চিপ্স, ফ্রেঞ্চ ফ্রাই, বার্গার, রোল— এই সব পেলে শিশুদের আর কী বা চাই। ছবি: শাটারস্টক।
ইঁদুরদৌড়ের যুগে জীবনে ব্যস্ততার ছায়া পড়েছে বাড়ির খুদে সদস্যটির উপরেও। কেবল পড়াশোনা নয়, তার পাশাপাশি নানা গুণে পারদর্শী হয়ে উঠতে গিয়ে তাদের হাতেও সময় বড় কম। রাত জেগে পড়া, পরের দিন পরীক্ষার জন্য তাড়াতাড়ি উঠে পড়া, শিশুর ঘুম কমিয়ে দিতে হচ্ছে সিলেবাসের চাপে। কখনও আবার মা-বাবার প্রত্যাশার বহর চেপে বসছে শিশুর কাঁধে। সেই মারণচাপ স্ট্রেস হয়ে কামড় দিচ্ছে শৈশবে। আর এই সবগুলিই ডেকে আনছে খাওয়ার অনিয়ম, কম ঘুমের মতো অভ্যাস। যার জেরে স্থূলতার সমস্যা তাড়া করে বেড়াচ্ছে অকালেই। খুদের স্থূলতার সমস্যা দূর করতে কিছু খাবার ওদের ডায়েট থেকে একেবারে বাদ দেওয়ার পরামর্শ দিচ্ছেন চিকিৎসকেরা। জেনে নিন টিফিনে হোক কিংবা বাড়িতে, কোন কোন খাবার শিশুদের দেওয়া বন্ধ করতে হবে।
ইনস্ট্যান্ট নুডলস: এমন খাবার, বানাতে কম সময় লাগে, অথচ খেতেও সুস্বাদু। ফলে অনেকেই শিশুর বায়না মেটাতে এই ধরনের খাবার দেন। টিফিনে বাচ্চাদের এই ধরনের চটজলদি খাবার না দেওয়াই ভাল। নুডলসের প্রধান উপকরণ হল ময়দা, যা শরীরের পক্ষে একেবারেই ভাল না। স্থূলত্বের ঝুঁকি এড়়াতে ময়দা এড়িয়ে চলা ভাল। এ ছাড়া, প্যাকেট নুডলসে আজিনামোটোর মতো উপাদানও থাকে, যা শরীরে পক্ষে একেবারেই ভাল নয়।
ভাজাভুজি খাবার: চিপ্স, ফ্রেঞ্চ ফ্রাই, বার্গার, রোল— এই সব পেলে শিশুদের আর কী বা চাই। তবে এই খাবার থেকে শিশুকে যতটা দূরে রাখা যায়, ততই ভাল। বাইরের খাবার কিংবা প্যাকেটজাত খাবার দীর্ঘ দিন ভাল রাখার জন্য তাতে বিভিন্ন রাসায়নিক মেশানো থাকে। তাই শিশুর পক্ষে এই খাবার মোটেই ভাল নয়।
প্রক্রিয়াজাত খাবার: সসেজ, নাগেট্স অনেকের ফ্রিজেই মজুত থাকে। বাচ্চাকে কী টিফিন দেবেন, তা বুঝতে না পেরে এগুলি ভেজে দিয়ে দেন অনেকেই। শিশুর পেট ভরাতে গিয়ে কিন্তু ক্ষতি করছেন বেশি। প্রক্রিয়াজাত কোনও খাবারই শিশুর জন্য ভাল নয়। তার চেয়ে চিকেন, ডিম, নানা রকম সব্জি, ফলের মতো খাবার বেশি করে দিন। শরীর ভাল থাকবে।
রোজ রোজ বার্গার খেতে দেবেন না শিশুকে। ছবি: শাটারস্টক।
মিষ্টি সিরিয়াল্স: কর্নফ্লেক্সের মতো সিরিয়াল সুস্বাদু করে তুলতে এতে মেশানো হয় ‘হাই ফ্রুক্টোজ কর্ন সিরাপ’৷ কর্নফ্লেক্সের গ্লাইসেমিক ইনডেক্স উচ্চ পর্যায়ে থাকে৷ তা ছাড়া, এই খাবার শুধু খাওয়া যায় না। এতে মেশাতে হয় নিদেনপক্ষে দুধ। অনেকে শুকনো ফল বা মরসুমি নানা ফলও এর সঙ্গে মেশান। এতে গ্লাইসেমিক ইনডেক্স আরও বাড়ে, যা শক্তি বাড়ালেও শরীরের জন্য বিশেষ সুখকর নয়। প্যাকেটজাত কর্নফ্লেক্সে অতিরিক্ত চিনি থাকে, যা কেবল ক্ষতিকারকই নয়, মেদবৃদ্ধিতেও বিশেষ কার্যকর। তাই খুদের জলখাবারে চিনি মেশানো সিরিয়াল দেওয়া বন্ধ করুন।
নরম পানীয়: ফ্রিজ খুললেই সারি সারি সাজানো নরম পানীয়ের বোতল। সময় পেলেই খুদে চুমুক দিচ্ছে সে সব পানীয়ে। তবে এই অভ্যাস একেবারেই ঠিক নয়। শিশুর স্থূলত্ব বৃদ্ধির জন্য এই অভ্যাস দায়ী। এই সব পানীয় কিন্তু চিনিতে ভরপুর, তাই সবার আগে প্যাকেটজাত ফলের রস, নরম পানীয়, সোডাযুক্ত পানীয় শিশুদের দেওয়া বন্ধ করুন।