চিত্রাঙ্কন: শৌভিক দেবনাথ।
দুর্গাপুজোর আগে ভিড় জমতে শুরু করে শহরের ছোট-বড় জিমগুলিতে। কেউ রোগা হওয়ার আশায়, কেউ আবার শুধুমাত্র ফিট হতেই ভর্তি হচ্ছেন জিমে। তবে অফিসের ব্যস্ততার কারণে কিংবা সংসারের হাজার কাজ সামলে অনেকেই জিমে ভর্তি হতে পারেন না। এ দিকে, পুজোর আগে একটু ফিট না হলেই নয়। বাড়িতে আধ ঘণ্টা সময় বার করে যোগাসন অভ্যাস করুন। কেবল রোগা হতেই নয়, শরীরের নানা সমস্যার সমাধান কিন্তু দূর হতে পারে নিয়ম করে যোগাসন করলে। সঠিক নিয়ম মেনে যোগাসন করলে তবেই মিলবে ফল। পুজোর আগে শরীর চাঙ্গা রাখতে কোন কোন আসন অভ্যাস করতে পারেন, খোঁজ নিল আনন্দবাজার অনলাইন। রইল আসন আসান করার পদ্ধতির হদিস। আজকের আসন কটিচক্রাসন।
এই আসনে শিরদাঁড়া টান টান রেখে নিজের কক্ষপথে কোমর ঘোরাতে হয়। টুইস্টিং আসনের মধ্যে কটিচক্রাসন সরলতম। ‘কটি’ শব্দের অর্থ কোমর। ‘চক্র’ শব্দের অর্থ চাকার মত ঘূর্ণন বা গোল হয়ে ঘোরা। সনাতন তিনটি দাঁড়ানো আসনের মধ্যে এটি তৃতীয় (তাড়াসন, তির্যক তাড়াসন ও কটিচক্রাসন)।
কী ভাবে করবেন?
· ম্যাটের ওপর সোজা হয়ে দুই পা ফাঁক করে দাঁড়ান। দুই পায়ের দুরত্ব যেন কাঁধ বরাবর হয়। হাত পাশে ঝুলিয়ে রাখুন। এ বারে চোখ বন্ধ করে শরীর শিথিল করুন। ধীরে ধীরে শ্বাস-প্রশ্বাস নিন। এ বারে চোখ খুলুন।
· দু’হাত কাঁধ বরাবর সোজা করে দু'পাশে ছড়িয়ে দিন, হাতের তালু যেন মেঝের দিকে থাকে।
· তার পর নিশ্বাস ছেড়ে ডান হাত ভাঁজ করে বাঁ কাঁধে রাখুন ও কোমর বাঁ দিকে ঘোরান। এই অবস্থায় বাঁ হাত কোমরের পিছন দিক থেকে ডান দিকে বার করে রাখুন।
· এই ভঙ্গিতে বাঁ কাঁধের দিকে তাকান। খেয়াল রাখবেন, পা যেন মাটি থেকে কোনও ভাবে উঠে না পড়ে। এই অবস্থায় কিছু ক্ষণ থাকুন। ব্যায়ামটি করার সময় শ্বাস-প্রশ্বাস স্বাভাবিক রাখুন।
· এর পর শুরুর অবস্থায় ফিরে আসুন। অর্থাৎ হাত কাঁধের পাশে ছড়িয়ে রাখুন।
· একই ভাবে ডান দিকে ঘুরে ব্যায়ামটি অভ্যাস করুন। অর্থাৎ বাঁ হাত ডান কাঁধে রেখে ডান দিকে কোমর ঘোরান ও ডান কাঁধের দিকে দৃষ্টি রাখুন। এই সময় অনুভব করবেন, একই সঙ্গে আপনার ঘাড়ও ঘুরে যাচ্ছে।
· দু’দিকে ঘোরার পর সোজা হয়ে দাঁড়িয়ে স্বাভাবিক শ্বাস-প্রশ্বাস নিন। এক রাউন্ড সম্পুর্ণ হল। এই ভাবে ৫–৭ রাউন্ড অভ্যেস করতে হবে।
সতর্কতা:
গোড়ালি, নিতম্ব, শ্রোণি, পাঁজরের হাড়, মেরুদণ্ড, কাঁধ, ঘাড়, বাহু এবং কাঁধে কোনও রকম চোট-আঘাত লাগলে কিংবা এই সব অঙ্গের পেশি, লিগামেন্ট বা টিস্যুতে কোনও রকম আঘাত লাগলে বা অস্ত্রোপচার হলে এই ব্যায়ামটি না করাই ভাল।
কেন করবেন আসনটি?
এই আসনটি নিয়ম করে অভ্যাস করলে পিঠের আড়ষ্ট ভাব কমবে একই সঙ্গে যন্ত্রণা থেকেও মুক্তি পাবেন। এ ছাড়া কোমরের ও নিতম্বের মেদ ঝরবে ও পেটের পেশির টোনিং হবে। হাঁপানির সমস্যা থাকলেও এই ব্যায়াম করলে উপকার পাওয়া যায়। কার্ডিয়োভাসকুলার রোগের ঝুঁকি কমাতেও এই ব্যায়াম বেশ উপকারী। কটি চক্রাসন করলে শরীর চাঙ্গা থাকে, শরীরে শক্তি আসে।