ঘন ঘন গ্যাস-অম্বলের ওষুধ খাওয়ার অভ্যাস নানা ক্রনিক অসুখকে ডেকে আনে। ছবি: সংগৃহীত
বাঙালি যেমন ভোজন রসিক, তেমনই পেটরোগাও বটে! অনুষ্ঠান বাড়িতে একটু বেশি খেয়ে ফেললে কিংবা তেল-মশলার পরিমাণ সামান্য বেশি হয়ে গেলেই পেটের গোলমাল শুরু হয়ে যায়। আর কথায় কথায় মুঠো মুঠো ওষুধ খাওয়ার বদভ্যাস তো আছেই। চিকিৎসকদের মতে, গ্যাস-অম্বলের সমস্যা আজকাল ঘরে ঘরে। গরমে এই সমস্যা আরও বেড়ে যায়। কিন্তু খুব বেশি ওষুধ নির্ভর হয়ে পড়া কিন্তু মোটেই ভাল নয়।
ঘন ঘন গ্যাস-অম্বলের ওষুধ খাওয়ার অভ্যাস নানা ক্রনিক অসুখকে ডেকে আনে। তাই স্বাভাবিক উপায়ে হজম ক্ষমতা বাড়ানো ও হজম উপযোগী খাবার খাওয়াই প্রয়োজন। স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভাস ও কয়েকটি কৌশল মেনে চললেই হজমের সমস্যা কাটিয়ে উঠতে পারবেন সহজেই।
গ্যাস অম্বলের সমস্যা দূর হবে কোন উপায়ে?
১) খাবার চিবিয়ে খান: কর্মব্যস্ত জীবনে আমরা যেন বসে আয়েস করে খেতেই ভুলে গিয়েছি। সকালে অফিসে বেরোনোর তাড়া, দুপুরে কাজের চাপ আর রাতে কত ক্ষণে খাওয়া শেষ করে ওয়েব সিরিজের শেষ ভাগটা দেখবেন— সেই চক্করে তাড়াহুড়ো করে খাওয়ার অভ্যাস কমবেশি সকলেরই আছে। এই অভ্যাসের কারণেই কিন্তু শুরু হয় পেটের নানা সমস্যা। খাবার চিবিয়ে না খেলে হজম করতে অসুবিধা হয়। খাবার ভাল করে চিবোলে তাতে নানা উৎসেচক যোগ হয়ে তাকে সহজপাচ্য করে তোলে। তাই ভাল করে চিবিয়ে খাওয়ার অভ্যাস করুন। পেটের স্বাস্থ্য ভাল থাকবে।
২) খাওয়ার সময়ে খাবারের দিকেই মনোযোগ দিন: অনেকেই টিভি দেখতে দেখতে কিংবা মোবাইলে ফোনে কথা বলতে বলতে খাবার খান। এতে খাওয়ার প্রতি কোনও মনোযোগ থাকে না। এ কারণেও হজমের সমস্যা দেখা যায়। খাওয়ার সময়ে খাবারের দিকেই নজর দিন, খাবার উপভোগ করে খান।
প্রতীকী ছবি
৩) খাওয়ার সময়ে অত্যধিক জল না খাওয়াই ভাল: অনেকেই খাওয়ার সময়ে প্রচুর জল খেয়ে ফেলেন। এ কারণেও কিন্তু গ্যাসের সমস্যা বাড়তে পারে। খাওয়ার সময়ে বেশি জল খেয়ে নিলে হজমে সাহায্যকারী উৎসেচকগুলির কার্যকারীতা হ্রাস পায়। তাই খাবার ঠিক মতো হজম হয় না। গ্যাস অম্বলের সমস্যা বাড়ে। তাই খাওয়ার সময়ে অল্প জল খাওয়াই শ্রেয়।
৪) শরীরে জলের ঘাটতি না হয় সে দিকে নজর রাখুন: গরমের দিনে অনেকেই ডিহাইড্রেশনের সমস্যায় ভোগেন। আর শরীরে জলের ঘাটতি হলেই হজমে অসুবিধা হয়। তাই সারাদিন দু-তিন লিটার জল অবশ্যই খেতে হবে। খাদ্যতালিকায় ডিটক্স ওয়াটারও রাখতে পারেন।
৫) প্রক্রিয়াজাত খাবার এড়িয়ে চলুন: একই সঙ্গে খাওয়া উচিত নয়, এমন বেশ কিছু খাবার আছে। যেমন মাংস খেয়েই দুধ বা দুগ্ধজাত কোনও খাবার, ভাতের পরেই ফল, ভাজাভুজি খেয়েই জল— ভুলেও খাবেন না। এ সব পর পর না খেয়ে একটু সময় রাখুন মাঝে। প্রক্রিয়াজাত খাবার যতটা পারবেন এড়িয়ে চলুন। প্রক্রিয়াজাত খাবারে অনেক রাসায়নিক ব্যবহার করা হয়ে থাকে। এ সব প্রক্রিয়াজাত খাবারের কারণে হজমের সমস্যার পাশাপাশি পরিপাকতন্ত্র তার কর্মক্ষমতা হারায়।