স্বাস্থ্যকর খাবারেও লুকিয়ে থাকতে পারে স্থূলতার বীজ। ছবি: সংগৃহীত।
শরীরের যত্ন নিতে স্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়ার কোনও বিকল্প নেই। শরীরের অন্দরে কী ক্রিয়া-বিক্রিয়া চলে, তা বাইরে থেকে বোঝার উপায় থাকে না। তাই চোখ বন্ধ করে বিশ্বাস করে ভরসা রাখতে হয় এমন কিছু খাবারের উপর, যেগুলি শরীরের দেখাশোনা করতে সক্ষম। সংক্রমণজাতীয় কোনও সমস্যা কিংবা ওজন কমানো, সবেতেই এগিয়ে রয়েছে স্বাস্থ্যকর খাবার। বিশেষ করে ওজন কমানোর ক্ষেত্রে কী খাচ্ছেন, সেটা খুবই জরুরি। অনেকেই রোগা হবেন বলে বেশ কিছু বিধিনিষেধ মেনে চলেন। অথচ দেখা যায় আশানুরূপ ফল তাতে মেলে না। পুষ্টিবিদদের মতে, এর একটি কারণ হতে পারে, স্বাস্থ্যকর মনে করে ওজন কমানোর জন্য খাবারগুলির উপর ভরসা রাখছেন, আসলে সেগুলিতেই লুকিয়ে রয়েছে স্থূলতার বীজ। বাইরে থেকে স্বাস্থ্যগুণসমৃদ্ধ মনে হলেও, কোন খাবারগুলি খেলে উল্টে বেড়ে যেতে পারে ওজন?
গ্র্যানোলা
অনেকেরই সকালের জলখাবারে গ্র্যানোলা থাকে। বিশেষ করে যাঁরা রোগা হতে চাইছেন, তাঁরা ভরসা রাখেন এই খাবারে। ড্রাই ফ্রুটস, ওটস, মধু দিয়ে তৈরি গ্র্যানোলা ওজন কমাতে সাহায্য করে, তেমনটাই বিশ্বাস করেন অনেকে। কিন্তু সত্যিই কি গ্র্যানোলা উপকারী? পুষ্টিবিদরা জানাচ্ছেন, না। গ্রানোলাতে শর্করার পরিমাণ অনেক বেশি। সেই সঙ্গে মধু আর ড্রাই ফ্রুটস তো রয়েছেই। এই দু’টোতেই চিনির আধিক্য কম নয়। শর্করা ছাড়াও গ্র্যানোলাতে ফ্যাটের মাত্রাও বেশি। তাই ডায়েটে আদৌ গ্র্যানোলা রাখবেন কি না, তা ভেবে নেওয়া জরুরি।
গ্রানোলাতে শর্করার পরিমাণ অনেক বেশি। ছবি: সংগৃহীত।
স্যুপ
ডায়েট করছেন এমন অনেকেরই রাতের খাবারে থাকে স্যুপ। আলাদা করে তৈরি করার ঝক্কিও নেই। প্যাকেট কেটে গরম জলের মধ্যে ঢেলে দিলেই তৈরি স্যুপ। সময় বাঁচলেও এই বাজারচলতি স্যুপ ক্ষতি করছে শরীরের। যে কারণে খাচ্ছেন, কোনও লাভ হচ্ছে না। কারণ এই ধরনের স্যুপ তৈরির মশলায় নুন থাকে। আর রোগা হওয়ার ডায়েটে নুন হল সবচেয়ে বিপজ্জনক জিনিস। সময় লাগলেও তার চেয়ে বাড়িতেই নানা রকম সব্জি দিয়ে স্যুপ বানিয়ে ফেলুন। তবে ভুলেও নুন মেশাবেন না।
ফলের রস
গোটা কিংবা কাটা ফল খাওয়া ছাড়াও ফলের রস খাওয়ারও অভ্যাস রয়েছে অনেকের। আবার প্যাকেটজাত বাজারচলতি ফলের রসও অনেকে কিনে রাখেন। ফলের রস খাচ্ছেন মানেই ওজন ঝরবে দ্রুত। এমনটাই মনে করেন অনেকে। পুষ্টিবিদরা জানাচ্ছেন, সম্পূর্ণ ভ্রান্ত এই ধারণা। কারণ বাজারচলতি ফলের রসে সবচেয়ে বেশি শর্করা থাকে। কৃত্রিম ভাবে বানানো এই পানীয়ে ফ্যাটের পরিমাণও কম নয়। এই ধারণা থেকে বেরিয়ে এসে বরং বাড়িতেই বানিয়ে নিন ফলের রস। আলাদা করে চিনি, নুন কোনও কিছু মেশাবেন না।
প্রোটিন বার
শরীরচর্চা করছেন, ঘাম ঝরাচ্ছেন। জিম থেকে ফিরে খাচ্ছেন প্রোটিন বার। ঠিক করছেন? অনেকেরই মনে হতে পারে, প্রোটিন বারের মতো স্বাস্থ্যকর জিনিস খুব কমই রয়েছে। এ ভাবনা যে একেবারে ভুল, তা নয়। কিন্তু অতিরিক্ত প্রোটিন শরীরে গেলে হজমের গোলমাল দেখা দিতে পারে। ওজন কমানোর প্রথম শর্ত হল ঠিকঠাক হজম হওয়া। সেটাই যদি না হয়, তা হলে আর কেন খাবেন প্রোটিন বার?