বেশি প্রোটিন খেলে কী হয়? ছবি: শাটারস্টক
শরীর সুস্থ রাখতে পুষ্টিবিদরা রোজকার খাদ্যতালিকায় নির্দিষ্ট মাত্রায় কার্বোহাইড্রেট, প্রোটিন, ফ্যাট— সবই রাখতে বলেন। দ্রুত ওজন কমানোর আশায় অনেকেই পুষ্টিবিদদের সঙ্গে পরামর্শ না করেই ইন্টারনেটের ভরসায় ডায়েট করতে শুরু করেন। কার্বোহাইড্রেট কমাতে ডায়েট করতে গিয়ে অনেকেই প্রয়োজনের চেয়ে বেশি প্রোটিন খেয়ে ফেলেন। প্রয়োজনের তুলনায় বেশি মাত্রায় প্রোটিন শরীরে গেলে বিভিন্ন ধরনের পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া হতে পারে। তাই সাবধান! আপনার শরীরে কতটা প্রোটিন দরকার তা নির্ভর করে আপনার বয়স, লিঙ্গ, এবং আপনি আদৌ শরীরচর্চা করেন কি না— তার উপর। চিকিৎসকদের মতে, একজন প্রাপ্তবয়স্কের প্রতি কেজি ওজনে ০.৮ গ্রাম প্রোটিনের দরকার হয়। যাঁরা ভারী শরীরচর্চা করেন, তাঁরা প্রতি কেজি ওজন পিছু ১.৩ গ্রাম থেকে ১.৬ গ্রাম প্রোটিন খেতে পারেন।
শরীরে প্রোটিনের মাত্রা বেশি হয়ে গেলে শরীর নিজেই জানান দেবে সে কথা। কী ভাবে?
১) প্রোটিন বেশি খেলে শরীরে জলের চাহিদা বেড়ে যায়। প্রোটিনের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে পর্যাপ্ত পরিমাণে জল না খেলে সারা দিন তৃষ্ণার্ত বোধ করতে পারেন। মাত্রাতিরিক্ত প্রোটিন খেলে রক্তে নাইট্রোজেনের পরিমাণ বেড়ে যায়। কিডনির উপর চাপ পড়ে। কিডনি প্রস্রাবের মাধ্যমে শরীর থেকে নাইট্রোজেন বার করে দেওয়ার চেষ্টা করে। ফলে শরীরে জলের ঘাটতি হয়।
২) শরীরে জলের অভাবে দুর্বলতা এবং মাথাব্যথা হতে পারে। মাথা ঘোরাও অতিরিক্ত প্রোটিন খাওয়ার লক্ষণ। উচ্চমাত্রার প্রোটিন ডায়েট সাময়িক ভাবে আপনার ওজন কমাতে সাহায্য করলেও, পরে বাড়িয়ে দেবে আপনার ওজন, যা আর কমতে চাইবে না!
৩) কার্বোহাইড্রেট কমিয়ে আপনি যদি অধিক মাত্রায় প্রোটিন খেতে শুরু করেন তা হলে শরীর কিটোসিস পর্যায়ে চলে যায়। এর ফলে আপনার মুখে দুর্গন্ধ হতে পারে, এই দুর্গন্ধ শরীরের ভিতর থেকে আসে তাই দাঁত মেজে বা মাউথ ফ্রেশনার ব্যবহার করেও লাভের লাভ হয় না। ফলে সকলের মাঝে বিড়ম্বনায় পড়তে হতে পারে!
৪) অতিরিক্ত প্রোটিন এবং কম কার্বোহাইড্রেটযুক্ত খাবার খেলে শরীরে ফাইবারের পরিমাণ কমে যায়। শরীরে ফাইবার কমে গেলে হজমের সমস্যা, কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা বেড়ে যায়। ডায়েটে প্রোটিন হিসেবে দুগ্ধজাতীয় খাবার অতিরিক্ত খেলে ডায়ারিয়াও হতে পারে।
৫) কম কার্বোহাইড্ৰেট এবং উচ্চমাত্রায় প্রোটিন ডায়েট খুব বেশি দিন খেলে কিডনির ক্ষতি হয়। হার্টের সমস্যাও বাড়াতে পারে প্রোটিন। বিশেষ করে রেড মিট, দুগ্ধজাতীয় খাবারে অতিরিক্ত সমস্যা হয়।
৬) হাই প্রোটিন ডায়েট ক্যানসারের ঝুঁকি বাড়ায়। প্রসেসড মাংস অতিরিক্ত খেলে স্তন ক্যানসার, মূত্রথলিতে ক্যানসার হতে পারে।