শুধু ভারত বলেই নয়, গোটা বিশ্ব জুড়েই বাড়ছে এই রোগের প্রকোপ। ছবি: সংগৃহীত
২০৫০ সালের মধ্যে ভারতবর্ষে ডিমেনশিয়া রোগে আক্রান্ত হবেন প্রায় এক কোটি চোদ্দ লক্ষ্যেরও বেশি মানুষ। বিশ্বখ্যাত বিজ্ঞান বিষয়ক পত্রিকা ল্যানসেটে প্রকাশিত সাম্প্রতিক এক গবেষণা পত্রে উঠে এল এমনই এক চাঞ্চল্যকর তথ্য। ২০১৯ সালে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী ভারতবর্ষে ডিমেনশিয়ায় আক্রান্ত মানুষের সংখ্যা ছিল প্রায় ৩৮ লাখ। অর্থাৎ রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধি পাবে প্রায় দুশো শতাংশ।
প্রতীকী ছবি। ছবি: সংগৃহীত
সামগ্রিক ভাবে স্মৃতিশক্তি লোপ, ভাবনা চিন্তার অসুবিধা, সিদ্ধান্ত নেওয়ার অক্ষমতা ইত্যাদি একাধিক সমস্যাকে বিজ্ঞানের ভাষায় ডিমেনশিয়া বলা হয়। সবচেয়ে বহুল ও দূরারোগ্য ডিমেনশিয়ার উদাহরণ হল অ্যালঝাইমার্স। শুধু ভারত বলেই নয়, গোটা বিশ্ব জুড়েই বাড়ছে এই রোগের প্রকোপ। বিজ্ঞানীদের আশঙ্কা, ২০১৯ সালে বিশ্বজুড়ে এই রোগে আক্রান্ত মানুষের সংখ্যা যেখানে প্রায় ৫ কোটি ৭০ লক্ষের কাছাকাছি, সেখান ২০৫০ সালে এই সংখ্যা বেড়ে হতে পারে ১৫ কোটি। আরব ও দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলিতে আশঙ্কাজনক হারে বাড়ছে এই রোগের প্রকোপ। কারও কারও আশঙ্কা ডিমেনশিয়া আক্রান্ত রোগীর প্রকৃত সংখ্যা আরও বেশি হলেও অবাক হওয়ার কিছু নেই। অ্যালঝাইমার্স অ্যান্ড রিলেটেড ডিসঅর্ডারস সোসাইটি অফ ইন্ডিয়ার ২০২০ সালের একটি রিপোর্ট অনুযায়ী ভারতবর্ষে ষাটোর্ধ্ব প্রায় ৫৩ লক্ষ মানুষ ডিমেনশিয়ায় আক্রান্ত।
২০২০ সালেই ল্যানসেটের একটি গবেষণা বলেছিল প্রায় ৪০ শতাংশ ক্ষেত্রে ডিমেনশিয়া আটকানো বা স্থগিত করা যেতে পারে। তার জন্য প্রয়োজন প্রায় ১২টি ঝুঁকিপূর্ণ বিষয় সম্পর্কে সচেতন থাকা। এই বিষয়গুলি হল—
১। শিক্ষার অভাব
২। উচ্চ রক্তচাপ
৩। শ্রবণের সমস্যা
৪। ধূমপান
৫। অতিরিক্ত ওজন
৬। মানসিক অবসাদ
৭। কায়িক শ্রমের অভাব
৮। মধুমেহ
৯। সামাজিক বিচ্ছিন্নতা
১০। অতিরিক্ত মদ্যপান
১১। মস্তিষ্কের আঘাত
১২। বায়ু দূষণ
৬৫ বছরের বয়সি ব্যক্তিদের মধ্যে বেশি দেখা গেলেও সম্প্রতি পঞ্চাশের কোঠায় থাকা ব্যক্তিদের মধ্যেও বাড়ছে এই রোগের প্রবণতা। বিশেষজ্ঞদের বক্তব্য সুস্থ জীবন যাপন ও সঠিক খাদ্যাভ্যাসই হতে পারে এই রোগের বিরুদ্ধে সবচেয়ে বড় হাতিয়ার। কাজেই নিজের বা প্রিয়জনের মধ্যে এই রোগের উপসর্গ দেখা দিলে কোনওমতেই নিরুত্তাপ থাকা চলবে না। পরামর্শ নিতে হবে বিশেষজ্ঞদের।