ত্বকের রং বদলে যাচ্ছে কেন, কী কী সমস্যার লক্ষণ হতে পারে। ছবি: ফ্রিপিক।
ত্বকের রঙে আচমকা বদল এলেই সে দিকে দৃষ্টি পড়ে। যদি অনেকটা জায়গা জুড়ে ত্বকের রং বদলে যায় অথবা দাগছোপ পড়ে, তখন তা নিয়ে প্রশ্নবাণ ধেয়েই আসে। বিশেষ কোনও ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ায়, ছত্রাক বা ব্যাক্টেরিয়ার সংক্রমণ হলে অথবা রোদে পুড়েও ত্বকের রং বদলে যেতে পারে। কারণ আরও আছে। ত্বকের অ্যালার্জি, শ্বেতির কারণেও বেশ অনেকটা জায়গা জুড়ে ছোপ ছোপ দাগ পড়তে পারে। ত্বকের রঙে বদল বেশ কিছু রোগের পূর্বলক্ষণও হতে পারে। জেনে নিন, সেগুলি কী কী।
মানুষের ত্বকে থাকে মেলানোসাইট কোষ, যেখান থেকে মেলানিন নামে রঞ্জক পদার্থ তৈরি হয়, যা ত্বকের স্বাভাবিক রং তৈরি করে। এই রঞ্জকের কমা বা বাড়ার উপরে ত্বকের রং নির্ভর করে। মেলানোসাইটের সক্রিয়তা বাড়লে মেলানিন নিঃসরণও বাড়ে, ফলে চামড়া কালো হয়ে যায়।
মেলানোসাইট অতিরিক্ত উৎপাদনের ফলে মেলানিনের ঘনত্ব বৃদ্ধি ঘটলে ছোট ছোট বাদামি বিন্দু দেখা যায়। এই দাগ সেখানেই হয়, যে সব জায়গা সূর্যালোকের সংস্পর্শে আসে। এই রোগকে বলে ‘এফিডিলিস’। শিশুদের সারা শরীরে এমন দাগ পড়তে দেখা যায় অনেক সময়ে। তবে বয়সের সঙ্গে সঙ্গে সেরেও যায়। তবে এই রোগ প্রাপ্তবয়স্কদের হলে সারতে সময় লাগে। সে ক্ষেত্রে ত্বক চিকিৎসকের পরামর্শ মতো চিকিৎসা করাতে হয়।
অনেকটা জায়গা জুড়ে হালকা কালো রঙের দাগ হয়। সেই জায়গায় চুলকানি হতে পারে। দাগের চারপাশে র্যাশ দেখা দিতে পারে। একে বলে ‘হাইপার-পিগমেন্টেশন’। চড়া রোদে বেশি ক্ষণ থাকলে সূর্যের অতিবেগনি রশ্মির কারণে চামড়ার অনেকটা জায়গা পুড়ে যেতে পারে। সেই জায়গায় কালচে বাদামি ছোপ পড়ে যাবে। প্রচণ্ড চুলকানি, র্যাশ, ফোলাভাব দেখা দিতে পারে। ফোস্কাও পড়তে পারে। একে বলে ‘ফোটো কন্ট্যাক্ট ডার্মাটাইটিস’। এই রোগ বাড়াবাড়ি পর্যায়ে গেলে ত্বকের ক্যানসারের কারণ হতে পারে।
শ্বেতির কারণেও ত্বকের রং বদলে সাদা হয়ে যেতে শুরু করে। শরীরে রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থার সমস্যার জন্য রক্তে এক ধরনের শ্বেতকণিকা টি-লিম্ফোসাইট বেড়ে যায়। এরাই মেলানোসাইট কোষটি ধ্বংস করে। এর কারণে ত্বকের কিছু অংশে এক ধরনের দুধসাদা উপসর্গহীন দাগ দেখা দিতে পারে। একেই শ্বেতি বলে। শরীরের যে কোনও জায়গাতেই শ্বেতি হতে পারে। অনেকে লজ্জার কারণে চিকিৎসাও করাতে চান না। এতে সমস্যা অনেকটাই বেড়ে যায়।
চোখের চারপাশে, হাতের তালুতে, নাভির নীচের অংশে বিন্দু বিন্দু দাগ দেখা দিতে থাকে। রোগ বাড়লে চুলের রংও পাল্টাতে থাকে। কেবল তা-ই নয়, সেই সঙ্গে শারীরিক সমস্যাও দেখা দেয়। যেমন, ওজন কমে যাওয়া, বমি ভাব, মানসিক অবসাদ, আচমকা রক্তচাপের হেরফের ঘটা ইত্যাদি। এই রোগ বিরল প্রকৃতির, একে বলা হয় ‘ এডিসন্স ডিজ়িজ়’। উপসর্গ দেখা দিলে দ্রুত চিকিৎসকের কাছে যেতে হবে।