্থূলতা কমাতে, কেই সুঠাম পেশি নির্মাণে, কিংবা কেউ খেলাধুলোর স্বার্থে নিয়মিত ঘাম ঝরান। তাই গরম পড়ছে বলেই আচমকা সেই অভ্যাস বদল করা সম্ভব নয় তাঁদের পক্ষে। বরং তাঁরা কিছুটা বদল আনতে পারেন অনুশীলনের সময়ে। সুমনা বলেন, ‘‘যাঁরা সকালে দৌড়াতে যান কিংবা সাইকেল চালান, তাপ প্রবাহের কথা মাথায় রেখে তাঁরা বেশ কিছুটা সকাল সকাল দৌড় কিংবা সাইকেল চালানো শুরু করতে পারেন।’’ পাশাপাশি গরমকালে সাঁতার কাটাও শরীরচর্চার ক্ষেত্রে অত্যন্ত উপযোগী হয়ে উঠতে পারে বলে মত সুমনার।
অতিরিক্ত ঘাম হচ্ছে কি?
গরমে ঘাম হওয়া অস্বাভাবিক নয়। কিন্তু অতিরিক্ত ঘাম হলে দেহে ‘ডিহাইড্রেশন’ বা জলশূন্যতা দেখা দিতে পারে। শুধু জল কমে যাওয়াই নয়। ঘামের সঙ্গে সঙ্গে দেহ থেকে বেরিয়ে যেতে পারে প্রয়োজনীয় লবণ ও খনিজ পদার্থও। ফলে সোডিয়াম-পটাশিয়ামের ঘাটতি দেখা দিতে পারে শরীরে। এই সমস্যা থেকে রেহাই পেতে সুমনা শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত পরিবেশে শরীরচর্চা করার পরামর্শ দিয়েছেন। তবে খেয়াল রাখতে হবে ঘরের উষ্ণতা যেন ঘাম নিঃসরণের অনুকূল হয়। ঘর বেশি ঠান্ডা হয়ে গেলে আবার হিতে বিপরীত হতে পারে বলে মত তাঁর। পাশাপাশি শরীরের জলের ঘাটতি বজায় রাখতে নুন-চিনির জল, স্মুদি, তরমুজের শরবতের মতো পানীয় পান করার পরামর্শও দেন তিনি। তবে এই গরমে শরীরচর্চা করার পর কফি বা সমতুল পানীয় থেকে দূরে থাকার পরামর্শ দিয়েছেন তিনি।
কখন থামতে হবে?
স্বাস্থ্য ভাল রাখতে শরীরচর্চা যেমন জরুরি, তেমনই শরীর কখন থামার ইঙ্গিত দিচ্ছে তা বোঝাও অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। শরীরচর্চা করলে হৃদ্স্পন্দন কিছুটা বৃদ্ধি পাওয়া অস্বাভাবিক নয়। কিন্তু মনে রাখতে হবে দ্রুত হৃদ্স্পন্দন যেন বুক ধরফর করার পর্যায়ে না যায়। ফিটনেস বিশেষজ্ঞ সুমনা বলেন, ‘‘পেশির টান, আকস্মিক ক্লান্তি ও বুক ধরফর করলে অবিলম্বে সতর্ক হতে হবে। দেহে জলের ঘাটতি হলে পেশির টান দেখা দিতে পারে। সে ক্ষেত্রে পর্যাপ্ত জল পান করলেই ঠিক হয়ে যেতে পারে এই সমস্যা। কিন্তু বুক ধরফর করা বা আকস্মিক ক্লান্তি লাগার মতো সমস্যা আরও গভীর সমস্যার ইঙ্গিত হতে পারে।’ এই ধরনের সমস্যা দেখা দিলে অবিলম্বে বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেওয়া উচিত বলেই মত সুমনার।