Adenovirus Symptoms

অ্যাডিনোভাইরাসে আক্রান্ত শহরের শিশুরা! কোন কোন উপসর্গ দেখলে এখনই সতর্ক হতে হবে?

অ্যাডিনোভাইরাসের এমন প্রতিপত্তিতে শঙ্কায় সাধারণ মানুষ থেকে চিকিৎসক। বিশেষ করে শিশু ও বয়স্করা এই ধরনের অসুখের শিকার হচ্ছেন বেশি। কোন উপসর্গ দেখলে সতর্ক হবেন?

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ ১১:১৮
Share:

কোভিডের কারণে ঘরবন্দি শিশুরা দীর্ঘ সময়ে মেলামেশা থেকে বিচ্ছিন্ন থেকেছে, ফলে তাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমেছে। ছবি: শাটারস্টক।

সাধারণ শয্যা তো বটেই, জ্বর-সর্দি-কাশিতে আক্রান্ত শিশুরোগীর ভিড় উপচে পড়ছে কলকাতা ও জেলার সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালগুলিতে। পেডিয়াট্রিক ইন্টেনসিভ কেয়ার ইউনিটে (পিকু) শয্যার আকাল দেখা দিয়েছে। কয়েক জন শিশুর পরিস্থিতি এতটাই সঙ্কটজনক হচ্ছে যে, তাদের ভেন্টিলেশনে রাখতে হচ্ছে। চিকিৎসকেরা জানাচ্ছেন, জ্বর-সর্দি-কাশি নিয়ে ভর্তি থাকা শিশুরোগীদের মধ্যে শতকরা ৯০ ক্ষেত্রেই শ্বাসযন্ত্রে সংক্রমণ দেখা যাচ্ছে। অনেকেই আবার অ্যাডিনোভাইরাসের শিকার। চিকিৎসকরা জানাচ্ছেন, ২০১৮-১৯ সালের পরে এই ভাইরাস নতুন করে ফিরে এল। এ বারের ভয়াবহতা বছর তিনেক আগের পরিস্থিতিকেও ছাপিয়ে যাবে বলে আশঙ্কা করছেন শিশু চিকিৎসকরা। একটি কারণ মনে করা হচ্ছে, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার ঘাটতি। কোভিডের কারণে ঘরবন্দি শিশুরা দীর্ঘ সময়ে মেলামেশা থেকে বিচ্ছিন্ন থেকেছে। ফলে তাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমেছে। মাস্ক পরা বন্ধ করে দিয়েছেন অনেকেই। শিশুরাও এখন আর স্কুলে মাস্ক পরছে না। তাই আবহাওয়া পরিবর্তনে অল্পেই কাবু হচ্ছে তারা।

Advertisement

অ্যাডিনোভাইরাসের এমন প্রতিপত্তিতে শঙ্কায় সাধারণ মানুষ থেকে চিকিৎসকেরাও। বিশেষ করে শিশু ও বয়স্করা এই ধরনের অসুখের শিকার হচ্ছেন বেশি। চিকিৎসকদের মতে, অ্যান্টিবায়োটিক দিয়ে এই ভাইরাসকে আয়ত্তে আনা যাচ্ছে না অনেক ক্ষেত্রেই। আগে এই ভাইরাস শরীরে বাসা বাঁধলে কেবল শ্বাসকষ্ট বা পেটের সমস্যা ঘটত জ্বরের সঙ্গে। কিন্তু এ বার ভেন্টিলেশন অবধি গড়াচ্ছে সমস্যা। অ্যান্টিবায়োটিকের অপব্যবহার, ভুলভাল প্রয়োগ এই ভাইরাসের চরিত্র বদলের জন্য অনেকাংশেই দায়ী বলে মনে করছেন তাঁরা।

শিশু সর্দি, কাশি, জ্বর ও শ্বাসকষ্টে ভুগলে তাই এতটুকু সময় নষ্ট করবেন না। ছবি: শাটারস্টক।

সাধারণত আক্রান্ত হওয়ার দু’দিন থেকে দু’সপ্তাহের মধ্যেই শরীরে এই ভাইরাসের উপস্থিতি টের পাওয়া যায়। বায়ুবাহিত অ্যাডিনোভাইরাস সাধারণত চোখ, অন্ত্র, মূত্রনালী ও স্নায়ুতন্ত্রের ক্ষতি করে। এই ভাইরাসের আক্রমণ ঘটলে এতটুকু সময় নষ্ট করা উচিত নয়। যত তাড়তাড়ি সম্ভব চিকিৎসা শুরু করার পক্ষপাতী বিশেষজ্ঞরা। তাই এই মরসুমে শিশুদের জ্বর হলে হালকা ভাবে না নেওয়াই ভাল। জেনে নিন আর কোন কোন উপসর্গ দেখলে সতর্ক হবেন।

Advertisement

সাধারণত শিশুরাই এই ভাইরাসের শিকার হচ্ছে বেশি। তবে বড়রাও আক্রান্ত হতেই পারেন। সর্দি, কাশি, জ্বর ও শ্বাসকষ্টে ভুগলে দেরি করবেন না। এমন উপসর্গ দেখলেই চিকিৎসককের পরামর্শ নিন। এই ধরনের ভাইরাস আক্রমণ করলে জ্বরের মাত্রা ক্রমে বাড়তে থাকে। নাক দিয়ে কাঁচা জল পড়ার সমস্যাও দেখা যায়। এই ভাইরাস শরীরে বাসা বাঁধলে কনজাংটিভাইটিসের সমস্যাও দেখা দিচ্ছে। অনেকেরই ডায়েরিয়া, বমি ও শ্বাসকষ্টের প্রাবল্য বাড়ে। সারা দিন ঘুষঘুষে জ্বর থাকতেও দেখা যায়। কিন্তু সে ক্ষেত্রেও জ্বর যখন বাড়ে, তা হু হু করে বাড়ে।

প্রতিরোধের উপায়

সাধারণত ভিড় এলাকা থেকে দূরে থাকুন। শিশুদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম হয়, তাই তাদের ক্ষেত্রে আরও বেশি সচেতনতা অবলম্বন করতে হবে। এটি ছোঁয়াচে রোগ। তাই আক্রান্তদের কাছ থেকেও দূরে থাকুন। সুস্থ না হওয়া অবধি তাঁদের ব্যবহারের জিনিসও আলাদা করে দিন। বায়ুবাহিত হওয়ায় রাস্তাঘাটে বেরোলে মাস্ক ব্যবহার করুন। মল-মূত্র ত্যাগের পর শিশু ভাল করে পরিষ্কার হল কি না সে দিকে খেয়াল রাখুন। নিজেও মেনে চলুন স্বাস্থ্যবিধি। শিশুকে ধরার আগে হাত ধুয়ে নিন। খাবার আগে ও পরে ভাল করে হাত ধোওয়া আবশ্যিক।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement