কোন রোগের জন্য কী পানীয়? ছবি: সংগৃহীত।
শরীরে জলের ঘাটতি যেন না হয়। তাই দিনে দু-তিন লিটার জল খাওয়ার পরামর্শ দেন পুষ্টিবিদেরা। তবে সুস্থ থাকতে শুধু জল নয়, ইদানীং ডিটক্স বা ইনফিউজ়ড ওয়াটারের উপর ভরসা রাখেন স্বাস্থ্য সচেতনেরা। বিশেষ এই পানীয় শরীরে জমা দূষিত পদার্থ বার করতে সাহায্য করে। যাঁরা মেদ ঝরাতে চাইছেন, তাঁদের জন্য এই পানীয় বেশ কার্যকরী। তা ছাড়া, রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা উন্নত করতে, হজমশক্তি বাড়িয়ে তুলতে, কোষ্ঠকাঠিন্য নিরাময়ে এই পানীয় খাওয়া ভাল। তবে ডিটক্স বা ইনফিউজ়ড পানীয় তো বিভিন্ন ধরনের হয়। কোন পানীয় কোন কাজে লাগে, তা জানেন কি?
১) গ্যাস, অম্বল:
সাধারণ খাবার খেয়েও গলা-বুক জ্বালা করছে? এক গ্লাস জলে কয়েক টুকরো আদা ভিজিয়ে সেই জল খেয়ে দেখুন। নিয়মিত ওষুধ খাওয়ার প্রয়োজন পড়বে না।
২) প্রি-ডায়াবিটিস:
রক্তে শর্করা খুব বেশি নয়, বাড়তির দিকে। মিষ্টি জিনিস খাওয়ার প্রবণতা ছেঁটে ফেলেছেন। সঙ্গে ঈষদুষ্ণ জলে সামান্য পরিমাণে ঘি খেতে শুরু করুন। উপকার মিলবে।
৩) ফ্যাটি লিভার:
বহু দিন ধরেই ফ্যাটি লিভারের সমস্যায় ভুগছেন। ওষুধ তো খাচ্ছেনই। সঙ্গে মোরিঙ্গা বা সজনেপাতার গুঁড়ো খেয়ে দেখতে পারেন। ঈষদুষ্ণ জলে সজনে পাতার গুঁড়ো মিশিয়ে সকালে খালি পেটে খেয়ে নিন।
৪) রক্তাল্পতা:
মেয়েদের মধ্যে এই রোগের প্রাদুর্ভাব বেশি। তাই মাঝে মধ্যে আয়রন-যুক্ত ওষুধ খেতে হয়। তবে এই ধরনের ওষুধ থেকে কিন্তু কোষ্ঠকাঠিন্য হতে পারে। তার বিকল্প হতে পারে হালিমের বীজ। রাতের বেলা এক গ্লাস জলে এই বীজ ভিজিয়ে রাখুন। সকালে উঠে খেয়ে নিন। রক্তে হিমোগ্লোবিন চড়চড় করে বাড়বে।
ঋতুস্রাবের কষ্টে কেশর জল উপকারী। ছবি: সংগৃহীত।
৫) ঋতুস্রাবের কষ্ট:
বিরিয়ানিতে রঙের জন্য যে কেশর ব্যবহার করেন, তা-ই এ ক্ষেত্রে কাজে লাগবে। ঈষদুষ্ণ জলে তিন-চারটি কেশরের সুতো ভিজিয়ে রাখুন। কিছু ক্ষণ পর খেয়ে নিন।
৬) পিসিওএস:
হরমোনের হেরফেরে আজকাল অনেক মহিলাই পিসিওএস-এর সমস্যায় ভোগেন। নিয়মিত মেথি ভেজানো জল খেলে ইস্ট্রোজেন, প্রজেস্টেরন এবং টেস্টোস্টেরনের মধ্যে সমতা বজায় থাকে।
৭) কোষ্ঠকাঠিন্য:
ইসবগুল না খেলে পেট পরিষ্কার হয় না। তবে কোনও কোনও সময়ে সেই বস্তুটিও ফেল করে যায়। বদলে কিশমিশ ভেজানো জল খেয়ে দেখতে পারেন। এক গ্লাস জলে বেশ কয়েকটি কিশমিশ ভিজিয়ে রাখুন। পরের দিন সকালে সেই জল খেয়ে ফেলুন। ম্যাজিকের মতো কাজ হবে।
প্রি-ডায়াবিটিস এর সমস্যায় ঈষদুষ্ণ জলে সামান্য পরিমাণে ঘি খেতে শুরু করুন। ছবি: সংগৃহীত।
৮) বদহজম:
তেলমশলা দেওয়া খাবার খেয়ে সমানে চোঁয়া ঢেকুর উঠছে? শুকনো খোলায় ভাজা জোয়ান খেলে অনেক সময়ে উপকার মেলে। তবে আরও ভাল কাজ হয় এক গ্লাস জলে জোয়ান ভিজিয়ে সেই জল খেলে।
৯) ডায়াবিটিস:
একগ্লাস জলে এক টুকরো দারচিনি ভিজিয়ে রাখুন। পরের দিন সকালে উঠে সেই পানীয় খেয়ে নিন। ইনসুলিন হরমোনের ক্ষরণ, উৎপাদন এবং কাজ স্বাভাবিক রাখতে সাহায্য করে এই পানীয়।
১০) থাইরয়েড:
থাইরয়েড গ্রন্থির কলকাঠিতে অনেক শারীরবৃত্তীয় অনেক কাজই থমকে যেতে পারে। তবে সেই হরমোনের ক্ষরণ বেশি হলেও যেমন বিপদ, কম হলেও সমস্যার। তা স্বাভাবিক রাখতে সাহায্য করে ধনে। এই মশলা জলে ভিজিয়ে রেখে খেলে দারুণ কাজ করে।