এই ঠান্ডায় শিশুকে স্নান করানো নিয়ে অনেক অভিভাবকই আশঙ্কায় থাকেন। ছবি: সংগৃহীত
শীতের পারদ ক্রমশ চড়তে শুরু করেছে। কনকনে ঠান্ডায় কাঁপছে শহর থেকে শহরতলি। এমন সময়ে সুস্থ থাকতে দৈনন্দিন অভ্যাসেও খানিক বদল আনতে হয়। বিশেষ করে বাড়িতে ছোট বাচ্চা থাকলে শীতকালে জরুরি কিছু ব্যবস্থা নিতেই হয়।
এই ঠান্ডায় শিশুকে স্নান করানো নিয়ে অনেক অভিভাবকই আশঙ্কায় থাকেন। অনেকেই ভাবেন শীতের শুরু থেকে গোটা শরীর বিশেষ ঘামে না, তাই রোজ স্নানের তেমন কোনও প্রয়োজন নেই। অনেক শিশুই আবার ঠান্ডার ভয়ে তাই স্নান করতে না চাইলে মা-বাবাও খুব জোরাজুরি করেন না। কিন্তু চিকিৎসকরা এমন ধারণা সমর্থন করেন না। তাঁদের মতে, শীতকালে স্নান না করা কোনও স্বাস্থ্যকর অভ্যাস নয়। স্নান করলে শরীরেরই ভাল হবে। এই সময়ে সংক্রমণের আশঙ্কা থাকে, তা অনেকটাই দূর হবে। সন্তান স্নান না করার বায়না করলে তা সব সময়ে মেনে নেওয়ার কোনও মানে নেই।
বাড়িতে ছোট বাচ্চা থাকলে শীতকালে জরুরি কিছু ব্যবস্থা নিতেই হয়। ছবি: সংগৃহীত
শিশু যদি একেবারে ছোট হয়, তা হলে তাকে স্নান করানোর ক্ষেত্রে বিশেষ সতর্কতা নেওয়া জরুরি। একরত্তি শিশুকে অনেক সময়ে স্নান করাতে ভয় পান বাবা-মায়েরা। তার উপর শীতের এমন তীব্রতা। ভয় পাওয়া অমূলক নয়। চিকিৎসকরা জানাচ্ছেন, শিশুর জন্মের তিন দিন পর থেকেই তাকে স্নান করানো যেতে পারে। তার পর দেড় মাস পর্যন্ত এক দিন অন্তর স্নান করানোর পরামর্শ দিয়ে থাকেন তাঁরা। কিন্তু যে সব শিশুর বয়স দেড় মাসের বেশি, তাদের সব ঋতুতেই প্রতি দিন স্নান করানো উচিত। তবে শিশুর যদি নিউমোনিয়া বা অন্য কোনও সমস্যা থেকে থাকে বা শিশু যদি প্রিম্যাচিয়োর হয়, সে ক্ষেত্রে স্নান করার নিয়ম নিয়ে চিকিৎসকের পরামর্শ করে নিতে পারেন।
শীতে শরীরের ভিতরটা শুষ্ক হয়ে যায়। আবার বাইরেও যদি জলের অভাব হয়, তা হলে শরীর অত্যধিক গরম হয়ে যায়। এ ছাড়া, শিশুর ত্বকও অত্যন্ত স্পর্শকাতর। তাই এক দিন স্নান না করালেও তাদের ত্বকে নানা সমস্যা দেখা যায়। তবে গরম জলে স্নান করাবেন। ঠান্ডা জলে শিশুকে একেবারেই স্নান করাবেন না। স্নান করানোর জন্য দিনের নির্দিষ্ট একটি সময় বেছে নিন। প্রতি দিন একই সময়ে স্নান করাবেন।
এ সময়ে অনেকেরই কথায় কথায় ঠান্ডা লেগে যায়। শিশুর একটু জ্বর-জ্বর ভাব থাকলে স্নান না করিয়ে বরং তোয়ালে ভিজিয়ে গা মুছিয়ে দিতে পারেন। স্নান করানোর পর সঙ্গে সঙ্গে মাথা ও কান মোছান ভাল করে। যাতে জল বসে ঠান্ডা না লেগে যায়। শীতে শিশুকে স্নান করানোর সময়ে আস্থা রাখুন গ্লিসারিন সাবানে। এতে ত্বকের শুষ্কতা কমবে। কম ক্ষারযুক্ত শ্যাম্পু বাছুন। স্নানের আগে পারলে শিশুকে কিছু ক্ষণ রোদে রাখুন। হালকা হাতে সর্ষের তেল ভাল করে মালিশ করে দিন। এতে শরীর গরম থাকবে। সহজে ঠান্ডাও লাগবে না।