পর্যাপ্ত ঘুম শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যের উন্নতির জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ছবি: শাটারস্টক।
সচেতনতা বাড়লেও তরুণ-তরুণীদের মধ্যে বেড়ে চলেছে বন্ধ্যত্বের সমস্যা। চিকিৎসকরাও নানা ভাবে জীবনযাত্রা বদলের কথাই বলে আসছেন। বিরাট কোনও শারীরিক অক্ষমতা না থাকা সত্ত্বেও বন্ধ্যত্বের সমস্যায় নাজেহাল হতে হচ্ছে কমবেশি অনেককেই। নারী-পুরুষ নির্বিশেষে এই সমস্যার মুখোমুখি হচ্ছেন অনেকেই।
মানুষ ব্যক্তিগত স্তরে কিছুটা সচেতন হয়েছেন বটে তবে প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চলে এখনও এ নিয়ে কিছুটা অজ্ঞানতা রয়েই গিয়েছে। বন্ধ্যত্ব বেড়ে যাওয়ার অনেকগুলি কারণের মধ্যে মূলত জীবনযাপনের কায়দাকানুন অন্যতম। ওষুধ খেয়ে বা আধুনিক চিকিৎসা ব্যবস্থার শরণ নেওয়ার পাশাপাশি জীবনযাত্রার কিছুটা বদল আনলেও সমস্যার সমাধান হতে পারে।
ধূমপান, মদ্যপান, মানসিক ওজন, শারীরিক কসরতের জন্য সময় না বের করা, দীর্ঘ ক্ষণ এক জায়গায় বসে কাজ, বাড়তি ওজন— বন্ধ্যত্ব নানা কারণেই হয়ে থাকে। তবে অনেকেই হয়তো জানেন না, পর্যাপ্ত ঘুম না হওয়াও কিন্তু বন্ধ্যত্বের অন্যতম কারণ হতে পারে।
পর্যাপ্ত ঘুম শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যের উন্নতির জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ঠিকমতো ঘুম না হলে যৌনজীবন, কর্মজীবন এবং পারিবারিক জীবনে— পুরুষ ও মহিলা দু’জনের ক্ষেত্রেই সমস্যা বাড়ায়। দীর্ঘ দিন ধরে অনিদ্রার সমস্যা হলে মানসিক চাপ ও উদ্বেগ দুইই বাড়ে। এই দুই কারণেও কিন্তু যৌন উত্তেজনা কমে যায়, বন্ধ্যত্বের ঝুঁকি বাড়ে।
পর্যাপ্ত ঘুমের চাহিদা পূরণ করতে, চিকিৎসকরা ৬-৭ ঘণ্টা ঘুমনোর পরামর্শ দেন। ছবি: শাটারস্টক।
চিকিৎসকদের মতে, যাঁরা বন্ধ্যত্বের সমস্যায় ভুগছেন, তাঁদের নিজেদের ঘুমের সময়ের উপর নজর রাখা উচিত। বেশ কয়েকটি গবেষণায় দেখা গিয়েছে যে, মহিলাদের ক্ষেত্রে পর্যাপ্ত ঘুম না হলে ডিম্বস্ফোটনের ক্ষেত্রে সমস্যা দেখা যায়, ঋতুচক্র অনিয়মিত হয়ে পড়ে— সবটা মিলিয়ে সন্তানধারণের ক্ষমতা কমে যায়। ঘুম কম হলে পুরুষদের ক্ষেত্রে শুক্রাণুর সংখ্যা কমতে শুরু করে। ঘুম কম হলে শরীরে হরমোনের ভারসাম্য বিঘ্নিত হয়, ফলে যৌন আসক্তিও কমে।
পর্যাপ্ত ঘুমের চাহিদা পূরণ করতে, চিকিৎসকরা ৬-৭ ঘণ্টা ঘুমনোর পরামর্শ দেন। তবে ৯ ঘণ্টার বেশি নয়। অতিরিক্ত ঘুম আবার সন্তানধারণের ক্ষেত্রে সমস্যা তৈরি করতে পারে। সম্প্রতি ন্যাশনাল স্লিপ ফাউন্ডেশনের সমীক্ষা অনুসারে, যে সকল মহিলা আইভিএফ করানোর দিকে ঝুঁকছেন, তাঁদের মধ্যে যাঁরা ৭ থেকে ৮ ঘণ্টার ঘুম পুরো করেন, তাঁদের সন্তানধারণের সম্ভাবনা ২৫ শতাংশ বাড়ে।