সন্তান হওয়ার পর বাবারাও অবসাদে ভুগতে পারেন। ছবি: সংগৃহীত।
সন্তান হওয়ার পর নতুন মায়েরা মানসিক অবসাদে ভোগেন। চিকিৎসা পরিভাষায় এই সমস্যাকে ‘পোস্টপার্টাম ডিপ্রেশন’ বলে। শিশুর জন্মের পরে চারপাশের অনেক কিছুই বদলে যায়। মায়েদের জীবন একেবারেই সন্তানকেন্দ্রিক হয়ে পড়ে। এত বদলের সঙ্গে মানিয়ে নেওয়ার চাপ অনেক ক্ষেত্রে ডেকে আনে অবসাদ। তবে সাম্প্রতিক একটি গবেষণা জানাচ্ছে, শুধু মায়েরা নন, এই সমস্যার মধ্যে দিয়ে যেতে পারেন বাবারাও। শিকাগো বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকদের করা গবেষণায় উঠে এসেছে এই তথ্য।
গবেষণা জানাচ্ছে, ১৩ থেকে ১৮ শতাংশ পুরুষ এই ধরনের সমস্যার মধ্যে দিয়ে যান। সন্তান জন্মের পরে শারীরিক ভাবে বাবাদের কোনও বদল আসে না। তবে রোজের জীবনধারা একেবারেই বদলে যায়। সন্তানের অধিকাংশ দায়িত্ব মা নিলেও, বাবারাও কম কিছু করেন না। মায়ের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে রাতের পর রাত জেগে থাকেন বাবারাও। সন্তানের জন্মের পর কিছু বাধ্যবাধকতাও তৈরি হয়। অনেক সময়ে নিজের পছন্দের কাজ করতে পারেন না। রোজের অভ্যাস থেকেও দূরে থাকতে হয়। স্ত্রী ব্যস্ত হয়ে প়ড়েন সন্তানকে নিয়ে। ফলে কোনও প্রয়োজনে কিংবা আলোচনা করতে সঙ্গীকে সব সময়ে পাওয়া যায় না।
সন্তান হওয়ার পর নতুন বাবারাও মানসিক অবসাদে ভোগেন। ছবি: সংগৃহীত।
বাবাদের দায়িত্ব কম নয়। প্রথম বার বাবা হওয়ার পর কী ভাবে সব সামলাবেন, বুঝতে পারেন না অনেকেই। সন্তানের প্রতি সব দায়িত্ব ঠিক মতো পালন করতে পারছেন কি না, তা নিয়েও খানিকটা অস্থিরতা চলতে থাকে। সব মিলিয়ে বাবার মনের উপরেও অনেকটা চাপ পড়ে। সন্তানের জন্মের পরে ক্লান্তি অনেকের মধ্যেই আসে। কিন্তু তা যদি দিনের পর দিন চলতে থাকে, তবে ভেবে দেখা প্রয়োজন। এই অবসাদের উপসর্গ এক-এক জনের ক্ষেত্রে এক-এক রকম। কারও খিদের বোধ কমে যায়, কারও আবার দ্রুত ওজন কমতে থাকে। সর্বক্ষণ মন খারাপ, ঘুম না আসা, বিনা কারণেই অপরাধবোধ এবং বিভিন্ন জায়গায় ব্যথা হতে পারে। বাবা হওয়ার পর এমন কোনও উপসর্গ যদি কারও ক্ষেত্রে দেখা যায়, তবে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া প্রয়োজন। প্রথমেই চিকিৎসকের কাছে না যেতে ইচ্ছা করলে অন্তত অন্য বাবাদের সঙ্গে কথা বলে দেখা যেতে পারে। তা হলেও খানিকটা সামলে নেওয়া যায় এই পরিস্থিতি।