Uasage of Magnesium In Depression

নিয়মিত ম্যাগনেশিয়াম সমৃদ্ধ খাবার খেলেই অবসাদ কমবে! সমাজমাধ্যমের দাবি কি যুক্তিপূর্ণ?

প্রতি দিন খাওয়ার সময় ১২৫-৩০০ মিলিগ্রাম ম্যাগনেশিয়াম সমৃদ্ধ খাবার খেলেই কমবে অবসাদ! সমাজমাধ্যমে এমন দাবির যৌক্তিকতা কতটা?

Advertisement

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ১১ মার্চ ২০২৫ ১৭:৩৬
Share:
নিয়মিত ম্যাগনেশিয়াম সমৃদ্ধ খাবার খেলেই কি বশে থাকবে মনের অসুখ?

নিয়মিত ম্যাগনেশিয়াম সমৃদ্ধ খাবার খেলেই কি বশে থাকবে মনের অসুখ? ছবি: ফ্রিপিক।

মনখারাপ হতে পারে ভিটামিনের অভাবে। অবসাদের সমাধান লুকিয়ে বিশেষ খাবারে। সমাজমাধ্যমে অসুখ, সমস্যা নিয়ে এমন হাজারো পোস্ট রয়েছে। দেওয়া হয়েছে তার সমাধানও। যে কোনও বিষয় নিয়েই রয়েছে পরামর্শ। তা নিয়ে নানা জনের নানা মত। কেউ বলছেন এটা ভাল, পর ক্ষণেই আবার অন্য জন বলছেন অন্য কথা। এক্স (সাবেক টুইটার) হ্যান্ডলে এক জন সমাজমাধ্যম প্রভাবী বাতলেছেন অবসাদ কমানোর সহজ উপায়। তিনি বলছেন, প্রত্যেক বার খাওয়ার সময় ১২৫-৩০০ মিলিগ্রাম ম্যাগনেশিয়াম সমৃদ্ধ খাবার পাতে রাখলে ৭ দিনেই কমতে পারে অবসাদ। তার কারণও ব্যাখ্যা করেছেন তিনি। ম্যাগনেশিয়ামের ঘাটতি হলে মস্তিষ্কে, স্নায়ুতে তার প্রভাব পড়তে পারে। তাঁর দাবি, ৫০ শতাংশ অবসাদে ভোগা মানুষের মধ্যে ম্যাগনেশিয়ামের ঘাটতি রয়েছে, এমনটাই উঠে এসেছে সমীক্ষায়।

Advertisement

এই দাবি কতটা সঠিক? মনখারাপ থাকলে বা অবসাদ হলে তবে কি ম্যাগনেশিয়াম যুক্ত খাবার খেতে হবে? গুরুগ্রামের স্নায়ুরোগ চিকিৎসক পূজা আনন্দের কথায়, হরমোন ক্ষরণ, মেজাজ নিয়ন্ত্রণ, পেশির কর্মক্ষমতার সঙ্গে ম্যাগনেশিয়ামের গুরুত্বপূর্ণ যোগ রয়েছে। এই খনিজটির শরীরে বিশেষ ভূমিকা রয়েছে। বিভিন্ন গবেষণায় উঠে আসে, ম্যাগনেশিয়ামের অভাব হলে মনোজগতে তার প্রভাব পড়ে। এ জন্য অবসাদও হতে পারে।

তবে কলকাতার মনোরোগ চিকিৎসক শর্মিলা সরকার বলছেন, ‘‘বিষয়টির এমন সরলীকরণ ঠিক নয়। অবসাদের সঙ্গে অনেক কারণ জড়িত। মানবদেহে বিভিন্ন ভিটামিন এবং খনিজের নির্দিষ্ট ভূমিকা রয়েছে। ম্যাগনেশিয়াম যেমন শরীরের পক্ষে জরুরি, তেমনই আয়রন, আয়োডিন-সহ বিভিন্ন খনিজের সঙ্গে মানসিক স্বাস্থ্য সম্পর্কিত। ফলে প্রতি দিন কেউ ম্যাগনেশিয়াম সমৃদ্ধ খাবার খেলেন আর তাঁর মনখারাপ, অবসাদ কমে গেল, এটা হতে পারে না।’’

Advertisement

অবসাদের সঙ্গে হরমোনের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে বলছেন চিকিৎসকেরা। সেরাটোনিন, ডোপামিন-সহ বেশ কিছু হরমোনের মাত্রা কম থাকলে অবসাদ দেখা দিতে পারে। নিউরোট্রান্সমিটারের কার্যক্ষমতায় হেরফের হলে শরীরেও তার প্রভাব পড়ে। শরীরে ম্যাগনেশিয়ামের মাত্রা কমে গেলে নিউরোট্রান্সমিটারের উৎপাদন বিঘ্নিত হতে পারে। তার ফলে উদ্বেগ, ঘুম না হওয়ার মতো সমস্যা দেখা দিতে পারে। এর প্রভাব মনোজগতে পড়তে পারে।

কিন্তু তা বলে, ম্যাগনেশিয়াম সমস্যার সমাধান করে ফেলতে পারে, মানতে নারাজ দিল্লির চিকিৎসক মনীষা অরোরা। ঘুমের জন্য সেরাটোনিনের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা থাকে। ম্যাগনেশিয়াম প্রয়োজনীয় নিউরোট্রান্সমিটার তৈরিতে সাহায্য করে স্নায়ুকে শান্ত রাখে।

তবে শর্মিলা বলছেন, ‘‘ম্যাগনেশিয়ামের অভাবের পাশাপাশি আয়োডিন, আয়রনের ঘাটতি হলেও এমন সমস্যা বাড়তে পারে। হাইপোথায়রয়েডিজ়ম-ও অবসাদের নেপথ্য কারণ হতে পারে।’’ ফলে শুধুমাত্র ম্যাগনেশিয়াম খেলে সমস্যার সমাধান হতে পারে বা মনখারাপ তাতে ঠিক হবে, এমনটা কখনওই নয়।

চিকিৎসকেরা বলছেন, মনখারাপ দীর্ঘস্থায়ী হলে, উদ্বেগ তৈরি হলে এটা-ওটা না খেয়ে সরাসরি পেশাদার কারও শরণাপন্ন হতে হবে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement